ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮, মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৭:৫০ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

লিখবো অথচ প্রকৃতি চিনব না তা হয় না: ফারুক নওয়াজ

ফারুক নওয়াজ

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫০ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ বুধবার

শিশুসাহিত্যিক ফারুক নওয়াজের সাক্ষৎকার নিচ্ছেন কিশোর লেখা সম্পাদক আইরীন নিয়াজী মান্না।

শিশুসাহিত্যিক ফারুক নওয়াজের সাক্ষৎকার নিচ্ছেন কিশোর লেখা সম্পাদক আইরীন নিয়াজী মান্না।

ফারুক নওয়াজ; বাংলাদেশের শিশুসাহিত্য জগতে একজন সব্যসাচি লেখক। ছড়া, কিশোর কবিতা, গল্পসহ শিশুসাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তাঁর রয়েছে অবাধ বিচরণ। নিজের মেধা ও যোগ্যতায় শিশুসাহিত্যকে তিনি করে চলেছেন সমৃদ্ধ। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। এই গুণী লেখক সম্প্রতি নিজের সাহিত্যচর্চা এবং বাংলাদেশের শিশুসাহিত্য নিয়ে কথা বলেছেন উইমেননিউজ২৪.কম-এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ছোটদের প্রিয় পত্রিকা কিশোর লেখা‘র সঙ্গে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কিশোর লেখা সম্পাদক আইরীন নিয়াজী মান্না। 

কিশোর লেখা:  আপনার শৈশব কেটেছে কোথায়?

ফারুক নওয়াজ: শৈশব কৈশোরের সময়টা আমি মনে করি ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত। এ সময়ের দু’তৃতীয়াংশ কেটেছে আমার গ্রামে, বাকিটা শহরে।আমার প্রিয় শহর ওই একটাইÑ খুলনা। জন্ম ওখানেই। বাবার চাকরি জীবনও ওখানে কেটেছে। ফলে খুলনাই আমার কৈশোরের পীঠস্থান।

কিশোর লেখা:  কখন থেকে ছড়া-কবিতা লেখার শুরু এবং কার অনুপ্রেরণায়? প্রথম ছড়া ছাপা হওয়ার স্মৃতি কি মনে আছে?

ফারুক নওয়াজ: প্রথম শুরুটা মনে নেই, তবে ক্লাস টু’তে পড়ার সময় অংক খাতায় অগোচরে পদ্য লিখে ফেলেছিলাম। সেইটা ধরা পড়ে যায় বড় ভাইয়ের চোখে। তারপর এ-ব্যাপার কারো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি বলে, মনে যা এসেছে তাই লিখতে লিখতে এ পর্যন্ত পৌঁছেছি।

কিশোর লেখা: সাহিত্যের নানা শাখা থাকলেও শিশুসাহিত্যেই কেন নিজেকে স্থির করে নিলেন। আপনার ভাবনায় শিশুসাহিত্যের বিশেষ বৈশিষ্ট্য কী?

ফারুক নওয়াজ: লেখালেখির  শুরুটাই হয় কবিতা দিয়ে। তারপর সময়ের সাথে সাথে  লেখালেখির বিভিন্ন শাখায় লেখকের ভাবনা ঘুরে বেড়ায়। একসময়  ভালো লাগা একটা জায়গায় স্থির হয়। আমিও তেমনি ছোটদের-বড়দের গল্প কবিতা উপন্যাসের বিভিন্ন রঙিন শাখায় ঘুরে বেড়িয়ে শেষে এই শিশুসাহিত্যেই আনন্দ খুঁজে পেয়েছি। এটাই আমার  নিখাদ ভালোলাগা। তাই এখানেই আমি স্থির হয়েছি।

কিশোর লেখা: ছড়া ও কিশোর কবিতা ছাড়াও গল্পসহ শিশুসাহিত্যের নানা শাখায় আপনার অবাধ বিচরণ। আপনার ছড়া ও কিশোর কবিতায় পাঠক সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ। আপনার মোট ছড়া ও কিশোর কবিতার সংখ্যা কত? এবং সবমিলিয়ে বইসংখ্যা কত? 

