ভূমিকম্পের ১৩ দিন পর তুরস্কে শিশুসহ ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:০৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার
সংগৃহীত ছবি
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধারের অবিশ্বাস্য ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দেশটির হাতায় প্রদেশের আন্তাকিয়া শহরের একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৯৬ ঘন্টা পর এক শিশুসহ ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে তুর্কি উদ্ধারকরীরা। তাদের হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার স্পর্শ করতে যাচ্ছে। নিহতের মধ্যে তুরস্কে ৩৯ হাজার ৬৭২ জন। সিরিয়ায় ৫ হাজার ৮১৪ জনের বেশি। সব মিলিয়ে দেশ দুটিতে মৃতের সংখ্যা এখন ৪৫ হাজার ৪৮৬-তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
এরআগে গতকাল শুক্রবার তুরস্কে অন্তত চারজনকে জীবিত উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার দেশটির হাতায় প্রদেশের একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে ১২ বছর বয়সি এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার শিশুর নাম তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাকে একটি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
এছাড়াও আন্তাকিয়া শহরের একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৬০ ঘণ্টার বেশি সময় পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমিকম্পের ১২তম দিনে শুক্রবার উদ্ধার ওই ব্যক্তির নাম মোস্তফা আভিসি।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মোস্তফা আভিসি উদ্ধার হওয়ার পরপরই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চান। এক উদ্ধারকর্মীর কাছে মোবাইল ফোন চান তিনি। মোস্তফা আভিসি উদ্ধারকর্মীদের কাছে জানতে চান, তারা কি সবাই বেঁচে আছে। আমি তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে চাই।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ভূমিকম্পের ১৩ তম দিনের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু জীবিত উদ্ধার সম্ভাবনা বলতে গেলে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এখন।
এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান জানিয়েছেন তুরস্কের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮ হাজারেরও বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বুধবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ভুমিকম্প পরবর্তী অগ্রগতি নিয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলন করেন এরদোয়ান। এসময় তিনি বলেন, এক সপ্তাহে তুরস্কের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮ হাজারেরও বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এবং ভূমিকম্পে আহত ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সব দেশের প্রতি কৃতজ্ঞা জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, এই অন্ধকার দিনে যারা বন্ধুত্ব দেখিয়েছেন তুরস্ক কখনই ভুলবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি আবারও ধন্যবাদ জানাতে চাই সমস্ত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোকে যারা আমাদের জাতির জন্য দিনরাত সাহায্য সংগ্রহ করছে। তাদের দলগুলোর সাথে আমাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে এবং তাদের প্রার্থনায় আমাদের ভুলে যায়নি।
এদিকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার উদ্ধারকারীরা। ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে প্রাণের সাড়া পেলেই ছুটছেন সদলবলে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হতাশ হতে হচ্ছে তাদের।
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার।
