করোনাকালে সংখ্যায় বাড়ছে দুর্লভ পাখি ব্ল্যাক স্টিল্ট
প্রকৃতি-পরিবেশ ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০২:২১ এএম, ১৬ জুলাই ২০২১ শুক্রবার
করোনাকালে সংখ্যায় বাড়ছে দুর্লভ পাখি ব্ল্যাক স্টিল্ট
সময়ের প্রবাহে বিবর্তনের নিয়মে অতীতে এই পৃথিবী থেকে অনেক প্রাণী হারিয়ে গেছে। অনেক প্রাণী নিজেদের বদলে নিয়েছে। বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে পরিবেশ দূষণ এবং জঙ্গল, জলাশয়ের শান্ত পরিবেশ কমে আসার ফলে আরও অনেক প্রাণী বিপদের মুখে পড়েছে।
কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো করোনার পরিস্থিতি এবং বিশ্বজোড়া লকডাউন এসব প্রাণীকূলের কয়েকটি প্রজাতিকে আবার ফিরিয়েও আনছে। এমন খবর এর আগেও দেখেছি আমরা। সেভাবেই বিশ্বের অন্যতম দুর্লভ একটি পাখিও ধীরে ধীরে নিজেদের ফিরে পাচ্ছে। আবারও তাদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
ব্ল্যাক স্টিল্ট। স্থানীয় ভাষায় এই পাখির নাম ‘কাকি’। নিউজিল্যান্ডের সমুদ্রের ধারে বা জলাশয়ের পাশেই মূলত বাস করে এই পাখি। সম্পূর্ণ কালো শরীর আর লম্বা লম্বা গোলাপি পায়ের কারণে সহজেই এদের চিনে নেওয়া যায়। বলা হয়, বিশ্বের দুর্লভতম ওয়েডিং পাখি এই ব্ল্যাক স্টিল্ট।
প্রসঙ্গত, বক বা সারস প্রজাতির পাখিদের ওয়েডিং পাখি বলা হয়; যারা জলের বা সমুদ্রের ধারে বসবাস করে। কিন্তু এই পাখি দুর্লভ কেন? কারণ নানা কারণে এই পাখির সংখ্যা আজ অনেকটা কমে এসেছে।
২০১৮-এর হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবীতে তখন মাত্র ১৩২টি প্রাপ্তবয়স্ক ব্ল্যাক স্টিল্ট বেঁচে ছিল। বন্যপ্রাণীর আক্রমণ তো বটেই; নগরোন্নয়ন এবং মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছিল। প্রকৃতিবিদদের আশঙ্কা ছিল এই পাখিটি হয়ত অচিরেই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে।
এই আশঙ্কা থেকেই শুরু হয় এর সংরক্ষণ। যেহেতু এখন কেবলমাত্র নিউজিল্যান্ডেই এই পাখি পাওয়া যায়, তাই সেখানেই নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হল। অন্তত ৪০ বছরের একটি প্ল্যান করা হয়েছে, যেখানে নানাভাবে ব্ল্যাক স্টিল্টের প্রজনন ও সংখ্যাবৃদ্ধির ওপর নজর দেওয়া হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অফ কনজারভেশনের তরফ থেকে একটি বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়, নাম ‘কাকি রিকভারি প্রোগ্রাম’। সেই উদ্যোগেরই সুফল আসতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে ব্ল্যাক স্টিল্ট ওরফে কাকির সংখ্যা। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আগের থেকে তাদের সংখ্যা অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বিগত ৪০ বছরের মধ্যে যা সর্বাধিক।
আর লকডাউনে অনেকটা সময় ফাঁকা পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই সময়টাকেও ব্যবহার করেছেন নানাভাবে। সব মিলিয়ে সবার ঐকান্তিক চেষ্টায় আবারও জীবনের রাস্তায় ফিরে এসেছে এই পাখির প্রজাতিটি। যা সবাইকে আশা জাগাচ্ছে।