ঢাকা, শনিবার ২০, এপ্রিল ২০২৪ ২০:২০:২৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুন

(ভূমিকা: পিটার হুদিস এবং কেভিন বি. এন্ডারসন)

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৩ এএম, ১২ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুন

রোজা লুক্সেমবার্গের নির্বাচিত রচনা: অনুবাদ: অদিতি ফাল্গুন

পর্ব-১০: প্রথম অধ্যায়: রাজনৈতিক অর্থনীতি, সাম্রাজ্যবাদ ও অ-পশ্চিমা সমাজ

১. সঞ্চয়ের ঐতিহাসিক শর্ত,  ‘পুঁজির সঞ্চয় (দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিটাল)’ থেকে

সম্পাদকের নোট : ‘দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিটাল’: ১৯১৩ সালে জার্মান ভাষায় প্রথম সাথে একটি উপ-শিরোনাম ‘আ কন্ট্রিবিউশন টু এ্যান এক্সপ্ল্যানেশন অফ ইম্পেরিয়ালিজম’ সহযোগে প্রকাশিত হয়। এই কাজটিকে রোজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৪৫০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থে লুক্সেমবার্গ সম্প্রসারিত পুনরুৎপাদনের সমস্যার উপর জোর দেবার মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের অর্থনৈতিক শেকড় উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন যা মার্ক্স তাঁর ‘পুঁজি’-র দ্বিতীয় খন্ডে আলোচনা করেছেন। লুক্সেমবার্গের মতে মার্ক্স সম্প্রসারিত পুঁজির পর্যাপ্ত হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন যেহেতু ‘পুঁজি’-র দ্বিতীয় খন্ডটি একটি বদ্ধ পুঁজিবাদী সমাজকে অনুমান করে রচনা যেখানে বিদেশী বাণিজ্য আলোচনায় আসেনি। লুক্সেমবার্গ, পক্ষান্তরে, এটাই দেখাতে চেয়েছেন যে সম্প্রসারিত পুনরুৎপাদন পুঁজিবাদের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে যা অ-পুঁজিবাদী স্তরের ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত মূল্য আদায় করে নেয়। ‘দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিট্যাল (পুঁজির সঞ্চয়)’ তাই এটাই প্রদর্শন করতে চেয়েছে যে নিজের স্বভাবের কারণেই পুঁজিবাদের দরকার হয় অ-পুঁজিবাদী ভুবনের উপর আধিপত্য ও শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, নচেৎ পুঁজিবাদী পৃথিবী ধসে পড়ে।  

‘দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিটাল’-এর প্রথম অধ্যায় ‘পুনরুৎপাদনের সমস্যা (দ্য প্রব্লেম অফ রিপ্রোডাকশন’); দ্বিতীয় অধ্যায় ‘সমস্যার ঐতিহাসিক উদ্ভাস (হিস্ট্রিক্যাল এক্সপোজিশন অফ দ্য প্রব্লেম’) এবং তৃতীয় অধ্যায় ‘দ্য হিস্ট্রিক্যাল কন্ডিশনস্ অফ এ্যাকুমুলেশন (সঞ্চয়ের ঐতিহাসিক শর্তাবলী) । ‘এখানে আমরা তৃতীয় অধ্যায়ের ২৫তম পরিচ্ছেদের প্রথম দুই অধ্যায় এই সঙ্কলণে অন্তর্ভুক্ত করেছি, Ôবর্দ্ধিত পুনরুৎপাদনের বৃত্তের অভ্যন্তরীণ অসঙ্গতিসমূহ’ ও ২৬তম পরিচ্ছেদ ‘পুঁজির পুনরুৎপাদন এবং তার সামাজিক বিন্যাস’  এবং ২৭তম পরিচ্ছেদ ‘জাতীয় অর্থনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম’-এর উদ্ধৃতাংশ। এ্যাগনেস শোয়ার্জসচাইল্ড এই অংশটুকুর অনুবাদ করেছেন। মার্ক্সের কাজের বর্তমান ইংরেজি সংস্করণের বর্তমান সম্পদাকগণ আমাদের এই অংশের টীকাভাষ্যগুলোর যোগান দিয়েছেন। রুৎলেজ সম্প্রতি ‘দ্য এ্যাকুমুলেশন অফ ক্যাপিটাল’-এর পূর্ণ অংশ প্রকাশ করেছে (লন্ডন এবং নিউইয়র্ক, ২০০৩)। 
 

