ঢাকা, সোমবার ২২, ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০৯:০০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ঐশীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা মওকুফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০২:৪৪ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০১:১৮ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার

বাবা-মাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশী রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।

আজ রোববার (২২ অক্টোবর) ৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করেন রায় প্রদানকারী বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ঐশীর সাজা মওকুফে পাঁচটি যুক্তি দেখিয়েছেন উচ্চ আদালত।

গত ০৫ জুন ঐশী রহমানের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জরিমানা ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে দণ্ড কমানোর ব্যাখ্যায় আদালত বলেন, পাঁচটি কারণে ঐশীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। এ কারণগুলো হলো : এক. হত্যাকাণ্ডের সময় ঐশী মাদকাসক্ত ছিলেন এবং ১৪ বছর বয়স থেকেই তিনি সিসা, ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলের মতো নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করতেন। দুই. ঐশী বংশগতভাবে মানসিক রোগী। তাঁর চাচা-দাদি-খালা অনেকের মধ্যেই মানসিক রোগের লক্ষণ আছে, যা তাঁর মধ্যেও ছোটবেলা থেকে বিদ্যমান। তিন. হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দ্বিতীয় দিনের মাথায় ঐশী আত্মসমর্পণ করেছেন। এতে বোঝা যায়, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চার. ঘটনার সময় ঐশীর বয়স ছিল ১৯ বছর। এ বয়সের একটি সন্তানকে তাঁর বাবা-মা যথাযথভাবে দেখভাল করেননি। ফলে ঐশী ছোটবেলা থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। পাঁচ. ঐশীর বাবা-মা দুজনেই সন্তানের লালনপালন বিষয়ে উদাসীন ছিলেন। এ কারণে ছোটবেলা থেকেই তিনি স্নেহবঞ্চিত হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

২০১৪ সালের ০৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইন্সপেক্টর আবুল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ঐশী রহমান এবং তার দুই বন্ধু মিজানুর রহমান রনি ও আসাদুজ্জামান জনিসহ ৪ জনকে আসামি করে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন। অন্য আসামি গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে।

এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর নিহতদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেন আদালত।