ঢাকা, মঙ্গলবার ১৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৭:০৭ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ক্ষেতে কাজ করা মারুফা এখন বিশ্বমঞ্চে 

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

কথায় আছে, আঁধার কেটে গেলে আলো আসবেই। দুঃখের পরই আসে সুখ। কষ্ট করলেই মেলে কেষ্ট। অনুপ্রেরণামূলক প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য সব যেন মারুফা আক্তারের জীবনের আয়না। 

আজন্ম ক্রিকেটার হতে চাওয়া মারুফা ছোট্ট জীবনের প্রতিটি স্তরে এতটা ধাক্কা খেয়েছেন যে নিজের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে বাবার সঙ্গে হালচাষে নেমেছিলেন। পরিবারের আর্থিক দুর্দশার কারণে বাবার ক্ষেতে কাজ করতে হয়েছে মারুফাকে। গণমাধ্যমে মারুফা খবরের শিরোনাম হলে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নানাভাবে তার পরিবারকে সাহায্য করে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। 

আর তাতেই মারুফার মাঠে ফেরার দুয়ার খুলে যায়। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে সেই তিনিই এখন বিশ্বমঞ্চে। কিছুদিন পরই বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলবে। ডানহাতি পেসার মারুফা মেয়েদের সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও জাতীয় ক্রিকেট লিগে দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়েছেন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন।   

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কৃষক বাবার সন্তান মারুফা দলে ডাক পাওয়ার পর আনন্দে আত্মহারা। চিরকালীন অভাব অনটঘনের ঘরে আলো ফুটিয়েছেন মারুফা। ক্রিকেট তার জীবনে এনেছে অনাবিল আনন্দ। 
তাই তো জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার দিনে ক্রিকেটের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিশে রইলো, ‘আসলে ক্রিকেট না খেললে কিছুই পেতাম না জীবনে। এই ক্রিকেটটাই এখন আমাদের পরিবারে সুখ এনে দিয়েছে। আমাকে আরও অনেক কষ্ট করতে হবে। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। চেষ্টা করতে হবে যেন দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে পারি।’ 

ঢাকা লিগে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন মারুফা। বিকেএসপির হয়ে ১১ ম্যাচে ওভারপ্রতি ৩.২১ রান দিয়ে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন টুর্নামেন্টের ‘বেস্ট প্রমিজিং প্লেয়ার’- এর পুরস্কার। এরপর জাতীয় দলের ক‌্যাম্পেও তার ডাক পড়ে। সেখান থেকে জাতীয় ক্রিকেট লিগেও আলো ছড়ান। সিলেটের হয়ে ৭ ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট পান। বোলিংয়ে ধার থাকায় তাকে জাতীয় দলের ভবিষ‌্যৎ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

মারুফার সঙ্গে যখন মুঠোফোনে কথা হচ্ছিল তখন ঘরে আনন্দের বন‌্যা। পরিবারের সবার সঙ্গে প্রতিবেশীরাও তাদের মেয়েকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন। মারুফা অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে তাই বললেন, ‘সবার দোয়ায় দেখবেন আমি অনেক উপরে উঠবো।’