ঢাকা, মঙ্গলবার ১৪, মে ২০২৪ ১০:৩৮:২২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পর্যটকে ঠাসা সাজেক, মিলছে না থাকার জায়গা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫২ এএম, ৯ অক্টোবর ২০২২ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে মেঘের রাজ্য খ্যাত রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি। ধারণ ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ পর্যটক সাজেকে প্রবেশ করায় কটেজ-রিসোর্টে রুম সংকট দেখা দিয়েছে। রুম না পেয়ে স্থানীয় লোকজনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে ও মসজিদের বারান্দায় রাত কাটিয়েছেন অনেকে। 

সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৭ অক্টোবর) প্রায় ৫ হাজারের মতো পর্যটক সাজেকে এসেছেন। যদিও সাজেকের ১১২টি কটেজে পর্যটক থাকতে পারে চার হাজারের মতো। সাজেকে আসা পর্যটকদের অনেকেরই ছিল না আগাম বুকিং। এতে রুম না পাওয়ায় অনেক পর্যটক বিকেলেই ফেরত আসেন। যারা থেকে গিয়েছেন তাদের অনেকেই বিভিন্ন কটেজের বারান্দায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে রুম ভাড়া নিয়ে রাত পার করেছেন। 

সাজেক জিপ মালিক সমিতির লাইনম্যন ইয়াসিন আরাফাত বলেন, শুক্রবার (৭ অক্টোবর) প্রচুর পর্যটক সাজেকে এসেছিলেন। যাদের অনেকেরই আগাম রুম বুকিং ছিল না। রুম না পাওয়া পর্যটকদের নিয়ে প্রায় ২০টি গাড়ি খাগড়াছড়ি ফিরেছে। যারা রুম না পেয়েও থেকে গিয়েছেন এমন কিছু পর্যটক আশপাশের বাড়িগুলোতে রুম ভাড়া নিয়ে থেকেছেন।

এদিকে শনিবার (৮ অক্টোবর) পর্যটকবাহী ১৫০টি গাড়ি সাজেকে এসেছে। যেটা গতকাল ছিল প্রায় ২০০। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িতে আসা পর্যটকদের সংখ্যা মিলিয়ে চার হাজারের বেশি পর্যটক বর্তমানে সাজেকে আছেন। তবে গাড়িতে বা মসজিদের বারান্দায় রাত কাটানোর মতো পরিস্থিতি আজ নেই।

সাজেক শৈলকুঠির রিসোর্টের শেয়ার হোল্ডার তাহাবুদ্দিন তোহা বলেন, বুধবার থেকেই সাজেকে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক আসছেন। এই মুহূর্তে কোনো রিসোর্টেই রুম খালি নেই। আমাদের রিসোর্টও দুই মাস আগে থেকেই শতভাগ বুকিং হয়ে আছে রোববার (৯ অক্টোবর) পর্যন্ত।  

রুম না পেয়ে পর্যটকদের গাড়িতে রাত কাটানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, যখন খুব বেশি পর্যটকদের চাপ থাকে, তখন যারা আগাম বুকিং না দিয়ে সাজেক আসেন তাদের রুম পেতে বেগ পেতে হয়। তখন তাদের হয়তো স্থানীয়দের বাড়িতে বা গাড়িতে থাকতে হয়। তবে মসজিদের বারান্দায় রাত কাটানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। 

সাজেক হিল ভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, ৫ অক্টোবর থেকে সাজেকে ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি পর্যটক সমাগম হয়েছে। সবগুলো কটেজ মিলিয়ে সাজেকে আড়াই হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন না, কিন্তু এই কদিন পর্যটক সংখ্যা সব সময় তিন হাজারের ওপরে। বাড়তি পর্যটকদের এই চাপ সামাল দেওয়া কষ্টকর। তাই অগ্রিম বুকিং না করে সাজেক না আসার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে সাজেকে অতিরিক্ত পর্যটকের উপস্থিতি নিয়ে স্থানীয় অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। সাজেক মর্নিং স্টার রিসোর্টের মালিক মো. রাসেল লিখেছেন, ‘রুম খালি নাই, রুম খালি নাই’ বলতে বলতে আমি ক্লান্ত। 

স্থানীয় সাংবাদিক মো. আকতার হোসেন লিখেছেন, সাজেক এখন বস্তিতে রূপান্তর।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, আমরা রিসোর্টগুলোকে শক্ত নির্দেশনা দিয়েছি ধারণ ক্ষমতার বাইরে যাতে কোনো বুকিং না নেয়। কিন্তু অনেকেই বুকিং না দিয়েই সাজেক চলে আসছেন, তাই তারা থাকার জায়গা পাচ্ছেন না। সাজেকে ১০০-এর বেশি রিসোর্ট আছে। আমরা যদি গড়ে ২৫ জন করেও ধরি তাও ২৫০০-এর বেশি পর্যটক থাকতে পারে না। তাছাড়া সাজেকে পানিরও সমস্যা আছে। কিন্তু ধারণক্ষমতার বেশি পর্যটক চলে আসায় এই সমস্যার সৃষ্টি। সাজেকে প্রবেশের বিষয়টা যেহেতু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেখভাল করে, তাই আমরা উনাদের অবগত করেছি যাতে অগ্রিম বুকিং না থাকা পর্যটকদের সাজেক প্রবেশে নিরুৎসাহিত করে।