বর্দ্ধিত পুনরুৎপাদনের ভেতরে বিদ্যমান অসঙ্গতি : প্রথম অধ্যায়ে আমরা নিশ্চিত করেছি যে মার্ক্সের সঞ্চয়ের বৃত্ত এই প্রশ্নটির কোন মীমাংসা করে না যে পুনরুৎপাদন থেকে অন্তিমে কে লাভবান হতে যাচ্ছে। এই বৃত্তটি যেভাবে দ্বিতীয় খন্ডে (Ôপুঁজি’-র দ্বিতীয় খন্ড)  প্রকাশিত হয়েছে তা’ যদি আমরা যদি আক্ষরিক অর্থে নেই, তবে মনে হয় যে পুঁজিবাদী উৎপাদন তার যাবতীয় উদ্বৃত্ত মূল্যকে ব্যবহারে সমর্থ হবে এবং পুঁজিবাদী উৎপাদন নিরঙ্কুশ ভাবে তার মূলধনীকৃত উদ্বৃত্ত মূল্যকে তার নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারে সমর্থ হবে। এই মনোভঙ্গিটি মার্ক্সের বৃত্তের বিশ্লেষণ দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে যেখানে তিনি (টাকার প্রসঙ্গে) গোটা বৃত্তের মাঝে টাকার সঞ্চালনকে হ্রাস করতে চেয়েছেন। মোদ্দা কথায় বললে, পুঁজিপতি ও শ্রমিকদের কার্যকরী দাবিদাওয়ার মুখে একাজ করতে গিয়ে মার্ক্স নিজেই যেন ‘টাকার উৎপাদক’ হিসেবে নিজেকে পরিচিত করছেন, পরিচিত করছেন সব জটিলতার সমাধানদাতা হিসেবে। এছাড়াও,  ‘পুঁজি’-র প্রথম খন্ডে রয়েছে সেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তবক যা অবশ্যই একই অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হবে।

সবার আগে বাৎসরিক উৎপাদনকে সেই সব লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে পূরণ করতে হবে (ব্যবহার-মূল্য) যা থেকে পুঁজির বস্তÍগত উপাদানগুলো আসে এবং যা বছরের বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হয়- একেই প্রতিস্থাপিত করা প্রয়োজন। এসবকিছু বিয়োগ করলে থেকে যায় শুধুই মূল বা উদ্বৃত্ত-উৎপাদন, যার ভেতর লুক্কায়িত রয়েছে উদ্বৃত্ত-মূল্য। আর এই উদ্বৃত্ত-মূল্য কি দিয়ে গঠিত? শুধুমাত্র পুঁজিপতি শ্রেণির চাহিদা ও বাসনাকে সুখী করতে যে যে বস্তÍর প্রয়োজন হয় এবং যে যে বস্তÍ ফলাফল হিসেবেই পুঁজিপতিদের খরচ তহবিলে যুক্ত হয়? এটাই যদি ঘটনা হয়ে থাকে, তবে উদ্বৃত্ত-মূল্যের পেয়ালা তার তলানি অব্দি নি:শেষিত হবে এবং শুধুই সরল পুনরুৎপাদন ছাড়া আর কিছুই ঘটবে না।

সঞ্চয়ের জন্য উদ্বৃত্ত-উৎপাদনের একটি অংশ পুঁজিতে রূপান্তরিত করা প্রয়োজন। তবে, নেহাতই রূপকথার মত কিছু একটা না ঘটে গেলে, শ্রম-প্রক্রিয়ায় (অর্থাৎ, উৎপাদন-পদ্ধতি) ব্যবহার করা যায় এমন দ্রব্যাদি এবং শ্রমিকের টিঁকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আরো কিছু দ্রব্যাদি (অর্থাৎ টিঁকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা) ব্যতীত আর কিছুই পুঁজিতে বদলাতে পারব না। ফলাফলস্বরূপ, বার্ষিক উদ্বৃত্ত-শ্রমের একটি অংশ অবশ্যই উৎপাদন এবং টিঁকে থাকার বাড়তি পন্থা হিসেবে ব্যবহৃত হবে, সর্বোপরি এবং সর্বাগ্রে অগ্রসর পুঁজিকে প্রতিস্থাপিত করতে এসব বস্তর পরিমাণগত প্রচুরতা প্রয়োজন। এক কথায় বললে, উদ্বৃত্ত-মূল্য শুধুমাত্র পুঁজিতে বদলানো সম্ভব কেননা উদ্বৃত্ত-পণ্য, যার মূল্যই এটা হয়ে থাক, ইতোমধ্যেই নতুন পুঁজির বস্তÍগত উপাদান ধারণ করে আছে।  

