ঢাকা, শুক্রবার ১২, ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:১১:৫৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বছরজুড়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের আতঙ্ক নিত্যপণ্যের পাগলা ঘোড়া 

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২৪ এএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

২০২২ সালের নিত্যপণ্যের বাজার ছিল নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য আতঙ্কের। বছরজুড়েই বাড়বাড়ন্ত পণ্যের দাম। দাম বাড়ার পেছনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যত না প্রভাব ফেলেছে, তার চেয়ে বেশি ভুগিয়েছে ব্যবসায়ীদের অবৈধ সিন্ডিকেট। সরবরাহ বন্ধ রেখে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বাড়াতে সরকারকে রীতিমতো বাধ্য করেছিল ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝালাইয়ের কাজ করেন মোহাম্মদ শাজাহান। আয় দিয়ে ভালোই চলছিল তার। কিন্তু নিত্যপণ্যের পাগলা ঘোড়া দিশাহারা করে তুলে তাকে, এখন জীবন বাঁচানোই দায়।

শাজাহান বলেন, আগে দুই-চার টাকা আয় করা যেত। এখন দাম বাড়ার পরে আয় দূরের কথা, খাবার একবেলা জুটলে আরেক বেলায় জুটে না।

কড়াইল বাজারে পণ্য কিনতে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রান্নার কাজে নিয়োজিত মরিয়র বেগম। তবে দাম শুনে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছিল তাকে। মরিয়ম বেগম জানান, দাম বাড়ার কারণে তাকে খাবারের পরিমাণ কমাতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আগের মতো বাজার সদাই হয় না। এখন বাজারের কথা উঠলে ভয় হয়। ডাল-ভাত খেয়ে যখন যা জোটে তা খেয়ে কোনোভাবে দিন কাটে।

২০২২ এভাবেই নিম্ন ও মধ্যবিত্তকে কোণঠাসা করেছে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যার শুরু। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, রপ্তানি আদেশে বাধা এবং জাহাজের ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। পাল্লা দিয়ে বাড়ে দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও।

এক ব্যবসায়ী বলেন, গত মৌসুমে আমরা মিনিকেট বিক্রি করেছি ৫০ থেকে ৫২ টাকা। চলতি মৌসুমে মিনিকেট বিক্রি করছি ৭২ টাকা।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, দুই কেজির আটা ছিল ৬০ টাকা, যা এখন ১৪০ টাকা।

জ্বালানি সংকটে জুলাই-এপ্রিলে লোডশেডিং তীব্র হলে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০ টাকা বাড়ে। সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩২০ টাকায়। ৫০ টাকা বেড়ে ডিমের ডজন দাঁড়ায় দেড় শ।

সয়াবিন তেল ও চিনির দাম ইচ্ছেমতো বাড়ানোর জন্য ভোক্তাদের এক প্রকার জিম্মি করে ব্যবসায়ীরা। সরকার দাম বাড়ানোর ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখে পণ্যের সরবরাহ। অতি মুনাফার লোভে অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুদ করেন অনেক ব্যবসায়ী। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে বেরিয়ে আসে কারসাজি।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২২ সাল ভোক্তাদের সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের বলেন, জনগণের পকেট কাটার জন্য উৎসবে মেতে ওঠে তারা। বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করিয়ে তারা দাম বাড়িয়েছে।