পেয়ারার ভাসমান হাট দেখতে পর্যটকদের ভিড়
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:১৪ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২২ শনিবার
ছবি: সংগৃহীত
‘ঝালকাঠির পেয়ারা’ স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। মজাদার এই পেয়ারার সুখ্যাতি রয়েছে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও। পদ্মা সেতু হওয়ায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সারাদেশে পৌঁছে যাচ্ছে ঝালকাঠির পেয়ারা। ফলে টাটকা পেয়ারা খেতে পারছে সারাদেশের মানুষ। এই পেয়ারাকে ঘিরে বাংলাদেশে ফ্লোটিং মার্কেট (ভাসমান হাট) ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ভীমরুলি গ্রামে চার খালের মোহনায় গড়ে উঠেছে বৃহত্তর পরিসরে।
এখন পেয়ারার ভরা মৌসুম। বাগান থেকে কচকচে কাঁচা ও পাকা পেয়ারা বাজারজাত করার কাজে ব্যস্ত চাষি। সদর কীর্তিপাশা, শতাদশকাঠি ও ভীমরুলিসহ ১০টি গ্রামের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে দেশের তথা এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম এই ঝালকাঠির পেয়ারা বাগান।
একসময় ফেরিতে আটকে থেকে পেয়ারা পচে যেত। কিন্তু এখন আর সেই শঙ্কা নেই। পদ্মা সেতু উদ্বোনের পর পাল্টে গেছে সেই চিত্র।
মৌসুমের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ভিড় করতে শুরু করে এই অঞ্চলে। প্রতিদিন ছোট ছোট ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে ঝালকাঠির পেয়ারা। নদীপথেও পেয়ারা চলে যাচ্ছে বিভিন্ন মোকামে। মৌসুমের শুরুতেই ঝালকাঠির ভাসমান পেয়ারা বাজারের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে অসংখ্য পর্যটক ভিড় করতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতুর কারণে সহজ হয়েছে পেয়ারা বাজারের ভ্রমণ।
প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসছে পেয়ারা বাগান ও পেয়ারার ভাসমান বাজার দেখতে।
কৃষকরা জানান, সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। তাই বাধ্য হয়ে পাইকারদের কাছে পেয়ারা বিক্রি করছি। বড় বড় শহরে এ পেয়ারার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা হলেও এখানে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ পেয়ারা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
পেয়ারা চাষি ভবেন্দনাথ হালদার জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রাণের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত পেয়ারা ও সবজি দ্রুত ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। সকালে বাগান থেকে তোলা টাটকা পেয়ারা বিকেলে মধ্যে ঢাকার মানুষ পেয়ে যাচ্ছে। তাই এ বছর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এ মৌসুমে এ অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে। পদ্মা সেতু হওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিদের ভাগ্য খুলছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতার যেন শেষ নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ বছর কৃষকদের বিভিন্ন রকমের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ঝালকাঠিতে এ বছর ৬২৯ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়েছে। মৌসুমজুড়ে মোট ফলন হবে ৬ হাজার মেট্রিক টন; যার বাজারমূল্য দাঁড়াতে পারে ১০ কোটি টাকায়। গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে এ বছর পেয়ারা চাষে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।