ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, এপ্রিল ২০২৪ ২২:৩৯:৩৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ফাইজারের টিকা অসুস্থতার সাথে কমাচ্ছে সংক্রমণও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪৯ পিএম, ১ মার্চ ২০২১ সোমবার

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা লোকজনকে গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে যেমন রক্ষা করছে তেমনি করোনার সংক্রমণও কমিয়ে দিচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে চালানো এক গবেষণার ভিত্তিতে এই দাবি করা হয়।

একই প্রকার ফলাফল পাওয়া গেছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওপর চালানো গবেষণায়ও। ইংল্যান্ডের পাবলিক হেলথ বিভাগ থেকে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়।

এসব গবেষণার ফলাফল ‌‘সত্যিকার অর্থেই সুসংবাদ’ বলে দাবি করছেন গবেষকরা। তবে অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপরও জোর দিয়েছেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এর সংক্রমণ ঠেকানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টিকা হয়তো আপনাকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করবে, কিন্তু আপনি আক্রান্ত হতে পারেন এবং এই ভাইরাসটি অন্যের শরীরে ছড়িয়েও দিতে পারেন। তাই করোনাভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রত্যেককেই টিকা নেয়া প্রয়োজন।

গবেষকরা বলছেন, টিকা নেয়ার পর যদি আপনার মাধ্যমে ভাইরাসটি আর ছড়াতে না পারে, তাহলে এটিও গুরুত্বপূর্ণ এবং মহামারীর ওপর এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। কারণ একজন মানুষকে যখন টিকা দেয়া হচ্ছে, তখন সে পরোক্ষভাবে আরেকজন মানুষকেও সংক্রমণের হাত থকে রক্ষা করছে। তাই বলা যায়, টিকা নেয়ার মাধ্যমে শুধু নিজেকে নয়, আরেকজনকেও রক্ষা করা হচ্ছে।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যামব্রিজের এডেনব্রুক্স হাসপাতালের কর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হয় যে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কীনা। কোনো উপসর্গ না থাকলেও তাদের পরীক্ষা করা হয়। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে এই হাসপাতালে ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু হয়। টিকা দেয়া হয় হাসপাতালের স্টাফদেরও। এক মাস পর দেখা যায় যারা কাজ করছেন তাদের কাউকে টিকা দেয়া হয়েছে এবং অনেকে এখনো টিকা নেয়নি।

জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেখা যায় যে টিকা দেয়া হয়নি এরকম এক হাজার স্টাফের মধ্যে ১৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে এরকম এক হাজারের মধ্যে পজিটিভ বলে শনাক্ত হয়েছেন মাত্র চারজন। এছাড়াও যারা আক্রান্ত হয়েছেন, কিন্তু শরীরে কোনো উপসর্গ নেই, তাদের মধ্যেও সংক্রমণের হার কমে গেছে। উপসর্গ না থাকার কারণে তারা না জেনেই অন্যদের শরীরেও ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিয়েছেন।

গবেষণায় প্রাপ্ত এসব ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এর বিস্তারিত তথ্য এখনো অন্যান্য বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করে দেখেন নি।

ড. মাইক উইক্স যিনি এই গবেষণার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা আসলেই একটা সুসংবাদ। লোকজনের খুশি হওয়া উচিত যে টিকা নিলে তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। শুধু নিজেদের রক্ষা করার জন্যই নয়, অন্যরাও যাতে তাদের মাধ্যমে আক্রান্ত হতে না পারে সেজন্যও তাদের টিকা নেয়া উচিত।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘টিকা নিলেই যে পুরোপুরি রক্ষা হয়ে গেল তাও নয়। টিকা পুরোপুরি সংক্রমণ প্রতিরোধ করে না। একারণে হাত ধুতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে। এগুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’

পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের চালানো এই সাইরেন স্টাডিতে.. দেখা গেছে ফাইজারের এক ডোজ টিকা সংক্রমণের ঝুঁকি ৭০% হ্রাস করে আর দুটো ডোজ নিলে এই ঝুঁকি ৮৫% কমে যায়। অন্যদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিলে সংক্রমণের ঝুঁকি অন্তত দুই তৃতীয়াংশ হ্রাস পায়।

ওয়ারউইক মেডিক্যাল স্কুলের শিক্ষক অধ্যাপক লরেন্স ইয়ং বলেছেন, ‘আক্রান্ত না হলে আপনি ভাইরাস ছড়াতে পারবেন না। টিকা একজন ব্যক্তিকে (তার হয়তো উপসর্গ নেই) ভাইরাসটি ছড়ানোর হাত থেকে রক্ষা করে।’

নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জনাথন বল বলেছেন, ‘ফাইজারের এক ডোজ নেয়ার পর সংক্রমণ যে হারে কমতে দেখা গেছে সেটা আশাব্যঞ্জক। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে টিকা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা লকডাউনের মতো বিধি-নিষেধ থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবো। সূত্র : বিবিসি


-জেডসি