আজ বাজারে ক্রেতার আনাগোনা কম
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০১:১৩ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার
কয়েক দিন ধরেই আবহাওয়ার মতিগতির কোন ঠাহর পাওযা যাচ্ছেনা। সারাদিন প্রচন্ড গরম তো রাতে ঝড়ো হাওয়া, বাজারে কাদা পানিতে একাকার। তারপরেও থেমে নেই পাইকারী বাজার। সরজমিনে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে গতবারের চেয়ে আজ শনিবার বাজারে খুচরা ক্রেতার আনাগোনা অনেকটা কমই।
আজকে সরেজমিনে ভোর থেকেই পাইকারী ও খুচরা বাজার ঘুরে দরদামের পার্থ্যক্য দেখা গেছে। পাইকারী সব্জিবাজারে হরেক রকম সব্জির বাহার দেখা গেলেও সব্জির আমদানী কমই দেখা গেল। তবে তুলনামুলকভাবে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সব্জির দাম কম।
পাইকারী বাজারে ছোট আলু, বড় আলু পাললা প্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে পাল্ল প্রতি ৭০ টাকা থেকে ৮৫টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে আবার সেই আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহের মত এ সপ্তাহের শুরুতেও পেঁয়াজের দাম কমেছে।
একে তো নতুন পেঁয়াজের ফলন হয়েছে বেশি তারপর আবার ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের আমদানী তাই এ সপ্তাহে দাম আবার কমেছে। ৫ কেজির পাইকারী মুল্য ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। যদিও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারে আজও ছিল হরেক রকমের লেবুর সমাহার। তুলনামূলকভাবে পাইকারী বাজারে লেবুর দাম আবার কমেছে। ডজন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে লেবু ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা হালি।
পেপের দাম গত সপ্তাহ থেকে বেড়ে পাইকারী বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাললা প্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা করে যা খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৩০ টাকা করে। লাউ পাইকারী বাজারে প্রতি পিস ৩০ টাকা করে নিলেও বেশি পিস নিলে দাম ২৫থেকে ২৮ টাকার মধ্যেই পড়ে। তবে খুচরা বাজারে আকার অনুসারে একই লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ধুন্দল পাইকারী বাজারে পাললা প্রতি ১৬০ টাকা দরে যা খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শিমের সিজন শেষের পথে হওয়ার কারনে দাম অপরিবর্তিত আছে। পাইকারী বাজারে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা পাললা বিক্রি হলেও ভাল শিম খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারী বাজারে দুই ধরনের বেগুন পাওয়া যায়। একটি লম্বা,অন্যটি গোল বেগুন। লম্বা বেগুন দাম বেড়ে পাললা প্রতি ১৫০ টাকা,গোল বেগুন পাললা প্রতি ১৮০ টাকা। খুচরা বাজারে লম্বা বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভেন্ডি পাইকারী বাজারে পাললা প্রতি ১১০ টাকা, খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৪০ টাকা।
করললার দাম কমে ১০০ টাকা পাইকারী বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রি ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত। শশার দাম এখন অনেকটাই কমে এসেছে পাললা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, খুচরা বাজারে কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা। বাজারে নতুন সব্জির মধ্যে কাকরোল অন্যতম। তাই যারা এই মৌসুমে প্রথম কাকরোলের স্বাদ নিতে চান তাদের একটু বেশিই টাকা খরচ করতে হবে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কাকরোলের দাম কমেছে। পাইকারী মূল্য পাললা প্রতি ২১০ থেকে ২২০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাকরোল ৬০ টাকা করে।
ধুন্দল পাইকারী বাজারে পাললা প্রতি ১৭০ টাকা যা খুচরা বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। পটল পাইকারী বাজারে ১৭০ টাকা পাললা যা খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত। কাচা কলা পাইকারী বাজারে হালি প্রতি ১৬ টাকা,খুচরা বাজারে হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গাজর পাইকারী বাজারে ৭০ টাকা পাললা হলেও খুচরা বাজারে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মরিচ পাইকারী বাজারে ৮০ টাকা পাললা হলেও খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। চিচিংগা ১৫০ টাকা পাললা পাইকারী,খুচরা ৪০ থেকে ৪৫ পর্যন্ত।
আদা ভেদে কেজি প্রতি পাইকারী মুল্য ৬৫ থেকে ৭০ টাকা যা খুচরা বাজারে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা। রসুন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি পাইকারী দামে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে এসেছে সবুজ কাচা আম। এই আমের খুচরা ক্রেতার অভাব নেই। কাচা আম পাললা প্রতি ২৫০ থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত কেজি যা খুচরা বাজারে ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আপাতত কাচাবাজারের ধারনা পাওয়া গেল।
চলে যাই মাছের বাজারে। মাছের দাম বেড়েছে। তবে ইলিশের দাম কমেছে। পাংগাস মাছ পাইকারী বাজারে কেজি প্রতি ৯০ টাকা, খুচরা বাজারে দাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। শিং মাছ কেজি প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পাইকারী বাজারে, খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
পাইকারী বাজারে সাইজ অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৮০০ থেকে শুরু করে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ৯০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া মাছ পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত হলেও খুচরা বাজারে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ছোট বড় বোয়াল পাইকারী বাজারে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৫৫০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের আইর মাছ পাইকারি বাজারে ৬৫০ টাকা কেজি দাম উঠলেও সেই একই আইর খুচরা বাজারে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি।
সরপুটি পাইকারী বাজারে কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হলেও পাইকারী বাজারে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। ছোট মাছের মধ্যে কাচকি মাছ পাইকারী ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি,খুচরা বাজারে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
পুটি মাছ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা পাইকারী মুল্য হলেও খুচরা বাজারে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। বাহারি রকমের পাচমিশালি মাছের চাহিদা বাজারে বেশি থাকে। এগুলোর পাইকারী মুল্য ৩০০ থেকে শুরু করে ৪০০ টাকার মধ্যে থাকলেও খুচরা বাজারে তা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি।
কাতল মাছ সাইজ ভেদে পাইকারী বাজারে ২৫০ থেকে শুর করে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৩০০ থেকে শুরু করে ৪৫০ টাকা কেজিতে বি হচ্ছে। রুই মাছ পাইকারী ২০০ থেকে ২২০ টাকা,খুচরা বাজারে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি।
তরমুজ খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, আংগুর ২২০ টাকা কেজি,মালটা ১১০ থেকে ১২০ টাকা, কমলা ১৫০ টাকা কেজি ও পেয়ারা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস কেজি ৪৮০ থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা,খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, কবুতরের জোড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, পাকিস্তানী মুরগি ২৪০ থেকে ২৮০ দরে খুচরা বিক্রয় হচ্ছে। ডিম ১০০ প্রতি খুচরা মুল্য ৬২০ থেকে ৬৪০ টাকা যা খুচরা বাজারে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা হালি।
চালের বাজার গেল সপ্তাহের মতই স্থিতিশীল আছে। নাজিরশাইল চাল ৬৫ থেকে ৬৭, মিনিকেট (মানভেদে) ৬২ থেকে ৬৬ টাকা,স্বর্না ও পারিজ ৪৪ থেকে ৪৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্ষেত্র বিশেষে, এলাকা ভেদে বাজার মুল্যে তারতম্য থাকাটাই স্বাভাবিক। কারন অভিজাত এলাকায় জিনিসপত্রের মূল্য একটু বেশিই হাকায় খুচরা ব্যবসায়ীরা,আবার ঢাকার বাইরে দাম তুলনামুলক কমই থাকে।
