ঢাকা, শুক্রবার ১৯, এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩১:০৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মায়ের তৈরি হারবাল পণ্যে সফল উদ্যোক্তা ঐশী 

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:০১ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

মুরসালিনা ঐশী, জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। পরিবারের ছোট সন্তান ঐশী বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মায়ের তৈরি হারবাল হেয়ার অয়েল ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন তিনি। করনাকালীনে ঘরে বসে সিদ্ধান্ত নেন অনলাইনে ব্যবসা করার। এরই মাঝে ঐশী যুক্ত হন ব্যবসা নির্ভর ফেসবুক গ্রুপ উই (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম)-এ। 

বলতে গেলে শুণ্য থেকেই ব্যবসা শুরু করেছিল ঐশী। ব্যবসা নিয়ে নূন্যতম জ্ঞান বা ধারণা ছিল না তার। নিজের জমানো ১৫০০ টাকা দিয়ে ফেসবুক পেজ ‘চাটগাঁইয়া রূপঘর’- এর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেছিলেন ঐশী। এরপর উই গ্রুপে দেড় মাস পোস্ট ও কমেন্ট করার একসাথে ১০ টা অর্ডার পেয়েছিলেন তিনি। মূলত উই থেকেই ঐশী তার ব্যবসা সম্পর্কে জানাশোনার শূন্যস্থান পূরণ করতে পেরেছিলেন। কঠোর পরিশ্রম আর বিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন ঐশী। 

বর্তমানে তার পেজে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হেয়ার কেয়ার এবং স্কিন কেয়ারের মতো হারবাল পণ্য। ছেলে মেয়ে উভয়েরই একটা বয়সের পর চুলের এবং ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজানোর জন্য রয়েছে কুইনো হেয়ার অয়েল, যা ছেলে মেয়ে উভয়ে এবং বাচ্চারাও ব্যবহার করতে পারবে।এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে রয়েছে কুইনো ফেইসপ্যাক, হোয়াইটেনিং প্যাক,বডি প্যাক এবং চোখের কালো দাগ দূর করতে রয়েছে আই মাস্ক ইত্যাদি পণ্য।

নিজের উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে মুরসালিনা ঐশী বলেন, ‘উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের পরিচয় হবে তা কখনো ভাবিনি। লকডাউনে ঘরবন্দি থাকায় সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে সময় কাটত। ২০২০ সালের মে মাসে আমি উই গ্রুপে যুক্ত হয়ে বুঝতে পারি আমার কিছু করা দরকার। এখন বাবার পরিচয়ে বেঁচে আছি। ভবিষ্যতে আরেকজনের পরিচয়ে বাঁচবো। জীবনে বাঁচতে হলে নিজের একটা পরিচয় থাকা খুবই জরুরি। এই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। এই অনুপ্রেরণা পেয়েছি উই থেকে। 

কি নিয়ে ব্যবসা শুরু করব তা নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি।কেননা দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে আমার আম্মু হারবাল হেয়ার অয়েল তৈরি করেছেন। যা আত্মীয়,প্রতিবেশী সবাই ব্যবহার করতে ক্রয় করত।এছাড়াও স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ছিল। বলা যায় আম্মু এবং আমার জ্ঞানের সমন্বয়ে আমি পরিকল্পনা করেছি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি প্রোডাক্টস নিয়ে কাজ করব। '


তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু হেয়ার কেয়ার এবং স্কিন কেয়ার পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছি। এই ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন পেতাম " আপনি কি ল্যাব টেস্ট করেছেন? কিভাবে বুঝলেন এই অয়েল সবার স্যুট করবে?সাইড ইফেক্ট নেই নিশ্চয়তা কিভাবে দিচ্ছেন? ইত্যাদি।
 
শুরুতে এই প্রশ্ন গুলো আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বহুবার।হেয়ার অয়েলের বিএসটিআই এপ্রুভাল নেওয়ার পর আমি ক্রেতাদের নিশ্চয়তা দিতে পারছি। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি আত্মবিশ্বাস নিয়ে।এখন ৯৯ শতাংশ ক্রেতা আমার পণ্যের উপর আস্থা রাখছেন এবং ভালো রিভিউ দিচ্ছেন। ৮০ শতাংশ ক্রেতাকে আমি রিপিট ক্রেতা হিসেবে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ’। 

মায়ের সহযোগিতায় ঐশীর উদ্যোক্তার জীবনের প্রায় ১৬ মাস চলমান। প্রচারণা এবং গুণগত মানের জন্য ক্রেতাদের খুব ভালো সারা পাচ্ছেন তিনি। উই গ্রুপ, পেইজ এবং পরিচিত ক্রেতা সব মিলিয়ে ১৫০০ টাকা বিনিয়োগে বর্তমানে আড়াই লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন ঐশী। তিনি আশা করেন সামনের দিনগুলোতেও ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করে ব্যবসায় সফল হবেন।