ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৮, ডিসেম্বর ২০২৫ ০:৪৬:৪৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নারী সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৪:১৮ পিএম, ১০ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

যে রাজনীতি নারীর পক্ষে, মানুষের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, সেই রাজনীতি বেছে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, যে রাজনীতি নারীর অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না, তার কী দরকার?

জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত সভায় এ কথা বলেন ডা. দীপু মনি।

নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে রাজনীতি মানুষের স্বীকিৃত দেয় না, নারীর মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় না, সেই রাজনীতির কী দরকার? যারা যুদ্ধপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যাতন করেছে, যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়; নারীর অধিকার লঙ্ঘন করার সব কায়দা কানুন তাদের মাধ্যমেই হবে। তাহলে নারী কেন তাদের সমর্থন দেবে? সমর্থন দেওয়া উচিত নয়। যারা প্রগতির কথা ভাবেন, তাদেরও সেই রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ নেই। নারীর অধিকার তো রাজনৈতিক বিষয়।

ডা. দীপু মনি বলেন, নারী সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল। রান্না করবে কে?- নারী। শেলাই করবে কে?- নারী। ঘর ধোয়ামোছা করবে কে?- নারী। কিন্তু যখনই এর সঙ্গে অর্থপ্রাপ্তি যোগ হয়, তখন পুরুষ। যেমন দর্জি পুরুষ, বাবুর্চি পুরুষ এবং ক্লিনারও পুরুষ। যে আর্থ সংশ্লিষ্ট ছাড়া করা হয়, সেটি নারীর কাজ। আর অর্থ যোগ হলেই তা পুরুষের। এটি সমাজের তৈরি করা।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা চাকরিতে অনেক জায়গায় দেখছি নারী। ৭২-এর সংবিধানে নারীর সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজ যারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেন, সেখানেও ক্ষমতায়নে নারীর অবস্থান তৈরি হয়নি। এটি সত্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা নারী।  অথচ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীর অবস্থান এখনও কম। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত বিশাল মন্ত্রণালয়। আমি মন্ত্রী নারী। মাঠ পর্যায়ে অনেক শিক্ষক আছেন নারী। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী খুব কম।

তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের নারী নীতিমালা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।  ১৯৯৭ সালের নারী নীতির মৌলিক কতগুলো বিষয় ছিল। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে রাতের অন্ধকারে সেই নারী নীতিকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হলো। কারণ তখন যে সরকার সে কারের মূল অংশে ছিল একটি মৌলবাদী দল। মূল দলটিও নারী দিদ্বেষী, তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে। নারী নীতিটাকে পাল্টে ফেলার পর যেটা হলো—আবার যখন ২০১১ সালে নারী নীতিটি করলাম, তখন মৌলিক যে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, আমাদের রাজনীতির যে চেহারা এতখানি পাল্টে গেলো; আমরা ১৯৯৭ সালের নীতিমালার মৌলিক জায়গায় ফিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমাদের ওই জয়গায় যেতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সকাল বেলা কল চালালে পানি আসে; এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। আমার বাচ্চাটি স্কুলে পড়তে যায়; সেটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। আমার খাবার আসে সেটিও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল। অনেকের মধ্যে এ রকম ধারণা আছে—“আমি রাজনীতিতে থাকি না বাবা”। কিন্ত আমরা যা কিছু করছি তার সব সিদ্ধান্তই নিচ্ছে রাজনীতি। আমি যদি রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখি, যদি ভাবি আমি ওর কাছে যাবো না। তার মানে হচ্ছে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি না। আমি সচেতন না। তবে সবাইকে রাজনৈতিক দল করতে হবে এমন না। তবে রাজনীতি সচেতন হতে হবে।