রোজায় টুপি তৈরিতে ব্যস্ত নারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৩:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২২ শনিবার
সংগৃহীত ছবি
টুপি ঈদে পুরুষদের পোশাক বিশেষ করে পাঞ্জাবির সঙ্গে একটি প্রধান অনুসঙ্গ। আসছে রোজার ঈদ। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কুমিল্লার মুরাদনগরে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারী কারিগররাা।
এসব গ্রামীণ নারীর হাতে তৈরি টুপি সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে টুপি রপ্তানি হচ্ছে। গত অর্ধযুগ ধরেই দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে মুরাদনগরের টুপি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। বছরজুড়ে কারিগররা টুপি তৈরি ও রপ্তানিতে ব্যস্ত থাকলেও রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে কাজের চাপ বেড়ে যায়।
টুপি কারিগররা জানান, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদের মৌসুমে টুপি তৈরির চাপ অনেক বেশি থাকে। প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে অর্ধ শতাধিক পরিবারের অসহায় নারী গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরি করে বাড়তি উপার্জনের মাধ্যমে সংসারের চাহিদা মেটাচ্ছে।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে এসব নারী তাদের হাতের নিপুণ কারুকাজের মাধ্যমে তৈরি করছেন আধুনিক মানের উন্নত ও রুচিশীল টুপি। তাদের হাতের ছোয়ায় সুন্দর রূপ নিয়ে এসব টুপি চলে যায় বিদেশীদের কাছে।
প্রবাসে টুপি রপ্তানিকারক ইয়াকুব আলী বলেন, কাপড় কেটে ছাপ দিয়ে তাতে নকশা তৈরি করা হয়। টুপিতে সুই সুতা দিয়ে নানা ধরনের নকশা কাটা হয়। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে তা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।
টুপি তৈরির কারিগর ফেরদৌসী বেগম জানান, প্রতিদিন গড়ে তিনটি টুপি তৈরি করতে পারেন তিনি। প্রতিটি টুপির মজুরি হিসেবে ৩৫ টাকা পান। সংসারের কাজের পাশাপাশি টুপি সেলাই করে সংসারের বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।
উপজেলা সদরের ফাতেমা বেগম (৪০)। তিনি প্রায় ৭ বছর ধরে টুপি তৈরি করেন।
তিনি বলেন, করোনার কারণে পাইকারী ব্যবসায়ীদের টুপি কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন করোনা পরিস্থিতি পাল্টেছে। ঈদকে সামনে রেখে টুপি ব্যবসায় আবারও জোয়ার এসেছে। ব্যবসায়ীরা যোগাযোগ করছেন আমাদের সাথে।
স্থানীয় মুসল্লী খোকন চৌধুরী বলেন, মুরাদনগর উপজেলা সদরের প্রায় প্রতি বাড়ির নারী-পুরুষেরা টুপি তৈরির কাজে যুক্ত। বিদেশে এ টুপি বিক্রি করে টাকা উপার্জন করছে তারা। এ টুপি ওমানে প্রায় বাংলাদেশের টাকায় ৩/৪ হাজারে বিক্রি হয়।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন জানান, এলাকার অসহায় নারীরা টুপি তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে স্থানীয়ভাবে একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নারীরা সংসারের কাজের পাশাপাশি টুপি তৈরির কাজ করায় তাদের আর্থিক উন্নয়ন ঘটছে।