ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ২:৫৯:৪৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

সিনোভ্যাকের করোনা টিকা নিরাপদ প্রমাণিত

ডেস্ক রিপোর্ট

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:১০ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

ব্রাজিলে প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা করোনাভ্যাক ব্যাপক মাত্রায় নিরাপদ। তবে পুরো পরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই টিকা কতটা কার্যকর সে বিষয়ে ডাটা প্রকাশ করবে না তারা। সাও পাওলোর গভর্নর জোঁয়াও ডোরিয়া জানিয়েছেন, ব্রাজিলে যেসব টিকার পরীক্ষা চলছে এখন পর্যন্ত, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় তার মধ্যে প্রাথমিক ফলে করোনাভ্যাকই সবচেয়ে নিরাপদ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, করোনাভ্যাক টিকা তৈরি করেছে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক। করোনা ভাইরাস ভয়াবহভাবে আক্রমণ করেছে ব্রাজিলে। তাই সেখানে করোনাভ্যাক সহ আরো কিছু টিকার শেষ পর্যায়ের ব্যাপক পরীক্ষা চলছে। করোনাভ্যাক পরীক্ষার প্রাথমিক ফল প্রকাশ করা হয়েছে সোমবার।

উল্লেখ্য, ব্রাজিলের শীর্ষ স্থানীয় বায়োমেডিকেল গবেষণা কেন্দ্রের অন্যতম সাও পাওলোর বিউট্যানট্যান ইনস্টিটিউট। তারা সিনোভ্যাকের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা করছে। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, তাদের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত ৯০০০ স্বেচ্ছাসেবকের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে এই টিকার দুই ডোজ। তাতে এই টিকাকে নিরাপদ বলে তথ্য মিলেছে। তবে এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক দিমাস কোভাস বলেছেন, মোট ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সবার ওপর পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই টিকা কতটা কার্যকর সে বিষয়ে কোনো ডাটা প্রকাশ করা হবে না। সাও পাওলোর গভর্নর জোয়াও ডোরিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত যেসব টিকার পরীক্ষা করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তার ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে- করোনাভ্যাকই সবচেয়ে নিরাপদ। এটি সর্বোত্তম ফল দেখিয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতিশীল।

দিমাস কোভাস বলেছেন, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে যে ফল এসেছে তা প্রাথমিক পর্যায়ের। চলমান পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সবার অবস্থার ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। বিশ্বজুড়ে করোনাভ্যাকের তৃতীয় পর্যায়ের যে পরীক্ষা চলছে, তার মধ্যে ব্রাজিলের গবেষণার এই ফল হলো প্রথম। এই পরীক্ষা ব্রাজিল ছাড়াও করা হচ্ছে তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়ায়। তিনি আরো বলেছেন, যেসব স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষতিকর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। শতকরা ২০ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী বলেছেন, ইনজেকশন দেয়ার ফলে তারা হালকা ব্যথা পেয়েছেন। প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার পর শতকরা ১৫ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী মাথাব্যথার কথা বলেছেন। তবে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পর এই হার নেমে শতকরা ১০ ভাগে দাঁড়ায়। শতকরা ৫ ভাগেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী নাক দিয়ে পানি পড়া, ক্লান্তির কথা বলেছেন। আরো কম সংখ্যক মানুষ বলেছেন মাংসপেশীতে ব্যথার কথা।

সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিষয়ক সচিব জ্যাঁ গোরিনচতেইন বলেছেন, এই টিকা দৃশ্যত প্রতিরক্ষামুলক এন্টিবডি তৈরি করে বলেই মনে হচ্ছে। তাই এ বছরের শেষ নাগাদ কারোনাভ্যাক অনুমোদন দেয়ার আশা করছেন তারা। আর ২০২১ সালের শুরুতে তিনি এই টিকা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করা শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
আগ্রামী ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ ৬ কোটি ডোজ সিনোভ্যাক কিনতে সিনোভ্যাক বায়োটেকের সঙ্গে এরই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সাও পাওলো। রয়টার্স লিখেছে, সিনোভ্যাক চেয়েছে ব্রাজিলকে একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে। কারণ, করোনা ভাইরাস বিশ্বের যেসব স্থানে ছড়িয়েছে তার মধ্যে ব্রাজিল একটি হটস্পট। জুলাইয়ের শেষের দিকে সেখানে প্রতিদিন করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে ব্রাজিলে ৫২ লাখের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে ব্রাজিল বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত দেশ। এর আগে রয়েছে ভারত। শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওদিকে এস্ট্রাজেনেকা পিএলসি এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি বৃটেনে তাদের করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা শেষ করে এনেছে। ফাইজার বলেছে, তারা এ মাসে তাদের পরীক্ষার একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করতে পারে। অন্যদিকে মডার্না তাদের টিকা নিয়ে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করতে পারে নভেম্বরে। আর রাশিয়ার গামালেয়া ইনস্টিটিউট তাদের টিকার পরীক্ষালব্ধ ফল প্রকাশ করতে পারে সামনের মাসে। ওদিকে টিকা উৎপাদনের প্রতিযোগিতায় থাকা এস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন এন্ড জনসন নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থগিত করেছে তাদের পরীক্ষা।

-জেডসি