ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর মাঝে নিজস্ব ভাষার বই বিতরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:৪৩ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি।
মৌলভীবাজার জেলায় হারিয়ে যাওয়া হরফ সংরক্ষণ করে রোমান ভাষায় ছাপিয়ে ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য কয়েক হাজার বই বিতরণ করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ক-কে কোক, খ-কে সাম, গ-কে লাই, ঘ-কে মিত, ঙ- কে পা। এভাবেই মনিপুরি, খাসি, সাদ্রিসহ ৫টি আদিবাসী জাতি গোষ্ঠীর শিশুরা পড়ছে বাংলাভাষার পাশাপাশি তাদের নিজস্ব ভাষার হরফের বই।
শিক্ষকরা জানান, যে বইগুলো দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। বইগুলো বাচ্চারা বাসায় পড়তে পারছে। একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বইগুলো পেয়ে স্কুলের বইয়ের সাথে সাথে আমাদের মনিপুরী ভাষায় স্বরলিপিও পড়তে পারছি।
মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে প্রায় ৯০টিরও বেশি ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠী। এদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বরলিপি। সংরক্ষণের অভাবে অনেক জাতি হারিয়ে ফেলেছেন তাদের নিজস্ব ভাষার হরফ।
মৌলভীবাজারের ৭ উপজেলায় প্রায় লাখো আদিবাসীর বাস। যাদের বেশিরভাগের বসবাস শ্রীমঙ্গলে। এর মধ্যে খাসিয়া, মনিপুরি, গারো, সাদ্রি, সাঁওতাল, মুন্ডা, ত্রিপুরা ও পাঙনসহ ৩৭টি জাতি রয়েছে সরকারি তালিকায়। যাদের প্রত্যেকেরই ছিলো নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। যা আজ বিলুপ্তির পথে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার আদিবাসী সমন্বয়ক তাজুল ইসলাম জাবেদ বলেন, তাদের নিজস্ব ভাষা পড়তে পেরে তারা যে আনন্দিত, উল্লাসিত তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এসব ভাষা সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে মনিপুরি, খাসি, সাদ্রিসহ ৫টি জাতি গোষ্ঠীর স্বরলিপি সংগ্রহ করে বই আকারে প্রকাশ করেন। এরপর তা বিতরণ করেন ৮৪টি স্কুলে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ৫টি মাতৃভাষার বই প্রকাশ করেছি। বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে এই বই তাদের কাছে পৌঁছিয়েছি।
নিজেদের ভাষার বই পেয়ে খুশি তারা। ভাষা সংরক্ষণের এ ধরণের উদ্যোগ দেশের অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-জাতি গোষ্ঠীর মধ্যেও ছড়িয়ে যাবে এ প্রত্যাশা তাদের।