ঢাকা, শনিবার ০৪, মে ২০২৪ ১৬:১৯:৩৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

৪০ বছর ধরে জনশূন্য বগুড়ার পিচুলগাড়ি গ্রাম!

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৫:৫৩ পিএম, ১৫ মে ২০২২ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

আশির দশকে ডাকাতের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছিলেন বাসিন্দারা। সেই থেকে চার দশক ধরে জনশূন্য পিচুলগাড়ি। ভূতুড়ে গ্রাম নামে পরিচিত বগুড়া জেলার পিচুলগাড়ি। প্রায় নয় একর আয়তনের গ্রামটির অবস্থান শাহজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নে। কাগজে-কলমে টিকে থাকলেও এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে সেই গ্রাম।

জনমানবহীন বিচিত্র গ্রাম পিচুলগাড়ি। ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগে ২০ পরিবারের প্রায় একশ’ মানুষের বাস ছিল এই গ্রামে। ১৯৮১ সালে ডাকাতদল গ্রামের সবচেয়ে ধনাঢ্য গৃহস্থ মফিজ উদ্দিন মন্ডল-কে খুন করে। এরপর থেকেই গ্রামের বাসিন্দারা তাদের সহায়সম্বল রেখে অন্য গ্রামের চলে যান। জঙ্গলে আবৃত এবং ভগ্নদশা বসতভিটাগুলো দেখে গ্রামটিকে বেশ ভূতুরে লাগে।

পাশের গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, এই গ্রামে ডাকাত পড়েছিল, গ্রামের হাজি সাহেবকে মেরে ফেলে তারা।

দীর্ঘদিন মানুষের বসবাস না থাকায় নানা অলৌকিক গল্পকথা ছড়িয়েছে গ্রামটির গাছপালা ঘিরে। বহুদিন থেকে অব্যবহৃত গ্রামটি সম্পর্কে গ্রামীণ জনজীবনে নানারূপ অলৌকিক কাহিনী প্রচলিত হয়ে আসছে। তাদের অনেকেই মনে করেন গ্রামের কোনো জিনিস অন্য কোনো গ্রামে নিয়ে যাওয়া হলে বা ব্যবহার করলে ব্যক্তিবিশেষ এবং পরিবারের ক্ষতি হয়। তাই গ্রাম থেকে কোনো প্রকার জিনিস অন্য গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় না। এমনকি গ্রামের গাছগুলোতে যে ফল-ফলাদির ধরে থাকে সেগুলোও কেউ খায় না।

স্থানীয়রা জানান, এই গ্রামে ভয় আছে। গাছের ডালপালা নিতে গেলে মাজা ভেঙে যায়। পাতা নিলে সমস্যা হয়।

প্রায় দুই কিলোমিটার মেঠো আর কাঁদাপানির পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় এই প্রত্যন্ত গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে বসবাস না করলেও শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করার জন্য গ্রামের প্রাচীন মসজিদটি ব্যবহার করেন। এছাড়া গ্রামের বাসিন্দারা তাদের গোরস্থান হিসেবেও গ্রামের একটি নির্দিষ্ট অংশকে ব্যবহার করে আসছে।

গ্রামবাসীরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ফের স্থায়ী বসতি গড়ে তোলা যাচ্ছে না।

তারা জানান, যদি রাস্তায় হয় তবে বসবাসের উপযোগী হবে এলাকাটি।

এদিকে সড়ক নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ।

গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু বলেন, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর শুষ্ক মৌসুমে সুন্দর একটা রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে।

পিচুলগাড়ি ঠিক আগের মতোই মেতে থাকবে জনচাঞ্চল্যে। মানুষের কোলাহলে মুখরিত হবে এখানকার আকাশ-বাতাস, এমন প্রত্যাশা সবারই। বর্তমান প্রজন্মের বাসিন্দারা মনে করেন, এখন যেহেতু ডাকাতের আর কোন ভয় নেই তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করলে সহজেই তারা গ্রামে প্রবেশ করতে পারবে।