ঢাকা, শুক্রবার ২৯, মার্চ ২০২৪ ১:১০:৪৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ডিজিটাল সাংবাদিকতা: নারীর চ্যালেঞ্জ ও ভূমিকা

আইরীন নিয়াজী মান্না

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:২০ পিএম, ১০ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার

আইরীন নিয়াজী মান্না- শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক, সম্পাদক- উইমেননিউজ২৪.কম

আইরীন নিয়াজী মান্না- শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক, সম্পাদক- উইমেননিউজ২৪.কম

ভূমিকা: তথ্য প্রযুক্তির অবাধ বিস্তার আমাদের এনে দাঁড় করিয়েছে এক নতুন বিশ্বের সামনে। জীবনযাত্রার সামনে উন্মোচিত হয়েছে এক নতুন দিগন্ত। আজ মানুষ ঘরে বসেই যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সারা বিশ্বের খবরাখবর জানতে পারছেন খুব সহজে। প্রযুক্তির বিবর্তনে নয়া বিশ্ব ব্যবস্থার সামনে খুলে গেছে সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার। এই নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায়, বিবর্তিত প্রযুক্তিতে সাংবাদিকতায় এসেছে পরিবর্তন। বর্তমানে সাংবাদিকতা আর শুধুমাত্র কাগজ- কলমে সীমাবদ্ধ নেই। হাতে থাকা ছোট্ট মুঠোফোনেই সমস্ত খবরাখবর মানুষের নখদর্পণে চলে আসছে। এটাই এখন বাস্তবতা। সেই সূত্র ধরে সাংবাদিকতায় নিউ মিডিয়ার উদ্ভব হয়েছে।

ডাটা জার্নালিজম, মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম, মোবাইল জার্নালিজম, পডকাস্ট জার্নালিজম তাই এই সময়ের সাংবাদিকদের কাছে খুব পরিচিত শব্দাবলী। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে সাংবাদিকতার অনেকাংশই মোবাইল জার্নালিজম বা মোজোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন গণমাধ্যম সরাসরি পাঠক-দর্শকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে। 

এখন মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম শুধু অনলাইন সংবাদপত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। বাংলাদেশের প্রথম সারির প্রায় সব দৈনিক পত্রিকারই অনলাইন ভার্সন রয়েছে, টেলিভিশন চ্যানেলেরও রয়েছে ডিজিটাল ভার্সন। একই সাথে এখন দৈনিক সংবাদপত্রও তথ্যপ্রযুুক্তির প্রসারতার কারণে বিভিন্ন ঘটনার ভিডিও চিত্র নির্মাণ করে মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজমে যুক্ত হয়েছে। ডিজিটাল সাংবাদিকতার সাথে অডিও, ভিডিও, টেক্সট সবকিছুই রয়েছে। এই ডিজিটাল সাংবাদিকতা যেমন মানুষের যোগাযোগের পরিধিকে বিস্তৃত করেছে তেমনি বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় নারী জীবনেও নিয়ে এসেছে নানা পরিবর্তন। ডিজিটাল বাস্তবতায় নারীর তথ্য প্রাপ্তির সুযোগকে সহজলভ্য করেছে একই সাথে চব্বিশ ঘণ্টাই খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ডিজিটাল সাংবাদিকতা ও নারীর ভূমিকা: বাংলাদেশে নারীর কথা যদি বলা হয়, তাহলে বিপুল সংখ্যক গ্রামীণ নারীকে উপেক্ষা করার কোনো অবকাশ নেই। শহুরে বা পড়াশোনা জানা নারীরা যেমন ডিজিটাল সাংবাদিকতার কল্যাণে তথ্য প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে আছেন তেমনি গ্রামীণ নারীরাও সরাসরি যুক্ত হচ্ছেন খবরের সঙ্গে।