সঞ্চয়ের শর্তসমূহ নিচে উল্লিখিত হল: ১) পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করা যায় এমন উদ্বৃত্ত-মূল্য প্রথমে পুঁজির স্বাভাবিক আঙ্গিকে আসে (উৎপাদনের বাড়তি পন্থা ও শ্রমিকদের জন্য টিঁকে থাকার বাড়তি পন্থা হিসেবে)। ২) পুঁজিবাদী পণ্যের মাধ্যমেই পুঁজিবাদী উৎপাদনের সম্প্রসারণ নিরঙ্কুশ ভাবে অর্জিত হয়ে থাকে, অর্থাৎ এর নিজস্ব উৎপাদন ও টিঁকে থাকার পন্থার মাধ্যমে। ৩) এই সম্প্রসারণের সীমারেখা প্রতিবারই উদ্বৃত্ত মূল্যের পরিমাণের মাধ্যমে অগ্রিম নির্দ্ধারিত হয়ে থাকে যা যে কোন প্রদত্ত ঘটনার ক্ষেত্রে মূলধনীকৃত হয়ে থাকবে; সম্প্রসারণের এই সীমারেখাগুলো বাড়ানো যাবে না, যেহেতু তারা উৎপাদন ও টিঁকে থাকা বা অস্তিত্বের পরিমাণের উপর নির্ভর করে যা কিনা উদ্বৃত্ত পণ্যের ঘাটতি পুষিয়ে দেয়; তাদের পরিমাণ হ্রাস করা যায় না, যেহেতু উদ্বৃত্ত মূল্যের একটি অংশ এরপর আর তার আদি প্রাকৃতিক আকারে বা আঙ্গিকে আর কাজে লাগানো যায় না। যে কোন অভিমুখেই বিচ্যুতি (উর্দ্ধ ও অধ:গামী) একটি নির্দিষ্ট সময়কালীন নানা ওঠা-পড়া ও সঙ্কটের জন্ম দিতে পারে- এই প্রেক্ষিতে, যাহোক, এই বিষয়গুলো উপেক্ষা করা যেতে পারে, যেহেতু সাধারণত: উদ্বৃত্ত পণ্য যা কিনা মূলধনীকৃত হতে হবে, তাকে আবশ্যিকভাবেই প্রকৃত সঞ্চয়ের সমান হতে হবে। ৪) যেহেতু পুঁজিবাদী উৎপাদন তার সামগ্রিক উদ্বৃত্ত পণ্য কিনে নেয়, সেহেতু পুঁজি সঞ্চয়ের কোন সীমানা থাকে না।

কার্ল মার্ক্সের এই পরিবর্দ্ধিত বৃত্ত উপরোক্ত শর্তাদি মেনে চলে। এখানে সঞ্চয় নিজেই তার গতিপথ অনুসারে চলে, তবে একথা কোথাও আভাসে বা ইশারাতেও বলা হয়নি যে এর দ্বারা উপকারটি ঠিক কার হবে বা কে হবে সত্যিকারের উপকৃত, কারা নতুন ক্রেতা যাদের জন্য উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। মার্ক্সের এই বৃত্ত, ধরা যাক, নি¤েœাক্ত ঘটনাবলীর পূর্বানুমান করে নেয়: লৌহ শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটাতে কয়লা শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটানো হয় যাতে ভোগ্যপণ্যের সম্প্রসারণ ঘটাতে মেশিন শিল্পের সম্প্রসারণ সম্ভবপর হয়। এই শেষ শিল্পটি, ঘুরে দেখলে, সম্প্রসারিত হচ্ছে মূলত: তার নিজের শ্রমিক এবং কয়লা, লৌহ ও মেশিন অপারেটরদের বেড়ে চলা সৈন্যবাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনেই। এবং এভাবেই চলছে অনন্ত, অবিরত। বৃত্তাকারে আমরা দৌড়ে চলেছি, সেই তুগান-বারানোভস্কির তত্ত্বের সাথে সঙ্গতি রেখেই।  বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করলে, মার্ক্সের বৃত্ত এমন একটি ব্যখ্যার অনুমোদন আসলে করেনা যেহেতু তিনি নিজেই স্পষ্টভাবেই সময়কে উল্লেখ করেছেন এবং আবার একইসাথে থোক পুঁজির সঞ্চয় প্রক্রিয়াকে উপস্থাপনাও তাঁর লক্ষ্য। সেই উপস্থাপনা তিনি করতে চান এমন এক সমাজে যে সমাজ কিনা সম্পূর্ণত: পুঁজিপতি ও শ্রমিকদের দ্বারা গঠিত। ‘পুঁজি’-র প্রতিটি খন্ডে এই মর্মে রচিত স্তবক খুঁজে পাওয়া যাবে।

