ঢাকা, সোমবার ২৯, এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩১:১৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বরিশালে খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫৯ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২১ শনিবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বরিশালে শীতের শুরুতেই খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গাছিরা। কনকনে শীতে ভোরে তারা ছুটে বেড়াচ্ছেন গাছ থেকে গাছে রসের হাড়ি সংগ্রহ করতে। 

জেলার সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের চুরামন গ্রামের ১নং ওয়ার্ডে গিয়ে সরোজমিনে দেখা গেছে, গাছি সোনামিয়া রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন। ব্যস্ততার মধ্যে কিছুক্ষণ কথা হয় তার সঙ্গে। 

সোনামিয়া বলেন, শীত শুরুর আগেই আমরা নিজের ও গ্রামের বিভিন্ন পরিবারের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে খেজুরের গাছ লিজ নিয়ে থাকি। এবারও নিয়েছি। রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝাড়ার কাজ শেষ করেছি। ইতোমধ্যে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজও শুরু করেছি। 

জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম এলাকার গাছি খলিল হাওলাদার বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করতে হয়। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসিতে রস সংগ্রহ করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করি। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় কলসিগাছে বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন। 

সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের গাছি আজিজ গাজী বলেন, শীত মৌসুমের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। বছরের এ শীত মৌসুমেই কয়েক মাস আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকি। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।

এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি জানান, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, তাতে এক সময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে বড় করা।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউবি)-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বেলায়েত  হাসান বাবলু বলেন, আগের মতো খেজুর গাছ এখন আর নেই। পেশাদার গাছির সংখ্যাও কমছে। 

সাংবাদিক বাবলু আরো বলেন, সরকারি সড়কের দু’পাশে যদি পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ লাগানো হয় তাহলে প্রতি বছর খেজুর গুড় বিক্রি করে সরকার প্রচুর টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে। এবং এ উদ্যোগ সরকারী ভাবেই নেয়া উচিৎ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক তাওফিকুল আলম বলেন, শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। আমরা গাছিদের রস সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পরামার্শ দিয়ে যাচ্ছি। খেজুর গাছ ফসলের কোনো প্রকারের ক্ষতি করে না। এ গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। যে কেউ বাড়ির পাশে যে কোন স্থানে লাগাতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে খেজুর গাছ অনেকটা কমে গেছে। ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ।