ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ১৯:৩০:২৪ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ঢাকাকে তারমুক্ত করার অভিযানে বিপাকে ইন্টারনেট গ্রাহকরা

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৭:০৬ পিএম, ১০ আগস্ট ২০২০ সোমবার

ঢাকাকে তারমুক্ত করার অভিযানে বিপাকে ইন্টারনেট গ্রাহকরা

ঢাকাকে তারমুক্ত করার অভিযানে বিপাকে ইন্টারনেট গ্রাহকরা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত গত কয়েকদিন ধরে বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের স্যাটেলাইট সংযোগের তার অপসারণ করছে।

এর ফলে ওইসব এলাকার অন্তত ৫০ হাজার গ্রাহকের ইন্টারনেট এবং স্যাটেলাইট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত প্রায় চার কোটি টাকার তার কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সেবাদাতারা।

করোনাভাইরাসের এই সময়ে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন যারা অনলাইনে কাজ করছেন।

গুলিস্তানের বাসিন্দা শাহিন আহমেদ লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে বাসা থেকেই অফিসের কাজ করে আসছেন। অফিসের বিভিন্ন কাজের জন্য তার নিরবিচ্ছিন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হলেও দুইদিন ধরে সংযোগ না থাকায় তার সব কাজ চালাতে হচ্ছে মোবাইল ডাটার মাধ্যমে। যা বেশ ব্যয়বহুল।

আবার তার দুটি সন্তানের অনলাইন স্কুলও বন্ধ হয়ে আছে। শুধুমাত্র ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে।

ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তার পাশে বিদ্যুতের খুঁটির ওপরে কেবল টিভি, ইন্টারনেট সার্ভিস, টেলিফোনের তারের জঞ্জাল দেখা গেছে।

উচ্চমাত্রার বিদ্যুৎ পরিবাহী এই তারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সেবা সংস্থার বিপুল পরিমাণ তার ঝুলে থাকায় এসব তার হেলে পড়ে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সিটি কর্পোরেশন।

তাই ঝুঁকি এড়াতে এবং সেই সঙ্গে নগরীর সৌন্দর্য বাড়ানোর লক্ষ্যে গত বুধবার থেকে আজ পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুটি ইউনিট তাদের আওতাভুক্ত কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ঝুলে থাকা কেবল টিভি এবং ইন্টারনেটের তার অপসারণের কাজ শুরু করে।

এ পর্যন্ত তারা ধানমন্ডি, জিগাতলা, বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া এবং হাজারীবাগ এলাকায় এসব অবৈধ তারের উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

হাজারীবাগে অভিযান চলাকালে সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুনিরুজ্জামান বলেন, আইন অনুযায়ী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়রের নির্দেশে অবৈধ কেবল সংযোগের সরানোর কাজ চলছে। এসব তার শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে, মানুষের চলাফেরাতেও সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই এসব সংযোগে একটি শৃঙ্খলা আসুক। এজন্য সামনের দিনগুলোতেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর ২৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোন সার্ভিস প্রোভাইডারদের যদি সংযোগ স্থানান্তরের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত স্থাপনা ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের থেকে লিখিত অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কেবল সংযোগের কাজে তারা কারও স্থাপনা ব্যবহার করতে পারবে না।

আইনের উপ-ধারা ২৮ (২) অনুসারে, যদি কোনও ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘন করে তাহলে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এছাড়া অপরাধ পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে।

কিন্তু কোন অবকাঠামো তৈরি না করে বা বিকল্প ব্যবস্থা না করেই দেদারছে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নিন্দা জানিয়েছেন এই খাত সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র : বিবিসি বাংলা