বর্হিবিশ্বের ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য পুরুষ নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন নারীরা। হাতে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারছেন। সাংবাকিতায় যেমন তথ্যসূত্র বা উৎস খুব গুরুত্বপূর্ণ। নারী বিষয়ক কোনো সংবাদে অনেক ক্ষেত্রে নারীকে উৎস হিসেবে কথা বলতে দেখা যায় না। ডিজিটাল সাংবাকিতায় নারীরা উৎস হিসেবে তথ্য দিতে পারেন। 

আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে যেমন কৃষক বলতে পুরুষ কৃষকদেরই আমরা বুঝে থাকি। কৃষি বিষয়ক কোন সংবাদে পুরুষ কৃষকদেরই কথা বলতে দেখা যায়। কিন্তু কৃষিখাতের বিপুল অংশে নারী কৃষকদের অনুপস্থিতি কৃষিক্ষেত্রে নারীদের অবদান একেবারেই উহ্য থেকে যায়। ডিজিটাল সাংবাকিতায় গ্রামীণ কৃষক হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করার সুযোগ রয়েছে। 

অন্যদিকে সিটিজেন জার্নালিজমে নারীদের প্রতিভার সাক্ষর রাখার সুযোগ রয়েছে। তারা তাদের যেকোনো সৃজনশীল কাজ, কৃষিকাজ, ব্যবসায় উদ্যোগ এরকম নানাকিছু অডিও বা ভিডিও করে সিটিজেন জার্নালিজমের মাধ্যমে গণমাধ্যমে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন।

একই সাথে নারী স্বাস্থ্য অনেকাংশেই উপেক্ষিত একটা খাত। শহুরে নারীর পাশাপাশি বিশেষ করে গ্রামীণ নারীর স্বাস্থ্যসেবার অংশটি একেবারেই অবহেলিত। তারা যেমন স্বাস্থ্যসেবা পান না আবার অনেক রোগ নিজের মধ্যে পুষে রেখে শুধুমাত্র তথ্য প্রাপ্তির ঘাটতির কারণে অপচিকিৎসায় মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে যায়। গ্রামীণ হাতুড়ে ডাক্তার, কবিরাজ, অপ্রশিক্ষিত ধাত্রী প্রভৃতির মাধ্যমে প্রজনন স্বাস্থ্য, গর্ভকালীন ও গর্ভপরবর্তী নানা জটিলতার চিকিৎসা নিতে গিয়ে জটিলতায় পড়ে যান। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী বিশ্বে গর্ভাবস্থা ও প্রসবজনিত জটিলতায় ২০২০ সালে প্রায় ৮০০ নারীর মৃত্যু হয়। অর্থাৎ প্রতি দুই মিনিটে প্রায় একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে (কালবেলা, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩)।

একই সাথে দেশে নারীর মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি একেবারেই অবহেলিত। নারীর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাটি পরিবার থেকে একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না। দিলেও জ্বীনে ধরা বা ভূতের আছড় বলে অপচিকিৎসা করা হয়। এসব ক্ষেত্রে ডিজিটাল সাংবাদিকতার মাধ্যমে গ্রামীণ নারীরা এসব কুসংস্কার এবং ভুল তথ্য সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। পাশাপাশি নারীরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সরকারি এবং বেসরকারি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছেন। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা যেমন ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’, ‘ডাক্তার আছেন’ এসব অ্যাপসের মাধ্যমে চব্বিশ ঘণ্টাই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোনো সমস্যায় প্রাথমিক সেবা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ডিজিটাল সাংবাদিকতা নারীদের এসব তথ্য সম্পর্কে জানানোর মাধ্যমে গণমাধ্যমের শিক্ষিত করার কাজটিও করছে। (আমরা জানি, গণমাধ্যমের ৪টি কাজ: যথা ১. উদ্বুদ্ধ করা, ২. প্রভাবতি করা, ৩. শিক্ষিত করা, ৪. বিনোদিত করা।)

