ঢাকা, সোমবার ২২, ডিসেম্বর ২০২৫ ৭:৫১:৪২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন বেঁচে আসা যাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৪২ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

রাজধানীর মিরপুর ও আঁটিবাজারের বাসিন্দা ফয়েজ খান ও ফোরকান।ব্যবসায়িক কাজে ‘এমভি অভিযান-১০’ নামক লঞ্চে করে অন্যান্য যাত্রীদের মতো ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা করেন। গতকাল সন্ধ্যার পর লঞ্চটি সদরঘাট থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে রাত তিনটার দিকে লঞ্চটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে আসা ফয়েজ খান ও ফোরকান গণমাধ্যমকে বেঁচে আসার লোমহর্ষক বর্ণনা।দিলেন।

তারা বলেন, তখন রাত তিনটা।অনেকেই ঘুমাচ্ছিলেন লঞ্চের কেবিনে। আমরাও কেবিনে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ যাত্রীদের চিৎকার শুনতে পাই।ভেবেছিলাম লঞ্চটি ডুবে যাচ্ছে।কিন্তু দ্রুত কেবিন থেকে বের হয়ে দেখি লোকজন এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছে।আর আগুন আগুন বলে চিৎকার করছে। তখন শুনতে পাই নিচে ইঞ্জিন থেকে আগুন লেগেছে।কী করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।দ্রুত বাড়তে থাকে আগুনের তীব্রতা।ছড়াতে থাকে পুরো লঞ্চে। ।গভীর রাত, বাইরে তাকিয়ে দেখি চারিদিক অন্ধকার। বাঁচতে হলে নদীতে ঝাপ দেয়া ছাড়া উপায় নেই।অনেক ভয় কাজ করছে।তারপরও বুকে সাহস নিয়ে লঞ্চের ‘বয়া’ নিয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।বয়া নিয়ে শীতের রাতে আধাঘণ্টা সুগন্ধা নদীতে সাঁতার কাটি।তারপর অনেক কষ্টে তীরে উঠি।

ফয়েজ খান বলেন, গভীর রাত হওয়ায় অনেকেই কেবিনে ঘুমাচ্ছিলেন।তারা ঘুম থেকে উঠতে পারেনি।অনেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।তিনি বলেন, আমাদের কয়েকলাখ টাকার মালামাল ছিল। সব পুড়ে গেছে।তারা ধারণা করছেন হতাহতের সংখ্যা অনেক হতে পারে।

সাইদুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, লঞ্চে শিশু, বুড়ো, নারীসহ কমপক্ষে তিন শতাধিক যাত্রী ছিল।

ইতালিফেরত এই যাত্রী বলেন, পোড়া গন্ধ পেয়ে আমি ভিআইপি কেবিন থেকে বেড়িয়ে এসে দেখি লঞ্চে আগুন লেগেছে। তখন আমার স্ত্রী, শ্যালক নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নদী সাঁতরে তীরে উঠেছি। লঞ্চ ভাসতে ভাসতে কোথাও গিয়ে থেমেছে। তবে এটুকু বলছি, লঞ্চের কোনো অংশ পোড়ার বাকি নেই।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩০ জন নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শতাধিকের বেশি যাত্রী আহত হয়েছে।
গণমাধ্যকে জেলা প্রশাসক জহরুল আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে লঞ্চটিতে আগুন লাগে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলে এলে লঞ্চ থেকে কিছু যাত্রী নামতে পেরেছেন।

যাত্রীরা অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। অনেকে হয়তো পারেননি।