ঢাকা, রবিবার ০৫, মে ২০২৪ ০:৫৪:২১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পরীর রিমান্ডবিষয়ে ম্যাজিষ্ট্রেটের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:৪৪ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

চিত্রনায়িকা পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে দেয়া সিএমএম আদালতের দুই ম্যাজিষ্ট্রেটের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি আজ বুধবার উত্থাপিত হয়। এ সময় আদালত বলেন, দুই ম্যাজিষ্ট্রেটের একজন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মাদকের ভয়াবহতার কথা লিখেছেন। আর রিমান্ড মঞ্জুরের ক্ষেত্রে যে ত্রুটি হয়েছে, অন্য ম্যাজিষ্ট্রেট তা ‘বিশ্বাসই করেন না’।
আদালত বলেছেন, আমরা এ ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নই। বিচারকদের ব্যাখ্যায় হাইকোর্টকে আন্ডারমাইন (হেয়) করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত। আদালত এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন পরীমণির মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আবারও আদালতে হাজির হতে হবে।
আদালতে পরীমণির পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী এটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।
শুনানির শুরুতে হাইকোর্ট বলেন, দুই বিচারক কী ব্যাখ্যা দিয়েছে তা একটু শোনাতে চাই। রাষ্ট্র মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। অত্র মামলার আসামি সামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণি বিদেশি মদ, এলএসডি আইসসহ গ্রেফতার হন। এসময় আদালত জানতে চান এলএসডি বিদেশি মাদক রাখার সাজা কত বছরের? তখন আইনজীবীরা বলেন, ৫ বছর। তখন আদালত বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডের বিষয়ে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ কারণে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রাখলাম। তদন্ত কর্মকর্তা সিডি (মামলার নথি) দাখিল করেছে। সেটি আমরা গ্রহণ করেছি। আদালত বলেন, ওনাদের (বিচারকদের) ত্রুটি হয়েছে এটা বিশ্বাস করেন না। তার মানে হাইকোর্টকে আন্ডারমাইন (হেয়) করা হয়েছে।
বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমণিকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন সিএমএম অদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় ম্যাজিষ্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমণিকে শেষ দুই দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে সেই ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট।
জামিন সংক্রান্ত রুল ও রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্ট গত ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেয়। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী তাদের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেন। সেই ব্যাখ্যা আজ বুধবার হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়। 
গত ৪ অগাস্ট ঢাকার বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে চিত্রনায়িকা পরীমণিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। প্রায় এক মাস পর  জামিনে মুক্তি পান তিনি। এ মামলায় তিন দফায় মোট টানা সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গত ৫ অগাস্ট প্রথম দফায় চার দিন, ১০ অগাস্ট দুই দিন এবং ১৯ অগাস্ট একদিনের রিমান্ডে পাঠনো হয় তাকে।
বার বার রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে রুল চেয়ে গত ২৯ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করে মানবাধিকার ও আইনি সহায়তাকারী সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।  বিষয়টি নিয়ে শুনানি নিয়ে পরীমণির বিরুদ্ধে বনানী থানার মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করার পাশাপাশি শেষ দুই দফায় রিমান্ড মঞ্জুর করা দুই ম্যাজিষ্ট্রেটের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়।