ফারুক নওয়াজ: ছড়া-কিশোর কবতিার বই ২২টি, বাকিসব গদ্য। মোট প্রকাশিত বই তিনশতাধিক। 

কিশোর লেখা: বাংলা শিশুসাহিত্যের কোন কোন লেখকের লেখা পড়ে আপনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

ফারুক নওয়াজ: পাঠ্যবইয়ের সেই কবিতাগুলো আমাকে আজো অনুপ্রাণিত করে। সেই কাজলাদিদি, নদীর স্বপ্ন, আমাদের ছোটো নদী, সামান্য ক্ষতি, শিক্ষাগুরুর মর্যাদা, আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন, আমি হবো সকালবেলার পাখি, সংকল্প, নবির শিক্ষা করো না ভিক্ষাÑ আহা অপূর্ব সেই কবিতাগুলো । ওহো- সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে..., এমন কবিতা কি আর লেখা হয়েছে?

কিশোর লেখা: আপনার চাচা কাজী কাদের নওয়াজ বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কবি। তাঁর সম্পর্কে কিছু বলুন। আপনার লেখালেখিতে তাঁর অনুপ্রেরণা কতটা ছিলো?

ফারুক নওয়াজ: হুম, অবশ্যই। তাঁর সংস্পর্শেই আমি প্রকৃতিকে চিনেছি। পাখি-গাছ চিনেছি। বাতাসে কাশ-মিনজিরি আর ইপিলের দোলা দেখেছি। গুটগুটিয়ার আঁধারে সাঁঝের জুনিজ¦লা দেখে হারিয়েছি প্রকৃতির অপূর্ব জগতে। আর, কবিতা কাহাকে বলেÑ এই সংজ্ঞাটা ভালোভাবে রপ্ত করেছি। আমি তাঁর কাছে আমৃত্যু ঋণী।  

কিশোর লেখা: আপনার রচনায় নিসর্গ নিয়ে যে বর্ণনা পাওয়া যায় তা সমসাময়িক আর কারো লেখায় ততটা দেখা যায় না। এই বিষয়টা আয়ত্ব করার জন্য আপনি কী করেছেন। এধরনের রচনার জন্য অন্যদের কী করতে বলবেন?

ফারুক নওয়াজ: আমার শৈশব কেটেছে শহরে ও গ্রামে। আমার গ্রাম ছিলো অতুলনীয়। আমাদের বাড়ির দুপাশ জুড়ে ছিলো বিস্তীর্ণ অরণ্য। আমি চিলেকোঠায় বসে ঘুঘুর ডাক শুনতাম। তোমরা যেটাকে ঝাউ বলো সেটাকে আমি ঝাবুক বলি। আমার দেখা বড় চারটি ঝাবুক ছিলো আমাদের বাড়ির সামনে। রাতে সেখান থেকে শনশন ঝিমঝিম সুরধ্বনি তৈরি হতো। এছাড়াও ছিলো শিরিষ গাছ। শিরিষের ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যাওয়ার পর বাতাসে ঝনঝন করে শব্দ হতো। ওই শব্দ বিমোহিত করতো আমাকে। আমাদের গ্রামের নদীটি আমার বাড়ির সামনে, খুব কাছে। নদী না, নদ। নাম কুমার। পদ্মার ছোট্ট শাখানদ। টলমল করে বয়ে যাওয়া, সেই কাকচক্ষু জলধির টুবুটুবু ঢেউয়ে রোদের ঝিলমিল চোখ ধাঁধানো ঝিলিক, আর আকাশে উড়ে যাওয়া সাদা সাদা গাঙচিল আমার ভেতরে অসাধারণ এক অনুভুতির জন্ম দিতো। আমাকে বিমুগ্ধ করতো। আমি দেখেছি আমাদের ছাদে জোছনার খেলা। এইসব উপাদান আমার ভেতরে সেই শুরু থেকেই গেঁথে গিয়েছে। যে কারণে আমার লেখায় প্রকৃতি উঠে আসে সবচেয়ে বেশি। লিখব অথচ প্রকৃতি চিনব নাÑ এটা হতে পারে না। আমাদের দেশটাই তো প্রকৃতির সাজানো স্বর্গ। প্রকৃতি আবেগ জাগায়। লেখক-শিল্পীর প্রাণে বইয়ে দেয় সৃষ্টির নিঝরধারা। গাছ চিনতে হবে, ফুল চিনতে হবে। নদী, পাহাড়-ঝরনা, বিল-ঝিল, অরণ্যের চরিত্র জানতে হবে। মানবজীবনের সঙ্গে প্রকৃতির অপূর্ব মিল। এই মিলটা প্রকৃত লেখকমন উপলব্ধি করতে পারে। প্রকৃতিকে জানা সম্ভব দুভাবে। প্রত্যক্ষভাবে চোখে দেখে, আর বইপড়ে, টিভি-ইন্টারনেট থেকে আহরণ করে। বলব, লেখকের জন্য প্রকৃতিপাঠ অবশ্যই জরুরি। 

