ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১১:০১:১১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:১৯ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে মুক্ত করার জন্য ১৯৭৪ সালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন তা পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি কার্যকরের ঐতিহাসিক মুহূর্তে জাতিসঙ্ঘের বেশকিছু সদস্য রাষ্ট্র আয়োজিত উদযাপন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ ও অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) কার্যকর হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার নিউইয়র্ক, জেনেভা এবং ভিয়েনায় একযোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল ইভেন্টে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দেয় বাংলাদেশ।

জাতিসঙ্ঘে আয়োজিত স্মরণীয় এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বান উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি অবিচল থাকা বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি। যার ফলে এই চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ের অন্যতম একজন প্রবক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত আহ্বানকে ধারণ করে বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে জাতিসঙ্ঘের ৭৪তম অধিবেশন চলাকালীন ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চুক্তিটি অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ।

পারমাণবিক অস্ত্রের অমানবিক ও বিধ্বংসী পরিণতির কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা যে সব রাষ্ট্র এখনো এই চুক্তি স্বাক্ষর করেনি তাদের স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান যাতে এর সার্বজনীন প্রয়োগের বাস্তবায়ন অর্জন করা সম্ভব হয়।

পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, পারমাণবিক প্রযুক্তির গবেষণায় আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি শান্তিপূর্ণ ও পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের জন্য পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে অব্যাহতভাবে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ সর্বদাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

পারমাণবিক অস্ত্রের মানবিক প্রভাব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অবদান সৃষ্টিকারী জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমার আঘাত নিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা (হিবাকুশাস) সহ যে সব কর্মী সুদীর্ঘ এই সময় ধরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

তিনি পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার শিকার এবং এর ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকা সব মানুষের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কিত চুক্তি টিপিএনডব্লিউ স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার, বিকাশ, পরীক্ষা, উৎপাদন, মজুদকরণ, কেন্দ্র স্থাপন, স্থানান্তর এবং হুমকি প্রদান নিষিদ্ধ করতে এটিই হচ্ছে প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি। চুক্তিটি এ পর্যন্ত ৮৬টি দেশ স্বাক্ষর করেছে এবং ৫১টি দেশ অনুসমর্থন করেছে।

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের কাছে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ৫০তম অনুসমর্থনকারী দেশ হিসেবে হন্ডুরাসের দলিলাদি জমা দেয়ার ৯০ দিন পর ২২ জানুয়ারি থেকে চুক্তিটি কার্যকর হলো।

উদযাপন অনুষ্ঠানটি অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, কোস্টারিকা, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ডের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যের মধ্য ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন টু অ্যবলিস নিউক্লিয়াস উইপনের প্রধানরা বক্তব্য দেন। জাতিসঙ্ঘ মহাসচির অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে একটি ভিডিও বক্তব্য প্রদান করেন। সূত্র : ইউএনবি


-জেডসি