বইমুখী করতে তরুণ-তরুণীদের চা দিয়ে আপ্যায়ন
বাসস
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৬:২৫ পিএম, ২ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার
ছবি: বাসস
ছোট্ট একটা বইয়ের দোকান। সামনে কার্পেট বিছিয়ে কয়েকটা চেয়ার-টেবিল রাখা। তাতে বসে বই পড়ছেন কয়েকজন তরুণ-তরুণী। তাদের সবার হাতে চায়ের কাপ। কেউ-কেউ বই পড়ছেন আর প্রয়োজনীয় লাইনগুলো টুকে রাখছেন নোটবুকে।
দোকানের নাম লিপিকা লাইব্রেরি। কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার পাশে নুরজাহার ট্রেড সেন্টারের নিচতলায় এর অবস্থান। দোকানটির মূল গেইটে নোটিশটিই এই দোকানের মূল আকর্ষণ।
কারণ ওই নোটিশে লেখা, ‘আসুন, বসুন, চা খেতে খেতে বই পড়ুন। বসা ফ্রি, বই পড়া ফ্রি, চা খাওয়াও ফ্রি।’ বইপ্রেমীদের জন্য চা একজন তৈরি করছেন, আর চা পরিবেশন করছেন মো. রিফাত। তিনি জানালেন, আদা, তেজপাতা আর এলাচ দিয়ে তিনি চা বানান। বই হাতে নিয়ে কেউ বসলে একটু পর পরই চায়ের কাপ এগিয়ে দেন।
লিপিকা লাইব্রেরিতে আসা কয়েকজন বাসসকে জানান, দোকানদারের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তাছাড়া দোকানটিও ব্যতিক্রম। এখানে বই পড়ার পাশাপাশি ফ্রি চা খাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
কুমিল্লা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার লিপি বলেন, কলেজ ছুটির আগে পরে আমাদের কোচিং থাকে। মাঝের এক-দুই ঘন্টা সময় বসার কোনো জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। সে সময়টাতে এখানে আসি। এখানে বসে ক্লাসের বা গল্পের যে কোনো বই পড়া যায়।
লিপিকা লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকেই গ্রেজুয়েশান করেছি। ছাত্র থাকাকালীন সময়ে দেখেছি, শিক্ষার্থীরা ক্লাসের গ্যাপে কোথাও বসার জায়গা নেই। অনেকে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে সময় কাটায়। এছাড়া তরুণ প্রজন্ম মোবাইল ফোনে আসক্ত। তাদের বইমুখী করতে আমাদের এ উদ্যোগ।
তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যে কোন সময় পাঠক বই পড়তে পারবেন। কিনতে হবে না। কেউ চাইলে বইয়ের বিশেষ অংশ ছবি তুলেও নিতে পারবেন। পাঠকের জন্য বাংলা ও ইংরেজি অভিধান রয়েছে। আমাদের কাছে ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা, ধর্ম, রাজনীতি, গল্প, উপন্যাসসহ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ভিত্তিক বইও রয়েছে।
তরুণ শিক্ষাবিদ নাজমুল আহসান বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। কুমিল্লায় সৃজনশীল কোনো বইয়ের দোকান নেই। যেখানে বসে বই পড়ে, দেখেশুনে বই কিনতে পারেন। কুমিল্লায় এই আইডিয়াটা নতুন।