ডিজিটাল সাংবাদিকতা সাধারণ নারীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করছে সেটি হলো তাদের স্বনির্ভর করা। অনেক নারীই এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে উদ্যোক্তা হচ্ছেন বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যেসব নারী নিজেকে শুধু গৃহিণী হিসেবে ভাবতেন তারাও নিজস্ব হাতে বানানো বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ পাচ্ছেন। গ্রামীণ নারীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য সরাসরি বাজারজাতকরণের সুযোগ পাচ্ছেন। প্রতিটি নারীই এখন আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, অন্য নারীদের দেখে আগ্রহী হচ্ছেন এবং উৎসাহ পাচ্ছেন।

নারীদের নিরাপত্তা বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। আমরা নারীদের নিরাপত্তা দিতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছি। যার ফলে নারী ও শিশু ধর্ষণ, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি এখনও নারীদের পিছু ছাড়েনি। আজও আমাদের দেশে নারীদের চলার পরিবেশ নিরাপদ নয়। ডিজিটাল সাংবাদিকতার কারণে নারীরা কোনটা হয়রানি, কোন কোন ক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষা পাওয়া যাবে, পারিবারিক নির্যাতনের কোন পর্যায়ে তারা নিজেদের কীভাবে সুরক্ষিত করতে পারবেন এসব তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে বা সরকারি পুলিশি সহায়তার জন্য আলাদা আলাদা ফোন নম্বর ব্যবহার করে তাৎক্ষণিক আইনি সহায়তা পেতে পারছেন। এক্ষেত্রে ৯৯৯-এর কথা আমরা বলতে পারি।

ডিজিটাল সাংবাদিকতায় নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দেশের যেকোনো প্রান্তের প্রান্তিক নারীও এখন আর এর আওতার বাইরে নয়। তারা যেকোনো সময়ে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যুক্ত হতে পারেন। সেটা সাংবাদিকতায় খবরের উৎস হিসেবে যেমন তেমনি খবরের উপাদান হিসেবেও কাজ করে। অনেকক্ষেত্রে নারী নিজে প্রতিবেদক হিসেবেও সরাসরি যুক্ত থাকতে পারছেন। 

একটু লক্ষ্য করলেই আমরা দেখতে পাই, ডিজিটাল সাংবাদিকতায় নারী সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা (এটি নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য)। আগের মতো বাঁধাধরা ছকে সাংবাদিকতা আটকে নেই। নারী সাংবাদিকদের অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করে পুরুষের বাইকের সাথে পাল্লা দিয়ে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে গাদাগাদি করে ফিরে দ্রুত নিউজ দেওয়ার পেরেশানিও অনেকটাই কমে এসেছে। স্পটে বসেই কাভার করা সংবাদ পাঠিয়ে দেওয়া যাচ্ছে, মোবাইলে ফুটেজ নিয়েও সেটা স্পট থেকেই নিউজরুমে পাঠিয়ে দেওয়া যাচ্ছে বা অনেক ক্ষেত্রে কোনো কোনো সাংবাদিক সরাসরি আপলোডও করে দিতে পারছেন। এর ফলে সাংবাদিকতার বিষয়টি নারীর জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছে। 

ডিজিটাল সাংবাদিকতায় নারীর চ্যালেঞ্জ: ডিজিটাল সাংবাদিকতায় এতসব সুবিধা বা উৎকর্ষতার পাশাপাশি নারীদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেসব সাধারণত নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ডিজিটাল সাংবাদিকতায় যেমন সরাসরি পাঠকের সাথে যুক্ত থাকা যায় আবার সরাসরি পাঠক বিভিন্ন খবরে কমেন্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে নারীবিষয়ক নানা সংবাদ বা নারী সেলিব্রেটিদের খবরের নিচে ফেইক আইডি থেকে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায় যা একজন নারীর জন্য অবমাননাকর।

ডিজিটাল সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এই আইনের কারণে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ বা কাজ করার স্বাধীনতা ব্যাহত হয়। এই আইনের কারণে অনেক নারী সাংবাদিক, অ্যাকটিভিস্ট, লেখককে হেনস্তা হতে হয়েছে। এছাড়া অনলাইনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা ও পেশাগতভাবে হেনস্থা করার জন্য নজরদারি বা হ্যাকিংয়ের মতো নানা ডিজিটাল অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। 