কিশোর লেখা: আপনার আলোচিত গ্রন্থ ‘আমার একটা আকাশ ছিলো’। এরপর কোন বইটিকে বেশি গুরুত্ব দেবেন?  

ফারুক নওয়াজ: আমি কি বলবো। পাঠক, আমার প্রিয় পাঠকেরা আর প্রকাশক-বন্ধুরা জানেন। আমার সব বই একাধিক, বহুবার ছাপা হয়েছে। আর কবিতা-ছড়ার বইগুলো প্রকাশকরা উৎসাহের সঙ্গে বের করেন। বলব, আজব মানুষ, সোনার টুকরো ছেলে, রাজার ঘোড়া, অন্যরকম রাজা, যতোদিন মধুমতি, ইমলিপাতা ইলিকঝিলিক, নাম লিখেছি পাতায় পাতায়, নাম ছিলো তার টুই, একাত্তরের বর্গি, কাহিনী পাতায় পাতায়, ওই পাখি নীলপাখি, আকাশ জুড়ে মেঘের জাদু, চলো যাই টুঙ্গিপাড়া, মনটা তখন মন থাকে না, কিংবা ছড়াসমগ্র, নির্বাচিত কিশোর কবিতা, সেরা ১০০ কিশোর কবিতা, (সম্প্রতি প্রকাশিত দুটি বাদে) এগুলো একাধিকবার ছাপা হয়েছে।     

কিশোর লেখা:  আপনার পরবর্তী  প্রজন্মের ছড়াকার ও ছড়া সম্পর্কে কিছু বলুন। কার কার ছড়া ভালো লাগে?

ফারুক নওয়াজ: ছন্দোবদ্ধ যেকোনো রচনাকেই আমরা ছড়া বলে ফেলি। সেক্ষেত্রে বলব, ছড়া কবিতারই একটা রূপ বা আদল। এখন ছড়া খুব কম লেখা হচ্ছে। ছড়ার মতো কবিতা বা কবিতার মতো ছড়াই বেশি হচ্ছে। এগুলোকে ‘পদ্য’ বলে মনে করতে পারি। সে কবিতা হোক, আর ছড়াই হোক, তাতে সমস্যা নেই। শুধু ছড়াই লিখতে হবে এরও কোনো মানে নেই। কবির কোনো ভাবনা ছড়ায় ফোটে, কোনোটা কবিতায়। যদি বলেন কিশোর উপযোগী ছড়া-পদ্য এ সময়ে কারা ভালো লিখছে? সেক্ষেত্রে বলব অনেকেই। তবে এ সময়ের অধিকাংশ কবির ভাবনায় নতুনত্বের বড় অভাব। এতে আলাদা করে তাদের চেনা যায় না। তারপরও ভালো তো অনেকেই লিখছে। আমরা আশা করি অচিরেই বর্তমানের কেউ-কেউ নিজস্ব আলোয় প্রদীপ্ত হয়ে উঠবে।  

