ঢাবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা করবো: সামিয়া রহমান
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ৪ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার
ছবি: সংগৃহীত
একাডেমিক গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমানসহ আরো দুই শিক্ষকের পদাবনতি ঘটেছে। অভিযোগে সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে যাচ্ছেন সামিয়া রহমান। এ সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বলেছেন তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ও মামলা করার বিষয়ে।
প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আপনি মামলা করার চিন্তা করছেন। বিষয়টি কতখানি সত্য?
সামিয়া রহমান : অবশ্যই মামলা করবো। অবশ্যই করবো।
প্রশ্ন : এ নিয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন বা নিতে যাচ্ছেন?
সামিয়া : দেখুন, ট্রাইব্যুনাল একটি লিগ্যাল প্রসিডিউর। তারা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, সেই সিদ্ধান্ত তারা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) মেনে নেয়নি। এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে রেজিস্টার সাহেব যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই সিদ্ধান্তও তারা মেনে নেয়নি। এটি পুরোটাই একটা ষড়যন্ত্রমূলক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে ডিন, ভিসি জড়িত। আমার প্রশ্ন, ট্রাইব্যুনালকে যদি তদন্ত করার অথোরিটি দেয়া হয়, তাহলে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত তারা নেবে না কেন?
প্রশ্ন : বিষয়টি কেমন, একটু স্পষ্ট করবেন?
সামিয়া : বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ড. জিন্নাত হুদা আর ড. রহমত উল্লাহর লেখাটা পড়েন। তারা বলেছেন যে, ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সিন্ডিকেট একপেশে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত তারা ট্রাইব্যুনালে দেননি।
প্রশ্ন : আত্মপক্ষ সমর্থনে আপনার বক্তব্য কী?
সামিয়া : তদন্ত কমিটি বা ট্রাইব্যুনাল কোথাও আমার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পায়নি। পত্রিকায় যদি আপনি একটি লেখা লেখেন বা টিভিতে পিটিসি দেন, সেখানে আপনার নাম লিখতে হবে না? কোথাও আমার কোনো নাম, আমার কোনো জমা দেয়ার দলিল, আমার রিভিউয়ারের কপি— কোনো কিছুই আসেনি। মারজান (সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান) নিজে তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করেছে, সে-ই সবগুলো জমা দিয়েছে এবং এটাও বলেছে, এটা তার অনভিজ্ঞতাপ্রসূত ভুল। এত কিছুর পরও আমাকে কেন দায়ভার দেয়া হবে?
প্রশ্ন : তাহলে কী করতে যাচ্ছেন?
সামিয়া : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যায় সিদ্ধান্ত তো আমি মেনে নেব না। কারণ এর ভিতরে নষ্ট রাজনীতির একটি খেলা চলছে। এর মধ্যে বড় বড় অথোরিটি যুক্ত আছে। আইন বিভাগের প্রধান রহমত উল্লাহ স্যার ট্রাইব্যুনালের আহ্বায়ক। তিনি বলেছেন, তাঁর সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে সিন্ডিকেট জোরপূর্বক এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ড. জিন্নাত হুদা ট্রাইব্যুনালের সদস্য ছিলেন। তিনি বলেছেন, তার সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে কয়েকজনের হিংসা চরিতার্থ করার জন্য এটা করা হয়েছে। এই যদি হয়, তাহলে তো আমার বলার কিছু নেই। অভ্যন্তরীণ নষ্ট শিক্ষক রাজনীতি দেখেন না, এটা হচ্ছে তারই একটি বাস্তবায়ন। তাহলে আমি কেন রিট করবো না?
প্রশ্ন : কবে নাগাদ মামলা করছেন?
সামিয়া : আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমার কাগজটি আসুক, তারপর আদালতে মামলা করবো। কাগজ না এলে তো মামলা করতে পারছি না। কাগজের ওপর ভিত্তি করেই তো সেটা করতে হবে।
প্রশ্ন : বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে সেটি উত্থাপন করতে পারতেন।
সামিয়া : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে তো আমি কোনো ন্যায়বিচার পাবো না। বিষয়টি এক মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০১৭ থেকে ২০২১। চার বছর হয়ে গেছে। এই চার বছর ধরে আমার এই বিষয়টি নিয়ে তারা টেনে ধরে রেখেছে। এর মাঝখানে আমি ২০১৯ সালে তদন্ত কমিটির সদস্য পরিবর্তন করার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। ভিসি সেই চিঠি ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। আমার অধিকার আছে তদন্ত কমিটির সদস্য পরিবর্তনের।
প্রশ্ন : তাহলে নিজেকে আপনি নির্দোষ দাবি করছেন?
সামিয়া : ঘটনার সঙ্গে আমার কোথাও কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি; ট্রাইব্যুনালও খুঁজে পায়নি। কিন্তু তদন্ত কমিটি বিষয়টাকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন, ট্রাইব্যুনাল সেটিকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন এবং স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, এটা প্ল্যাগারিজম (চৌর্যবৃত্তি) না। সূত্র: জাগরণ
-জেডসি