‘খন্ড ১-এ, ‘উদ্বৃত্ত-মূল্যের ‘পুঁজি’-তে রূপান্তর বিষয়ক অধ্যায়ে তিনি (মার্ক্স) বলেন: আমাদের অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যকে অখন্ডভাবে পরীক্ষা করতে হলে, আশপাশের সব বিঘœ ঘটানো পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে, আমাদের অবশ্যই গোটা বিশ্বকে একটি জাতি হিসেবে দেখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আচরণ করতে হবে, আমাদের এটা ধরে নিতে হবে যে পৃথিবীর সর্বত্র পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং শিল্পের প্রতিটা শাখাকেই পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা দখল করেছে। 

দ্বিতীয় অধ্যায়ে, উপরোক্ত অনুমান বারবার ফিরে আসে; এভাবেই ‘উদ্বৃত্ত-মূল্যের সঞ্চালন’ শীর্ষক অধ্যায় ১৭-এ বর্ণিত হয়েছে: ‘এখন, বিচ্ছেদের মাত্র দুটো বিন্দু রয়েছে: পুঁজিপতি এবং শ্রমিক। তৃতীয় শ্রেণির সকল ব্যক্তির এই দুই শ্রেণি (পুঁজিপতি এবং শ্রমিক)-র মানুষদের কাছ থেকে তাদের সেবার জন্য অর্থ নিতে হবে, অথবা যে পরিসরে সমপরিমাণ সেবা ব্যতিরেকেই তৃতীয় শ্রেণির সদস্যরা টাকা পায়, সেখানে তারা ভাড়া, সুদ প্রভৃতি নানা আঙ্গিকে উদ্বৃত্ত-মূল্যের যৌথ মালিক বটে...এভাবেই পুঁজিপতি শ্রেণি অর্থের সঞ্চালনের ক্ষেত্রে ঘটিত ছেদের মূল বিন্দু হয়ে দাঁড়ায়।’ 

আবার ‘সঞ্চয়ের অনুমানের আওতায় অর্থের সঞ্চালন বিষয়ে বিশেষ ভাবনা’ শীর্ষক সেই একই অধ্যায়ে বলা হচ্ছে: Ôতবে সমস্যা তৈরি হয় যখন আমরা পুঁজিপতি শ্রেণির পক্ষে, আংশিক নয় বরং সামগ্রিক ভাবে অর্থ-পুঁজির একটি স্বাভাবিক ও সাধারণ সঞ্চয়কে ধরে নিই বা অনুমান করে নিই। এই শ্রেণি ব্যতীত, আমাদের ধারণা অনুসারে- পুঁজিবাদী উৎপাদনের সাধারণ এবং বিশেষ আধিপত্যের শিকার হয় শুধুমাত্র শ্রমিক শ্রেণি- আর কেউ নয়।  অধ্যায় ২০-এ আবার বলা হচ্ছে: ‘...এক্ষেত্রে মাত্র দুটো শ্রেণি রয়েছে, শ্রম-শক্তি ত্যাগ করা শ্রমিক শ্রেণি এবং উৎপাদনের সামাজিক পন্থা ও অর্থের অধিপতি পুঁজিপতি শ্রেণি।’

(চলবে)