কিশোর লেখা:  আমাদের কিশোর কবিতা সম্পর্কে কিছু বলুন।

ফারুক নওয়াজ: বলেছি না, নিখাঁদ কিশোর কবিতা বা আসল ছড়া, এটা তালাশ করাটা বেশ কষ্টকর বর্তমানে। ছড়ার মতো কবিতা বা কবিতার মতো ছড়াই হচ্ছে বেশি। তবে, অনেক, অনেক, অনেক লেখা হচ্ছে। কিন্তু, একই রকম মনে হয় সব। একই কাঠামোর মাত্রাবৃত্তের, কখনোবা পয়ার ধরনের হচ্ছে বেশি। মনে হয় সময়টা অস্থির। কিছু একটা লিখেই লেখক হওয়ার হাঁকডাক শুরু হয়ে যায়। নতুন ভাবনা, নতুন ফর্ম কারো মাথায় আসছে না। আর সিনিয়ররা তো সেই রবীন্দ্রনাথ, বুদ্ধদেব বসু, জসীম উদ্দীন, বন্দে আলী মিয়া, যতীন্দ্রমোহন বাগচী থেকে আহসান হাবীব, আল মাহমুদের ভেতরেই যেন ঘুরঘুর করছেন। আর আমার কয়েকজন অগ্রজপ্রতিম যেমন আবদার রশীদ, রফিকুল হক,  মোহাম্মদ মোস্তফা, সুকুমার বড়–য়া, মাহমুদ উল্লাহ, আখতার হুসেন, আবু সালেহ, নিয়ামত হোসেন, জ্যোতির্ময় মল্লিক, দীপংকর চক্রবর্তী, তপংকর চক্রবর্তী, খালেক বিন জয়েনউদদীন, দেলওয়ার বিন রশিদ প্রমুখের ছড়া পড়ে কৈশোরে যেমন পুলকিত হয়েছি, তেমনি আমার সময়ের আবু হাসান শাহরিয়ার, লুৎফুর রহমান রিটন, অজয় দাশ গুপ্ত. সৈয়দ আল ফারুক, সিরাজুল ফরিদ, সৈয়দ নাজাত হোসেন, ফারুক হোসেন,খালেদ হোসাইন, আমীরুল ইসলাম. আসলাম সানী, শফিক ইমতিয়াজ, উৎপলকান্তি বড়–য়া, জসীম মেহবুব, মারুফুল ইসলাম প্রমুখের ছড়ায় পাই নতুনত্বের স্বাদ। তাদের পরবর্তীতে আনজীর লিটন, রোমেন রায়হান, সারওয়ার উল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ দীপ্যমান।কিশোর কবিতায় মাহবুব সাদিক, রোকেয়া খাতুন রুবী, আনওয়ারুল কবীর বুলু, মাহবুবা হক কুমকুম, সুজন বড়ূয়া, আইরীন নিয়াজী মান্না, মোহাম্মদ মারুফুল, রাশেদ রউফ মোশতাক আহমেদ- অপূর্ব। ছড়ার পাশাপাশি আখতার হুসেন, আহমেদ জসিম, আবু হাসান শাহরিয়ার, লুৎফুর রহমান রিটন সৈয়দ আল ফারুক, আমীরুল ইসলাম প্রমুখ কিশোর কবিতায়ও অবদান রেখেছেন। এই সময়ের নবীন-তরুণ যারা ছড়া-পদ্য লিখছেন তাদের মূল্যায়নের সময় অপেক্ষা করছে।

কিশোর লেখা: আমাদের বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক শিশুসাহিত্য নিয়ে আলাদা একটা সাহিত্যের শাখা তৈরি হয়েছে, যা অন্য কোনো ভাষার সাহিত্যে নেই। এ বিষয়ে শিশুদের উপযোগী ভালো মানের রচনা কতটা আছে এবং শিশুদের জন্য এর প্রয়োজনীয়তা কি?

