বাসে উঠতে পারাই প্রথম দিনের বড় চ্যালেঞ্জ
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২১ বুধবার
ছবি: সংগৃহীত
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারকে নানা ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে হয়েছে। ২৯ মার্চ এ সংক্রান্ত জারি করা ১৮ দফা নির্দেশনার মধ্যে একটি ছিল গণপরিবহন চলবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। আর তার জন্য যাত্রীদের দিতে হবে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া।
আজ বুধবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকে দুই সপ্তাহের জন্য কার্যকর হয়েছে নতুন এই নিয়ম।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, জিগাতলা, ধানমন্ডি, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নীলক্ষেত, আজিমপুর, চানখারপুলসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে বাসগুলোকে নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলতে দেখা যায়। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাস না পাওয়ার বিড়ম্বনা। বিশেষ করে সকালের দিকে অফিসমুখী মানুষকে পড়তে হয়েছে এ বিড়ম্বনায়। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি অনেকে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা হাসিনা বেগম নামে একজন বলেন, বাস আসা মাত্রই সবাই হুড়োহুড়ি করে একটি বা দুইটি ফাঁকা সিটে উঠে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেক নারী চাকরিজীবী অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়িতে উঠতে পারছি না।
আরেক যাত্রী শরিফ হাওলাদার বলেন, আজ প্রথম দিন হওয়াতে খুব ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এমন সংকট তৈরি হবে তা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেননি। দুই একদিন পর এই অবস্থা ঠিক হয়ে যাবে।
আবার যাত্রীদের কাছ থেকেও বাড়তি ভাড়া আদায়ে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের। বিকাশ পরিবহনের কন্ডাক্টর পারভেজ হোসেন বলেন, অনেক যাত্রীই অতিরিক্ত ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না। আমাদের এখানে কী করার আছে? সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। একদিকে যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না, অন্যদিকে আমরা অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে পুলিশের কাছে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। আজকে প্রথম দিন তো তাই এরকম হচ্ছে। আশা করছি ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।
একই ধরনের অভিযোগ ঠিকানা পরিবহনের কন্ডাক্টর শামসুল ইসলামেরও। তিনি বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায় করতে গিয়েই বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। কোনো কোনো যাত্রী বলছেন বাড়তি ভাড়া দেব না, তুমি অতিরিক্ত যাত্রী উঠাও। আর অন্যদিকে বাড়তি যাত্রী পরিবহন করলে আমাদের জরিমানার ভয় থাকছে।
আজিমপুরে দায়িত্বপালনরত ডিএমপির ট্রাফিক সার্জেন্ট মোহাম্মদ আলী বলেন, গণপরিবহনগুলোর যাত্রী সংখ্যার দিকে আমরা নজর রাখছি। বাড়তি ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনার কোনো অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি।
করোনা সংক্রমণের প্রথম দফায় গত বছর ৩১ মে থেকেও গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরে ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়েছিল সরকার। পরে সেপ্টেম্বর থেকে আবার স্বাভাবিক যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছিল দেশে।
চলতি বছরে জানুয়ারির শেষের দিকে এসে দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিই কমে আসে। কিন্তু মার্চের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। এ অবস্থায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নতুন করে পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে সরকারকে।
-জেডসি
