লঞ্চডুবিতে বুড়িগঙ্গার পাড়ে শোকের ছায়া, নিহত বেড়ে ৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বুড়িগঙ্গায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনায় শ্যামবাজার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একটার পর একটা লাশ তুলেই চলেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ড। এখন পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করেছে তারা। নিখোঁজ অন্যদের উদ্ধারে এখনও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ সোমবার (২৯ জুন) দুপুর একটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন মৃত্যের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে সদরঘাটের শ্যামবাজার পয়েন্টে ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় মর্নিং বার্ড লঞ্চ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্ট গার্ড। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন স্থানীয়রাও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ, ৫ জন নারী ও ২ জন শিশু।
এদিকে লঞ্চডুবির খবর পেয়ে শ্যামবাজার এলাকায় ছুটে আসছেন স্বজনরা। তাদের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রীদের এক স্বজন গণমাধ্যমকে বলেন, লঞ্চডডুবির ঘটনায় আমার চাচি, চাচাতো ভাই ও বড় ভাই নিখোঁজ রয়েছেন। খবর পেয়ে আমি মুন্সীগঞ্জ থেকে ছুটে এসেছি। তবে এখনও তাদের সন্ধান পাইনি। ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে সকালে মুন্সীগঞ্জ থেকে তার আত্মীয়রা মর্নিং বার্ড লঞ্চে উঠেছিলেন।
আরেক স্বজন বলেন, আমার মামাতো বোন ও তার দুই সন্তান নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে আমি এসেছি। তিনি বলেন, আমার মামাতো বোন পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। গ্রামের বাড়ি থেকে সন্তানদের নিয়ে তারা আজ ঢাকায় ফিরছিলেন।
সূত্রে জানা গেছে, সকাল পৌনে ৮টার দিকে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথে শ্যামবাজার পয়েন্টে ময়ূর-২ নামের লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ডুবে যায় সেটি।
কেরানীগঞ্জের একটি ডকইয়ার্ড থেকে মেরামত শেষে ময়ূর-২ নদীতে নামানোর সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। তবে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি থেকে কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠলেও অন্যরা তলিয়ে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর) একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটে বার্দিং করার আগ মুহূর্তে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলক ছোট মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১০০ জন যাত্রী ছিলেন ওই লঞ্চে। এরমধ্যে নিখোঁজ হয়ে যান প্রায় ৭০ জন। তা থেকে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এরই মধ্যে। চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চটির নামে মামলা করা হবে।