গাজার প্রথম নারী ট্যাক্সি চালক নায়লা আবু জিব্বা
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৪৭ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২১ শুক্রবার
গাজার প্রথম নারী ট্যাক্সি চালক নায়লা আবু জিব্বা
সারা বিশ্বের মত ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলকেও হানা দিয়েছে মারণব্যাধি করোনা। এই করোনায় বেকারত্বের কাছে পরাজিত হননি সুদূর গাজার নায়েলা আবু জিব্বা। সংসার বাঁচাতে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাতে রেখেছেন সাহসী এই নারী৷
করোনাকালে নায়েলার জীবন: করোনা এখন পর্যন্ত বারো হাজারেরও বেশি সংক্রমণ পাওয়া গেছে গাজায়৷ মারা গেছেন ৫৬জন৷ এসব মিলিয়ে স্থানীয় মানুষ আগের মতো তাদের দৈনন্দিন ঘোরাফেরা বা কাজকর্ম করতে পারছেন না৷ এর প্রভাব এসে পড়েছে নায়েলার ব্যবসাতেও৷ কিন্তু তাতে দমে যাননি তিনি৷ সীমিত পরিসরেই নিয়ম মেনে, মাস্ক পরে ট্যাক্সি পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন সবার কাছে৷
গাজার বাস্তবতা: চরমপন্থি ইসলামিস্টদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজায় বসবাসরত ৩৯ বছর বয়েসি নায়েলা আবু জিব্বার জীবন বেশ অনেকটাই কঠিন৷ পাঁচ সন্তানের মা নায়েলা সমাজসেবা বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেও কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না৷ গাজায় বর্তমানে বেকারত্বের হার ৪৯ শতাংশ। ইসরাইল ও মিশরে গিয়ে কাজ করার কড়াকড়ি বাড়ানোর ফলে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে৷
যেখান থেকে শুরু: সংসার চালানোর জন্য ঘরে বসে না থেকে নায়েলা একটি সাদা রঙের ‘কিয়া’ গাড়ি কেনেন। চালু করেন ‘আল-মুখতারা’ নামের ট্যাক্সি পরিষেবা৷ বর্তমানে আল-মুখতারা ট্যাক্সি পরিষেবায় একটি মাত্র ট্যাক্সি থাকলেও নায়েলা স্বপ্ন দেখেন এই ব্যবসাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার৷
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন একদিন আল-মুখতারা ফ্লিট বা গাড়ির বহর তৈরি করার৷ আমি এগিয়ে যাবো অনেক দূর।’
গ্রাহকদের মতামত: ট্যাক্সি চালিয়ে নায়েলা শুধু উপার্জন করেন না৷ গাজার নারীদের কাছে নারীচালিত ট্যাক্সি থাকাটাও একটা স্বস্তিকর বিষয়৷
এ প্রসঙ্গে নায়েলা বলেন, ‘কোনো বিউটি পার্লার থেকে সেজেগুজে বের হবার সময় বা কোনো অনুষ্ঠানে যাবার সময় একজন নারীর সাথেই চলাফেরা করতে আমার গ্রাহকরা বেশি স্বচ্ছন্দ্য৷ তাই তারা আমাকে ডেকে নেন নিজেদের প্রয়োজনে।’
এখন পর্যন্ত নায়েলার সব খদ্দেরই নারী৷ অনেকেই তাদের পছন্দের দিন নায়েলাকে সাথে পেতে বেশ আগেই ট্যাক্সি বুক করেন৷
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নায়েলা: করোনা ছাড়াও নায়েলার এই কাজ সোশাল মিডিয়ায় আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনারও শিকার হয়৷ অনেকেই তির্যক সমালোচনা করেন তার এই কাজের। কিন্তু তাতে হতাশ হন না নায়েলা।
এ প্রসঙ্গে নায়েলা বলেন, ‘আমি নানা ধরনের তীর্যক মন্তব্য শুনি৷ কেউ কেউ বলেন, এই কাজ আসলে পুরুষের করার কথা৷ নারীরা নাকি দুর্ঘটনা ঘটান৷ কিন্তু আসলে নারীরা অনেক বেশি ধৈর্য্যশীল৷ আমরা অনেক বেশি সাবধান হয়েই গাড়ি চালাই৷’
তিনি বলেন, ‘তবে সোশাল মিডিয়াতে খারাপের চেয়ে ভালো মন্তব্যই চোখে পড়ে আমার৷ সেটি আমার জন্য কল্যাণকর’
