নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মারি কুরির জন্মদিন আজ
আলীম আল রশীদ
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:২১ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০২১ রবিবার
ফাইল ছবি।
নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী মারি কুরির জন্মদিন আজ ৭ নভেম্বর। তিনি বিশ্বের প্রথম নারী বিজ্ঞানী যিনি দুইবার নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এই ফরাসি বিজ্ঞানী ১৯০৩ সালে তেজস্ক্রিয়তার উপর গবেষণার জন্য তার স্বামী পিয়ের কুরি এবং তেজস্ক্রিয়তার আবিষ্কারক অঁরি বেকেরেলের সাথে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান।
মারি কুরিই ছিলেন প্রথম নারী বিজ্ঞানী যিনি বিজ্ঞানের দু’টি ভিন্ন শাখায় দু’বার নোবেল পুরস্কার জয় করেন। তিনি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়েরও প্রথম নারী অধ্যাপক ছিলেন। এবং তিনিই প্রথম নারী যার অসামান্য মেধার কারণে তাকে ১৯৯৫ সালে প্যান্থিয়নে সমাহিত করা হয়।
মারি কুরি ১৮৬৭ সালের ৭ নভেম্বর পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশে জন্মগ্রহণ করেন। পোল্যান্ড তখন রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ ছিলো। মারি কুরি ওয়ারশ শহরে গোপন ভাসমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন এবং এই শহরেই তার ব্যবহারিক বৈজ্ঞানিক প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
১৮৯১ সালে ২৪ বছর বয়সে তিনি তার বড় বোন ব্রোনিস্লাভাকে অনুসরণ করে প্যারিসে পড়তে যান। সেখানেই তিনি তার পরবর্তি বৈজ্ঞানিক কাজ শুরু করেছিলেন।
১৯০৩ সালে মারি কুরি তার স্বামী পিয়েরে কুরি এবং পদার্থবিদ হেনরি বেকেরেলের সাথে পদার্থ বিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ।
মেরি কুরি এককভাবে ১৯১১ সালে রসায়নেও নোবেল পুরস্কার জয় করেন। তার এই অসমান্য অবদানের জন্য আজও বিশ্ববাসীর কাছে তিনি সমাদৃত।
পদার্থবিজ্ঞানে মারি কুরি নোবেল পুরস্কার পান তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে কাজ করার জন্য। আর রসায়নে নোবেল পান পিচব্লেন্ড থেকে রেডিয়াম পৃথক করার জন্য।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হাসপাতালগুলোতে এক্স-রের সরঞ্জামের ভীষণ ঘাটতি ছিল। যুদ্ধাহত রোগিদের এক্স-রে সঠিকভাবে করানোর অর্থ যোগাতেও সে সময় তিনি তহবিল সংগ্রহে নামেন। এসময় অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি ২২০টি রেডিওলোজি স্টেশন গড়ে তোলেন।
এর মধ্যে ২০০টি ছিল বিভিন্ন জায়গায় স্থায়ী এবং ২০টি ছিল ভ্রাম্যমান। এগুলো তিনি বিভিন্ন ধনী নারীদের কাছ থেকে গাড়ি ধার নিয়ে তৈরি করেছিলেন।
মারি কুরি নিজেও বিভিন্ন স্টেশনে এক্সে-রে করতে সাহায্য করতেন এবং যুদ্ধের সময় তার গড়া এই রেডিওলজি ইনস্টিটিউটগুলোয় প্রায় ১০ লাখ যুদ্ধাহতের এক্স-রে করার মাধ্যমে যথাযথ চিকিৎসা দিতে পেরেছিল।
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারসতে নিজের গড়া রেডিয়াম ইনস্টিটিউটসহ তিনি অন্য একটি রেডিয়াম ইনস্টিটিউটেও দিবারাত কাজ করতেন।
রেডিয়াম বিষয় নিয়ে রেডিয়াম ইনস্টিটিউটে গবেষণা করে তিনি তার মেয়ে ইরিন কুরি, মেয়ের স্বামী ফ্রেডরিক জুলিয়েটের সাথেও যৌথভাবে নোবেল পান।
আজ এই মহীয়সী নারী, নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী মারি কুরির জন্মবার্ষিকী। আজকের এই দিনে তাকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা।