করোনায় দিশেহারা রাজশাহীর পানচাষিরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ২৬ জুন ২০২০ শুক্রবার
ছবি: সংগৃহীত
করোনা ভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাজারে পানের দামে ধস নেমেছে। পূর্ণ উৎপাদন মৌসুমে হাটবাজারে বর্তমানে মানুষের অবাধ চলাচল বন্ধ থাকার জন্য ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে রাজশাহীর পানের হাটবাজারগুলো। ব্যাপক আমদানি হলেও নেই বিক্রি। এজন্য হাটবাজারে ফেলে দিতে দেখা যাচ্ছে পানের গাদি। চরম হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় পানচাষিরা।
সরেজমিনে মোহনপুরে দেখা যায়, উপজেলার সর্বত্রই পানের চাষ হয়। আয়তনে কিছুটা ছোট হলেও আবাদি ভূমির এক তৃতীয়াংশ জমিতে পানের চাষ হয়ে থাকে। গুণগত মানে এখানকার পান বেশ ভাল। এজন্য দেশের প্রায় ৫০টি জেলায় সরবরাহ হয় মোহনপুরের মিষ্টি পান। পানচাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবার।
এখানকার অনেক কৃষক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে পানচাষের ওপর নির্ভর করে। দীর্ঘদিন যাবত চাষিরা পানের দাম ভাল পেলেও বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে পানের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কয়েক মাস আগে প্রতি ৩২ বিড়া পানের দাম ছিল ৩ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতি ৩২ বিড়ার পানের দাম ১ হাজার টাকা থেকে শুধু ৫০ টাকা। এজন্য পান উৎপাদন ব্যয় দূরের কথা, পান হাটে পরিবহনের খরচ জুটছে না বলে চরম হতাশায় পান চাষিরা।
উপজেলার আমরাইল গ্রামের পানচাষী মিলন বলছিলেন, আমার নিজস্ব চাষের জমি নাই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে পানচাষ করে সংসার চালাই। অনেকদিন ধরে পানের দাম ভাল পেয়ে ভালভাবে সংসার চালাতে পেরেছি। করোনা ভাইসের ফলে হাটবারে পান বিক্রি করতে পারছি না। আবার পান বিক্রি করতে পারলেও পাইকার না থাকার কারণে দাম খুবই কম। বরজ থেকে পান উঠিয়ে বিক্রি করে হাটে যাওয়া-আসার ভাড়া জুটছে না। এজন্য সংসার চালাতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি।
হরিদাগাছি গ্রামের আবদুল গাফ্ফার দেওয়ান বলেন, পানের একবোরেই দাম নেই। দুইদিন ধরে পান ভেঙে গুছিয়ে হাটে বিক্রি করে একশো টাকাও জুটছে না। করোনা ভাইরাসের জন্য হাটবাজারে পাইকার আসছে না বলে পানের দাম কম। দ্রুত করোনার প্রভাব না কাটলে আমাদের চলার উপায় থাকবে না। পানের বরজে ব্যবহৃত পণ্যসহ শ্রমিকের দাম দ্বিগুন বাড়লে বহলাংশে কমেছে পানের দাম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রহিমা খাতুন বলেন, মোহনপুরে ব্যাপক পানের চাষ হয়ে থাকে। অধিকাংশ কৃষক পরিবারেই পানবরজ রয়েছে। এখন উৎপাদন মৌসুম। এমনিতেই দাম কম হবে এটাই স্বাভাবিক। এরপরও করোনা পরিস্থিতির কারণে পানের কেনাবেচা কিছুটা কমেছে বলে বাজারমূল্য কমেছে।
-জেডসি