ঢাকা, সোমবার ১৫, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:১৫:২৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

হিজাব পরায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে মৌলবাদী উপাধি দিয়ে হেনস্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৪৩ এএম, ২৩ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মৌখিক পরীক্ষায় হিজাব পরে যাওয়ায় ২০১৯-২০ সেশনের এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘মৌলবাদী জঙ্গি’ উপাধি এবং হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

রোববার (২১ আগস্ট) বিভাগের বিজনেস স্ট্যাটিকস কোর্সের মৌখিক পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাধিক গ্রুপে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের বিজনেস স্ট্যাটিকস কোর্সের মৌখিক পরীক্ষায় হিজাব পরে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে কোর্স শিক্ষক মো: জসিম উদ্দিন ধমক দিয়ে বলেন, ‘আপনি কি ভাইবা দেওয়ার ম্যানার শিখেন নাই? ভাইবা দেওয়ার ম্যানার হলো হিজাব খুলে আসতে হবে। অন্য শিক্ষক আর আমি সেইম না। আপনি ভাইভা দিতে এসেছেন জঙ্গি মৌলবাদীদের মতো।’ 

পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পর্দার কথা বললে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে রুম থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী কিছু বলতে অস্বীকার করেন। তবে সহপাঠীরা জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বিভাগে ডেকে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক মো: জসিম উদ্দিন। 

এ ব্যাপারে মো: জসিম উদ্দিন বলেন, “আমি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ। আমি এসব কাজ কেনো করতে যাবো, আমি শুধু তাকে ডেকে কর্পোরেট ম্যানারের কিছুদিক নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম।”

সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলতে হুমকি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই শিক্ষার্থী এসেছিলেন। তবে এ ধরণের কোন কথা হয়নি। তাকে শুধু বলেছি বিষয়টি বুঝাতে পেরেছি কিনা। সে বলেছে আমি বুঝতে পেরেছি।”

এ বিষয়ে ওই বিভাগের প্রধান মো: এমদাদুল হক জানান, আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে এ বিষয়টি দেখবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, ব্যাপারটি আমি শুনেছি, এটা নিয়ে তদন্ত করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, “ধর্মীয় স্বাধীনতা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন বলেন, “বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করবে এবং ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এর আগেও গত ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় গৃহীত কর্মসূচি পালনের সময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করে অনলাইনে ক্লাস নেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।