ঢাকা, শনিবার ২৭, এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৬:৪৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নির্দোষ মিনুকে জেলে পাঠানো সেই কুলসুমী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৪ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মিনু; ছবি: সংগৃহীত

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মিনু; ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে একটি হত্যা মামলার আসামি সাজিয়ে নির্দোষ মিনুকে কারাগারে পাঠানো যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া মূল আসামি কুলসুমী আক্তার কুলসুমীকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে পতেঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোহিনুর আক্তার নামে এক গৃহকর্মী হত্যা মামলার আসামি কুলসুমী আক্তার কুলসুমীকে গ্রেফতার করা হয়। গত তিন বছর ধরে তার হয়ে জেল খেটেছিলেন মিনু নামে আরেক নারী। তবে ১৬ জুন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মিনু কারাগার থেকে মুক্ত হন। মুক্ত হওয়ার পর ২৮ জুন রাতে বায়েজিদ সংযোগ সড়কে তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হন।

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার রহমতগঞ্জে একটি বাসায় ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টসকর্মী কোহিনুর আক্তারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর একটি গাছের সঙ্গে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। কোহিনুর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন গার্মেন্টসকর্মী কুলসুম আক্তার কুলসুমী। এরপর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।

মামলায় পুলিশ দুই বছর তদন্ত শেষে কোহিনুরকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দিলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়। এর মধ্যে এক বছর তিন মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান কুলসুমী।

মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের নভেম্বরে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ওই হত্যা মামলায় আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই সাজার পরোয়ানামূলে ২০১৮ সালের ১২ জুন কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলি হয়ে মিনু কারাগারে যান।

চলতি বছরের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে পাঠানো আসামি প্রকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার নন।

এ আবেদনের শুনানি শেষে আদালত কারাগারে থাকা মিনুকে আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি নেয়। তখন তিনি জানান, তার নাম মিনু, তিনি কুলসুম নন।

মিনু বলেন, মর্জিনা নামের এক নারী তাকে চাল, ডাল দেবে বলে জেলে ঢোকান। প্রকৃত আসামি কুলসুম আক্তারকে তিনি চেনেন না।

আদালত কারাগারের রেজিস্ট্রারগুলো দেখে হাজতি আসামি কুলসুমী ও সাজা ভোগকারী আসামির চেহারায় অমিল খুঁজে পান। তখন আদালত কারাগারের রেজিস্ট্রারসহ একটি উপনথি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল নথির সঙ্গে সংযুক্তির জন্য পাঠিয়ে দেয়।

পরে হাইকোর্ট গত ৭ জুন নিরপরাধ মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দেয়।

কারামুক্তির ১২ দিন পর চট্টগ্রামের বায়েজিদে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মিনু। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহ দাফন করে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম।

-জেডসি