ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ১৫:০৩:১৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

কাঁচা মরিচের ঝাজ বেশি, সবজিও বেশ চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:১৭ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার

কাঁচা মরিচের ঝাজ বেশি, সবজিও চড়া

কাঁচা মরিচের ঝাজ বেশি, সবজিও চড়া

বাজারে কাঁচা মরিচের ঝাজ বেড়েই চলেছে। ক্রমাগত বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের কেজিপ্রতি মূল্য এখন ২৫০-২৬০ টাকা। বিক্রেতারা বন্যা ও আমদানির দোহাই দিলেও দিশেহারা ক্রেতা। এদিকে সবজির সরবরাহ থাকলেও দাম বেশ চড়া।

ব্যবসায়িরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যে পরিমাণ কাঁচা মরিচ এসেছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। সরবরাহে ঘাটতির কারণে কাঁচা মরিচের দামের এ পরিস্থিতি।

এদিকে সরবরাহ সংকটের কথা বলা হলেও রাজধানীর বাজারগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ কাঁচা মরিচ দেখা গেছে। তবে দাম বেশি থাকায় মরিচের বেচাকেনা কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একশ’ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। অর্থাৎ এই হিসাবে এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম দাঁড়ায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যেখানে গত সপ্তাহেও একশ’ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়।

রাজধানীর মতিঝিলে কাঁচা বাজার করতে আসা গৃহিনী মারজিয়া মিম বলেন, বাজারে কোনো কিছুরই দাম কম নেই। এখন কাঁচা মরিচের দিকে তো তাকানোই যায় না। কিন্তু বাসায় নানা রকমের রান্নায় কাঁচা মরিচ লাগেই।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আয় তো বাড়েনি। জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও কিছু করার নাই।

ওই বাজারের কাঁচা সবজি বিক্রেতা হারুণ জানান, পাইকারি বাজারে বাড়লে তার প্রভাব খুচরা বাজারেও পরে। বর্তমানে দ্বিগুণের বেশি দাম দিয়ে পাইকারি বাজার থেকে মরিচ কিনে আনতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে যে সবজি বাজারে ছিল সহজলভ্য, এখন তার সরবরাহ অনেকটাই কমে গেছে।

বাজারের অপর বিক্রেতা হাবিব বলেন, কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে। এখন ২৫০ গ্রাম মরিচ ৬০ টাকার (কেজি ২৪০ টাকা) নিচে বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। পাইকারি বাজার থেকে এক পাল্লা (৫ কেজি) মরিচ ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনেছি। এরপর যাতায়াত ভাড়া আছে। কেনা দামই পড়েছে কেজি ২২০ টাকা। অন্যান্য খরচ যোগ করলে এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর পাইকারি আড়তে ৫ কেজি কাঁচা মরিচ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে গতকাল থেকে কিছুটা কমে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এক ব্যবসায়ী।

আড়তদার করিম আলী বলেন, বন্যার পরে ভারত থেকে আমদানি করা মরিচ বেশি বিক্রি হয়েছে। পূজার ছুটিতে গত এক সপ্তাহ ধরে মরিচ আসেনি। এখনও বাজারে তেমন মরিচ নেই।

অন্যদিকে দেশে বন্যার কারণে মরিচ উৎপাদন আগেই কমেছে। ফলে বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। তবে আমদানি করা মরিচের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম আবারও কমবে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি সবজির দাম চড়া। কেজিতে ৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। শুধুমাত্র কচু ৫০ টাকার নিচে কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে সবজি সংকটের কারণে বাজারভেদে দামের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। কারওয়ানবাজারে প্রতিকেজি বেগুন পাইকারিতে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও পলাশীতে খুচরায় তা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ধনিয়া পাতার দাম। কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে। প্রতিকেজি শসা (দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৭০-৮০ টাকা, করলা ৭৫ টাকা, উস্তা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঝিঙা-ধুন্দল ৫০-৫৫ টাকা, চিচিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে কচুর ছড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দলে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া কলা, কাঁচামরিচের দাম অপরিবর্তিত আছে। অন্যদিকে আমদানিকৃত কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা, দেশি কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ধনিয়া পাতা কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ধনিয়া পাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা।

সবজির সঙ্গে বাড়তি দাম রয়েছে শাকের বাজারেও। শাকভেদে প্রতিমোড়ায় দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল, তেল ও মসলার বাজার। এসব বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) লাল শাকের দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ টাকা, মূলা ও কলমি শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৪০-৫০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।