শুক্রবারের পাইকারী বাজারের হালচাল
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০২:৪৫ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:৩৯ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৮ সোমবার
বৃহস্পতিবার থেকেই সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি দিনের মত কাল রাত থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সরগরম ছিলো রাজধানীর পাইকারী বাজার। সাধারণত পাইকারী বাজারগুলোতে গভীর রাত থেকে ভোরের মধ্যেই মাল আনলোড করে ট্রাক, ভ্যানগুলো চলে যায়। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়া খারাপ থাকায় আজ সকাল ৯টার দিকেও মালামাল ভর্তি অনেক গাড়ি পাইকারী বাজারগুলোতে ঢুকতে দেখা গেছে।
বৃষ্টি হওয়ায় উত্তর বঙ্গ থেকে গাড়ি দেরীতে বাজারে আসছে বলে জানান গাড়ির চালকেরা। তবে গতবারের মত এবারের বাজারে খুচরা ক্রেতার আনাগোনা কমই দেখা গেল। পাইকারী সব্জিবাজার গত সপ্তাহে হরেক রকম সব্জির বাহার দেখা গেলেও আজকে সব্জির আমদানী কম। তাই দাম একটু বেশি হাকছে দোকানীরা।
পাইকারী বাজারে ছোট আলু, বড় আলু বিক্রি হচ্ছে পাল্লা প্রতি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে আবার সেই আলু ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যে পেঁয়াজের ঝাঝের হাসফাসে কিছুদিন পুর্বেও মানুষ ছিল দিশেহারা সে পেঁয়াজের মুল্য হাতের নাগালে থাকলেও দাম আবার বেড়েছে। ৫ কেজির পাইকারী মুল্য ১৭০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত। ইন্ডিয়ান পেয়াঁজের মুল্য ১৪০ থেকে ১৭০ এর মধ্যে আর দেশী পেয়াঁজ ১৯০০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। যদিও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারে হরেক রকমের লেবুর গন্ধ। সে কারনে আবার দামেরও ভেদাভেদ রয়েছে। লেবু পাইকারী বাজারে শ মানে নুন্যতম ১০০ পিস হিসেবে বিক্রি হয়। শ প্রতি লেবু ভেদে ৫০০ -৬০০ -৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত।খুচরা বাজারে লেবু ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা হালি। পেপে পাইকারী বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাললা প্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা করে যা খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ২৫ টাকা করে।
লাউ পাইকারী বাজারে প্রতি পিস ৪০ টাকা করে নিলেও বেশি পিস নিলে দাম ৩০ থেকে ৩২ টাকার মধ্যেই পড়ে। তবে খুচরা বাজারে আকার অনুসারে একই লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ধুন্দল পাইকারী বাজারে পাললা প্রতি ১৮০ টাকা দরে যা খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শিম পাইকারী বাজারে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা পাললা বিক্রি হলেও ভাল শিম খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বেগুন পাইকারী বাজারে রকম ভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে লম্বা বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঢেড়স পাইকারি বাজারে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। করললা ১৪০ টাকা পাইকারী বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রি ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত। টমেটোর দাম এখন অনেকটাই কমে এসেছে পাললা প্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা ,খুচরা বাজারে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আদা ভেদে কেজি প্রতি পাইকারী মুল্য ৮০ থেকে ৯০ টাকা যা খুচরা বাজারে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা। রসুন ৫০ থেকে ১০০ টাকা কেজি পাইকারী দামে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছেন ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এ আপাতত কাচাবাজারের সম্যক ধারনা পাওয়া গেল।
মাছের দাম আজ অস্থিতিশীল আছে। পংগাস মাছ পাইকারী বাজারে কেজি প্রতি ১০০ টাকা,খুচরা বাজারে দাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। শিং মাছ কেজি প্রতি ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারী বাজারে ,খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। মাছের রাজা ইলিশের মাথা গরম আজকেও। পাইকারী বাজারে সাইজ অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৬০০ থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৯০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা কেজি।
তেলাপিয়া মাছ পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১২৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত হলেও খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ছোট বড় বোয়াল পাইকারী বাজারে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৫৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। সরপুটি পাইকারী বাজারে কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হলেও পাইকারী বাজারে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি।
ছোট মাছের মধ্যে কাচকি মাছ পাইকারী ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি, খুচরা বাজারে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পুটি মাছ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পাইকারী মুল্য হলেও খুচরা বাজারে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। বাহারি রকমের পাচমিশালি মাছের চাহিদা বাজারে বেশি থাকে। এগুলোর পাইকারী মূল্য ৩০০ থেকে শুরু করে ৪০০ টাকার মধ্যে থাকলেও খুচরা বাজারে তা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কোজ।
গরুর মাংস কেজি ৪৮০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা,খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, কবুতরের জোড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা,দেশি মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা,পাকিস্তানী মুরগি ২৪০ থেকে ২৮০ দরে খুচরা বিক্রয় হচ্ছে। ডিম ১০০ প্রতি খুচরা মুল্য ৬০০ থেকে ৬১০ টাকা যা খুচরা বাজারে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা হালি।
চালের বাজার গেল সপ্তাহের মতই স্থিতিশীল আছে। নাজিরশাইল চাল ৬৫ থেকে ৬৭ ,মিনিকেট (মানভেদে) ৬২ থেকে ৬৬ টাকা,স্বর্না ও পারিজ ৪৪ থেকে ৪৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