ডিজিটাল সাংবাদিকতার যুগে নারী সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পাশাপাশি অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের কারণেও নারী সাংবাদিকদের হেনস্তা হতে হয়েছে। প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার ব্যাপারটি সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত আছি।

ডিজিটাল সাংবাদিকতার এই যুগে আরো একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো সাইবার বুলিং। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাইবার বুলিং বা অনলাইন হয়রানির শিকার হয় নারীরা। বিভিন্ন ভুয়া একাউন্ট থেকে নারীদের অশ্লিল ছবি পাঠানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীর ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খুলে ভিডিও, ছবি বা তথ্য শেয়ার করা, আইডি হ্যাক করা, পাস ওয়ার্ড চুরি করা, পর্নোগ্রাফির ছবি, ভিডিও শেয়ার করে বিব্রত করা ছাড়াও নারীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করাসহ নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

৮ মার্চ ২০২৩ একাত্তর টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন অনুয়ায়ী বাংলাদেশে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয় ৬৪ শতাংশ নারী। দেশে গত ২০২০ সালের নভেম্বরে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট অন উইমেন যাত্রা শুরু করে। প্রথম বছরেই এই ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করেন ১৭ হাজার ২০ শত ৮০ জন নারী। যারা কোনো না কোনোভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার (সাইবার বুলিয়ের শিকার নারীরাই বেশি, প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণ মার্চ ২৯, ২০২২)।

অন্যদিকে ডিজিটাল সাংবাদিকতার এ যুগে নারীরা নানা প্রলোভনে পড়ে নানাভাবে হয়রানির শিকারও হচ্ছে। মোবাইল ফোনের নানা অ্যাপসের অপব্যবহারের মাধ্যমে নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। নানাভাবে ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।

সুপারিশ: ডিজিটাল সাংবাদিকতা নারীদের জন্য যেমন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে একইসাথে নানামুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে দিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারলেই ডিজিটাল সাংবাদিকতার সমস্ত সম্ভাবনা নারীর জন্য বহুমূখী মাত্রা যোগ করবে।
১. ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিলোপ সাধন। এই আইনের কারণে কোনো নারীকে যেনো হেনস্তা হতে না হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া।
২. নারীদের ডিজিটাল সাংবাদিকতার মাধ্যমে সচেতনতামূলক বার্তা পরিবেশন। যাতে তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ব্যাপারটি রক্ষিত হয়।
৩. হ্যাকিংসহ নজরদারিমূলক কর্মকাণ্ড নারী সাংবাদিকদের সুরক্ষা দানের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৪. নারীদের জন্য পরিবেশিত সংবাদে হয়রানিমূলক কমেন্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং নীতিবিরুদ্ধ, আক্রমণাত্বক কমেন্ট সরিয়ে ফেলার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া।
৫. সাইবার বুলিং ও অনলাইনে নারীর হয়রানী বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

উপসংহার: এই লেখাটি আরও বড় করে আরও দীর্ঘ আলোচনা করা যায়। কিন্তু সময়ের স্বল্পতায় তার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না। তবে চারপাশের এত সঙ্কটের মাঝেও দৃপ্ত প্রত্যয় নিয়েই বলতেন চাই- ডিজিটাল সাংবাদিকতার এই অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে গণ নারীর হাতের মুঠোয় এখন অবারিত তথ্য এসে ধরা দিচ্ছে। আর নারী সাংবাদিকদের জন্য তো খুলে গেছে বিশাল মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার এক নতুন জগত। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ক্রমেই ধাবিত হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে। 


লেখক পরিচিতি: আইরীন নিয়াজী মান্না- শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক, সম্পাদক- উইমেননিউজ২৪.কম