ফারুক নওয়াজ: মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, আমাদের সত্তার অংশ। আমাদের গৌরবোজ্জল¡ ইতিহাস জানার জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। তবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা গল্প অথবা সাহিত্য রচনা সব একই রকম হয়ে যাচ্ছে। সবাই ঘুরে ফিরে এক লেখাই লিখছে, যাকে বলে রিপিটেশন। আমরা ভেতরে ঢুকছি না। আমরা জীবন দেখছি না। আমাদের স্বপ্নজয়ের আকাঙ্খা থাকতে হবে। কল্পনা বা ভাবনার জগৎটা বড়ো হতে হবে। ভেতর থেকে সবকিছু দেখতে হবে। সেজন্য ইতিহাস চর্চাটা জরুরী। একজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে গেলো এবং সে ফিরে এলো বীরের বেশে, স্বাধীনতা অর্জন করে। সেখানে দুঃখ-সুখ, বীরত্ব, ক্ষরণ-  সব থাকতে হবে। এমন কাহিনি একটা শিশুকে, একটা কিশোরকে বীর করে তোলে, দেশপ্রেমিক করে তোলে, তাকে ভাবায়। এসব বিষয়ে লিখতে হলে লেখককের নিজস্ব ভাষা ও উপস্থাপন-ক্ষমতা থাকতে হবে। যা এই শাখায় আমরা সেভাবে খুঁজে পাই না। তবে নতুন অনেকেই আসছেন। লিখছেন। সেখান থেকে আশা করছি  হুমায়ুন আজাদ, আমজাদ হোসেন, শাহরিয়ার কবির বা মুহম্মদ জাফর ইকবালের সমান কাউকে না কাউকে আমরা খুঁজে পাবো। 

কিশোর লেখা: বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে প্রকাশিত ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশোর মাসিক ‘শিশু’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে ‘শিশু’ এবং দৈনিক পত্রিকার ছোটদের পাতা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?

ফারুক নওয়াজ: শিশুর বয়স ৪৬ বছর অতিক্রম করেছে। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত প্রকাশনা। এ-পত্রিকাটি যেমন নতুন লেখক সৃষ্টিতে জোর ভূমিকা রেখে চলেছে তেমনি বড়দেও জন্যই শুধু যারা লিখতেন সেই প্রতিষ্ঠিত লেখকদেরকেও শিশুসাহিত্য নির্মাণে প্রেরণা জুগিয়েছে। যারফলে আমরা যেমন পেয়েছি একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল শিশুসাহিত্যকÑ তেমনি বড়দের বড়ো লেখকদের সেরা শিশুসাহিত্যটির আস্বাদও পাঠকদের পাওয়া সম্ভব হয়েছে। আর, দৈনিক পত্রিকাগুলো এখন সম্পাদকনির্ভর নয়, মানিক মিয়া-আকরম খাঁর যুগ নেই আর। এখন সবই মালিকনির্ভর। এগুলোর মালিক অধিকাংশই   শিল্পপতি। ফলে তাদের মধ্যে সৃজনশীলমন তালাশ করাটা বোকামি? সব বাণিজ্যশীলমন। তারমধ্যেই শিশুসাহিত্যের পাতাগুলো বেরুচ্ছে, তবে দরিদ্রতরভাবে। কোনো সপ্তাহে বাড়তি বিজ্ঞাপন এলে বাদ যাবে ওই পাতাটাই। এমনই চলছে। আর ভালো পাতা হাতেগোনা চার-পাঁচটি হয়তো। বাকিগুলোর অবস্থা কোনোভাবে পাতাভরানো-মাত্র।     

কিশোর লেখা: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

ফারুক নওয়াজ: ধন্যবাদ কিশোর লেখাকে। প্রিয় সম্পাদক এবং পত্রিকার সংশ্লিষ্টজনদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা, শুভকামনা। সবাই ভালো থাকেন। দীর্ঘজীবী হোক কিশোর লেখা।