বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে ৭ নদীর পানি
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:১১ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২০ রবিবার
ছবি: সংগৃহীত
দেশের বেশকিছু অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দেশের সাতটি নদীর পানি ১১ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গতকাল শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, গাইবান্ধা পয়েন্টে ঘাঘট নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, চক রহিমপুর পয়েন্টে করতোয়ার পানি ১১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনার পানি ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, কাজীপুর পয়েন্টে যমুনার পানি ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, সিংড়া পয়েন্টে গুড় নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, বাঘাবাড়ী পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, এলাসিন পয়েন্টে ধলেশ্বরী নদীর পানি ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, আত্রাই পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদনদীর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমছে এবং যমুনার পানি স্থিতিশীল আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা উভয় নদীর পানি কমতে পারে।
এদিকে চতুর্থ দফায় ফরিদপুর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি এ সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলছে; পদ্মার নদীর পানি গোয়ালন্দে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপরে উঠেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, গত ১২ ঘণ্টায় পদ্মার নদীর গোয়ালন্দ পয়েটে পাঁচ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে প্রতিদিন আবারও পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁর পানি বাড়লেও এ বৃদ্ধির হার কম।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউপির চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় দফা বন্যায় ভুট্টা, বাদাম, পাটের ক্ষতি হয়েছে। এখন আবার পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়া কলাই, পেঁয়াজ বীজতলা তলিয়ে গেছে। কয়েকদিনে চরের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে যমুনাসহ সিরাজগঞ্জের শাখা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যাচ্ছে রোপা আমন ধান। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন করে যমুনায় পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার কাজীপুর, সদর, তাড়াশ, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি ও উল্লাপাড়ার রোপা আমন ধানসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন কৃষকরা। চরাঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
যমুনার পানি দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার আউশ ও রোপা আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসেবে বন্যাকবলিত সাতটি উপজেলার এক হাজার ২৪৫ জন কৃষককে বীজ দেওয়া হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ বলেন, হঠাৎ আবারও যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকের বীজতলা তলিয়ে গেছে।
-জেডসি