ঢাকা, শুক্রবার ২৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৪১:৫৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

স্বামীর বেনামী অর্থে স্ত্রীর অযাচিত হয়রানী

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০৫:১৫ পিএম, ৭ মে ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ০৭:১৩ পিএম, ৮ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

স্বামীর অবৈধ উপার্জনের টাকায় স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত ৯০ শতাংশ মামলায় দেখা যায়, স্বামীর অবৈধ উপার্জনের বিষয়ে স্ত্রী কিছুই জানেন না। কিন্তু আইনে ওই নারীর বিরুদ্ধেই মামলা হচ্ছে। আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকেই এসব নারীকে সুরক্ষা দেওয়ার চিন্তা করছে দুদক। 

রোববার দুপুরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবির মেঘমালা সম্মেলন কক্ষে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয় ও সম্পদের পারিবারিক দায় : নারীর ভূমিকা, ঝুঁকি ও করণীয় শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘মামলায় অভিযুক্ত নারীরা বলছেন, তারা স্বামীর অবৈধ উপার্জনের বিষয়ে কিছুই জানেন না। কিন্তু কাগজে তাদের সই আছে। তারাও পরিচালক বা অন্য কোনো পদে আছেন। তাই নারীদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। ব্যাংক চেক বা খালি চেকে সই করার আগে জানতে হবে তিনি কেন সই দিচ্ছেন।

টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় ইকবাল মাহমুদ আরো বলেন, গত দেড় বছরে দেখেছি এসব কারণেই ১১৮টি মামলায় নারীরা আসামি হয়েছেন। স্বামীর অবৈধ উপার্জনের ঘটনায় নারীরা সম্পৃক্ত না হলেও আইনগত কারণেই নারীরা ভিকটিম হয়ে যাচ্ছেন। যে নারী স্বামীর অবৈধ উপার্জনের বিষয়ে কিছুই জানেন না, সেই নারীর বিরুদ্ধে কেন মামলা করব?

তিনি জানান, দেড় বছর আগের কমিশনের করা মামলাগুলো কর্মকর্তাদের ভাবিয়ে তুলছে। সম্প্রতি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে বিভিন্ন নারী সংগঠন এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন তারা। তার মতে, ‘এ বিষয়ে অন্তত আলোচনাটা শুরু হোক এবং চলুক।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, একজন নারী জানেন না তার স্বামী দুর্নীতিবাজ অথচ তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তার স্ত্রীর নামে-বেনামে স্বামীর অবৈধ অর্জিত সম্পদ ব্যাংকে যাচ্ছে কিংবা কোনোভাবে লেনদেন হচ্ছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয় সম্পর্কে ওই নারীর না জানাটাও দুঃখজনক। আইনে কিংবা আদালতে ওই নারীকে রক্ষায় কিছু করার থাকে না।

বেসরকারি সংস্থা নিজেরা করির প্রধান ও নারী নেত্রী খুশী কবির বলেন, সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন নেই। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের দাম দেওয়া হচ্ছে না। স্বামীর সঙ্গে নারীর নামও দুর্নীতি মামলায় ঢুকে যাওয়া নারীর অসচেতনতা অনেকাংশে দায়ী।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, নারীদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের পারিবারিক শ্রমের পারিশ্রমিক তারা পান না। এটা নিশ্চিত করা দরকার। স্বামীর বৈধ ও অবৈধ আয়ের ব্যাপারে স্ত্রীরা যেমন বাধা দেবেন, তেমনি নিজেদেরও দুর্নীতিসচেতন হতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইনের সংশোধন আনা যেতে পারে। দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা বাড়াতে প্রচার- প্রচারণা খুবই জরুরি। দুদককে আরো শক্তিশালী ভূমিকা পালন করা দরকার। নারীরা অবলা নয়। নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতার পরিবেশ তৈরি করা গেলে সমাজ থেকে কমে যাবে এসব দুর্নীতি।

অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, অনেকেই বলে থাকে, ওই ব্যক্তির ঘুষ না খেয়ে উপায় ছিল না। তার স্ত্রী খুব ‘ডিমান্ডিং’। এই স্বামীরা কিন্তু স্ত্রীদের অন্য কোনো কথা শোনেন না, শুধু দুর্নীতির বেলায় স্ত্রীর কথায় বাধ্য হয়ে যান।


সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, আইনজীবী তানবীর সিদ্দিক, রোকেয়া কবির প