ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৪:৫৮:২১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মার্কেটে মানুষের ঢল, নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০২:২৮ পিএম, ৯ মে ২০২১ রবিবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের প্রয়োজন বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে মার্কেট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি ও শারীরিক দূরত্ব মেনে বেচাবিক্রি করতে বলা হলেও তা কাগজে কলমেই রয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মার্কেটে মার্কেটে বাড়ছে ভীড়। করোনার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে কেনা কাটা করতে যাচ্ছে মানুষ। বাহারি ধরনের পোশাকের বিক্রিও বাড়ছে দোকানদারদের। ব্রান্ডের বিভিন্ন পোষাকের দোকানেও ভীড় বাড়ছে। তবে গরমের অজুহাতে অনেকেই মাস্ক পরছেন না। মাস্ক পরলেও ঠিক জায়গায় রাখেন না।

তাদের দাবি, বেশিক্ষণ মাস্ক পরে থাকলে দম বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। আর ক্রেতারা বলছেন, গরমের সমস্যায় নামিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন মাস্ক। এদিকে অনেক মার্কেটে জীবাণুনাশক বুথ করা হলেও কেউ তার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করছেন না। আবার কোথাও কোথাও প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হলেও সেভাবে ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে না। তার শরীরের তাপমাত্রা মাপতে দেখা যাচ্ছে না অধিকাংশ মার্কেট, শো-রুমগুলোতে। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর নিউমার্কেট, ইস্টার্ন মলি­কা, বসুন্ধরা সুপার মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, সুবাস্তু নজরভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি মার্কেট ও শো-রুমে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ সামনে রেখে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়। চলতি পথে পা ফেলার মতো জায়গা নেই। কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতার মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি। রয়েছে শিশু-কিশোররাও। ভিড় সামাল দিতেই হিমশিম দোকান সংশ্লিষ্টদের। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। ক্রেতারা সামাজিক দূরত্ব মোটেই মানছেন না।

শুধু মার্কেট-শপিং মলের ভেতরের দোকানই নয়, মানুষে ঠাসা ফুটপাতের দোকানও। বরং সেখানে ভিড় আরও বেশি।

নিউ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী সোহেল রানা বলেন, ঈদের আগে বলে আজ ভিড় একটু বেশি। মাঝে মাঝে আমাদের নিজেদেরও ভয় লাগছে। আমরা চাই ক্রেতা আসুক কিন্তু তারাও তো সামাজিক দূরত্ব মানবেন। তারাই মানেন না। তবে আমরা চেষ্টা করি সবাইকে সচেতন করতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম চালাতে।

ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অন্যের গায়ের সঙ্গে গা ঘেঁষে কাপড়, জুতা, টি-শার্টসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বেচাকেনা করছেন। স্বাভাবিক সময়ের মতোই কেনাকাটা চলছে।

থ্রিপিস বিক্রেতা মজনু আলম বলেন, আমরা যারা বিক্রেতা, তারা চেষ্টা করছি দূরত্ব বজায় রাখতে। কিন্তু ক্রেতার চাপে তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

নিউ মার্কেটে আসা হাফিজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে লকডাউন দেওয়ায় সব মার্কেট বন্ধ ছিল। তখন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো কেনা হয়নি। এখন সুযোগ পেয়ে করোনার ঝুঁকির মধ্যেও ঘরের জরুরি জিনিসপত্র কিনতে বাজারে এসেছি।

ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা রায়হান আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘প্রতিটি দোকানে ভিড়, যে কারণে কারও পক্ষেই স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদে নিজেদের জন্য না হলেও বাচ্চাদের জন্য নতুন জামা-কাপড় কিনতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েও বাজারে এসেছি।

আর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বণিক মালিক সমিতির সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধের ফলে প্রয়োজনের তাগিদেই এখন মানুষ আসছে। আমরা সবসময়ই ব্যবসায়ীদের সচেতন করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পণ্য বিক্রয়ের জন্য। যারা মানছেন না তাদের জন্য কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে এবং আমরা সচেতনভাবে ব্যবসা করতে চাই।

এদিকে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে তরুণীদের কিনতে দেখা গেছে গোল্ডপ্লেটেড অর্নামেন্টস। মাটির ও ইমিটশনের প্রতিও বেশ ঝোঁক রয়েছে বলে জানান বিক্রেতা।

খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে দেখা যায়, মার্কেটের ভেতরের চেয়ে মাঝখানের ফুটপাতগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। সিটি কর্পোরেশনের এ মার্কেটের আশেপাশে খালি ফুটপাতগুলো এখন ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাদচারণায় মুখর। শত শত মানুষ ভিড় করছেন তুলনামূলক কম দামে পণ্য কেনার জন্য। তাই সারাক্ষণই হাঁকডাকে সরগরম প্রতিটি দোকান।

এদিকে দুই সিটি কর্পোরেশন মার্কেটে মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রেখেছে। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকায় জরিমানা করছে তারা। মানুষকে সচেতন করতেও কাজ করছে তারা।

-জেডসি