ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:১৭:৫৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০৭:১২ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৬:২২ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৭ রবিবার

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি শুধু স্বীকৃতি নয়, ইতিহাসও যে প্রতিশোধ নেয় তারও প্রমাণ। ইতিহাস ঠিকই তার সত্য অবস্থান করে নেয়। শুধু বাংলাদেশ নয়, আজ পুরো বাঙালি জাতি, মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদেরা, সবাই সম্মানিত হয়েছে।


আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে’র স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।


নাগরিক কমিটির ব্যানারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার একটাই অনুরোধ থাকবে আর যেন কখনো পাকিস্তানের তোসামোদকারী-চাটুকার-প্রেতাত্মারা আর যেন ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ না পায়, সেজন্য সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে জাগ্রত হতে হবে।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শহীদ পরিবারগুলোর প্রতি সহমর্মিতাও জানান তিনি। ইউনেস্কোর মহাসচিব এবং যেসব দেশ ৭ মার্চের ভাষণের পক্ষে ভোট দিয়েছে তাদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ স্বাধীন। এই স্বাধীনতা ২৩ বছরের সংগ্রাম এবং নয় মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছে। বাঙালি জাতি হিসেবে পাওয়া গেছে বিশ্বদরবারে মর্যাদা। আর এই মর্যাদা এনে দিয়েছেন মহান নেতা বঙ্গবন্ধু।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ভাষণের আগে আমার মা বাবকে বলেছিলেন, তিনি যেন তার মনের মতো ভাষণ দেন। কোনো লিখিত বক্তব্যের ওপর নির্ভর না করেন। মা বলেছিলেন, ‘তোমার মনে যেই কথা আসে শুধু সেই কথাই বলবে।’মায়ের এই পরামর্শকে শ্রেষ্ঠ পরামর্শ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রনায়ক ভাষণ দিয়েছেন, তা অনেক স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে সেগুলো ছিল লিখিত। কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণের কোনো লিখিত বক্তব্য ছিল না, ছিল না কোনো নোট।


তিনি বলেন, ওই এক ভাষণেই তিনি সব দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। কারণ বঙ্গবন্ধু জানতেন কী ঘটতে পারে। এই ভাষণে তিনি বাংলাদেশের সব মানুষের ২৩ বছরের নিপীড়ন, অত্যাচার, শোষণের কথা বলেছিলেন। কী কী করণীয় তার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যে বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে তার জীবনের সোনালী সময় কারাগারের অন্তরালে কাটিয়েছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ২৩ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, তার ৭ মার্চের ভাষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫-এর পর যারা ক্ষমতা দখল শুরু করেছিল, যারা এই মাটিতে জন্ম নেয়নি। তাই তারা বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। তিনি বলেন, ইতিহাস এক সময় সত্যকে অবশ্যই তুলে ধরে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে সূর্য আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। এই সূর্যই এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।


উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশের আরও ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে গতমাসে ডকুমেন্টারি হেরিটেজ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করে নেয় ইউনেস্কো।