অ্যাসিড সন্ত্রাসের দায়ে সুজনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:১৭ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০২:১৪ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৭ রবিবার
চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের নামে চিড়িয়াখানায় নিয়ে নাসিমা আক্তার প্রিয়াকে অ্যাসিড মারার দায়ে কবিরাজ সুজন হোসাইনকে ১২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত পেশাদার কবিরাজ সুজন হোসাইন (৩০) পাবনার নাজিরপুরের বাবুল প্রামাণিকের ছেলে। ভিকটিম নাসিমা আক্তার প্রিয়া (২৪) অ্যাসিড মামলাটির বাদি রিনার মেয়ে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামানের আদালত আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাগারে আটক সুজনকে আদালতে হাজির করা হয়। সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার রিংকী জানান, গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বাদি রিনার চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের কথা বলে তার মেয়ে প্রিয়াকে মিরপুর চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়ে মুখমণ্ডলে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন কবিরাজ সুজন। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে সাজা দিয়েছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন তন্ত্র-মন্ত্র ও দৈবশক্তি দিয়ে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে সুজনকে একনামে সবাই চেনেন। তিনি বাদি ও ভিকটিমের পূর্বপরিচিত।
বাদিনীর বাড়ি থেকে কিছু টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরি গেলে গেলে গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর সুজন তাদের বাড়িতে আসেন। একদিন সেখানে থাকার পর তিনদিন পর আবার আসার কথা বলে চলে যান। ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি ফিরে এসে মালামাল শনাক্তে বাদিনীর মেয়েকে তার সঙ্গে দিতে বলেন।
বাদিনী মামলায় বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় সরল বিশ্বাসে মেয়েকে সুজনের সঙ্গে দেন। ওইদিন রাত পৌনে বারটায় সুজন ফোন করে জানান, মিরপুর চিড়িয়াখানায় কে যেন তার মেয়েকে অ্যাসিড মেরেছেন। মেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সুজন বাদী হয়ে রাজধানীর শাহআলী থানায় মামলাও দায়ের করেন। এরপর তিনি পলাতক হন।
ভিকটিমের মা রিনা মেয়ের মুখে সব কথা শুনে সুজনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়ে দেখেন, এ ঘটনায় তিনি আগেই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে সে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর ২৪ অক্টোবর সুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন রিনা। মামলার পর পাবনা থেকে সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক।
গ্রেফতারের পর আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে ভিকটিমকে অ্যাসিড মারার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ভিকটিম নাসিমার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। নাসিমা বিভিন্নভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করতো। তার কারণে সুজনের সঙ্গে স্ত্রীরও ডিভোর্স হয়ে যায়। প্রতিশোধ নিতেই তিনি এ কাজ করেন।
