ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:১২:১৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ধলেশ্বরী ও গাজীখালি নদীর পানিশূন্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২৩ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

মানিকগঞ্জ জেলার সদর, সাটুরিয়া, সিঙ্গাইর ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা এক সময়ের ক্ষরস্রোতা নদী ধলেশ্বরী ও গাজীখালি। একসময় এই জায়গা দিয়ে বড়সড় পালতোলা নৌকাসহ বিশাল জাহাজ চলাচল করতো। তবে কালের পরিক্রমায় তা এখন রূপ নিয়েছে মরা নদীতে।

এই সমস্যা সমাধানে ২০১৮ সালে 'ব-দ্বীপ ২১০০' নামের এক প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় নদী ভাঙ্গন রোধ, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করা হয়।

সেই লক্ষে দু-বছর আগে নদী দুটি পুনঃখনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু সফলতা আসেনি, উজানের পলি পরে নদীর উৎসমুখ বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ফলে পানির প্রবাহ নেই, বিভিন্ন অংশে চর জেগে উঠেছে।

এ কারণে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে নদী দুটি, স্থানীয় চাষিরা নদীর এসব চরে তামাক, বোরো ধান, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করে। অনেকই আবার লাকড়ি শুকাচ্ছে আর বাচ্চারা খেলা মাঠ হিসেবে চরকে ব্যবহার করছে। মাঝে মাঝে আবদ্ধ কিছু পানি থাকলেও কচুরিপানাগুলো এমনভাবে ঢেকে রেখেছে যে, তা দেখে বুঝার উপায় নেই এটা নদী নাকি অন্যকিছু।

নদী পাড়ের মানুষের অভিযোগ, কাজের কাজ কিছুই হয়নি, নদী খননের নামে শুধু মাটি বানিজ্য হয়েছে। নদীর মাটি কেটে মানুষের কৃষি জমিতে ফেলা হয়। পরে সেই মাটি পরিবহনের করে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে স্থানীয়দের ফসলসহ রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যায়। আর সুবিধাবাদীরা বালু নিয়ে গেছে। সারা বছর যেন নদীতে পানি পেতে পারে এমন মানের নদী খননে দাবি জানান তারা।

জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড ধলেশ্বরী ও গাজীখালী নদি দুটি পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ধলেশ্বরী নদীর কালীগঙ্গা উৎসমুখ চরতিল্লী থেকে মানিকগঞ্জ সদর হয়ে ও সিঙ্গাইর সীমানা পর্যন্ত এবং গোপালপুর ধলেশ্বরী নদী থেকে সৃষ্ট গাজীখালি নদী সাটুরিয়া উপজেলা হয়ে ঢাকার ধামরাই হয়ে সাভার বংশি নদী পর্যন্ত ৫টি প্যাকেজে কাজ শুরু করে ২০২১ সালের শেষের দিকে শেষ করে। খননের পর উভয় নদীতে পানি প্রবাহ শুরু হলেও গত বর্ষায় পলি মাটি পড়ে আবার উৎসমূখ আটকে যায়। উজান পাশ থেকে যথেষ্ট গভীর করা হলে হয়তো এমন টা হতো না বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় করে নদী খনন করলেও আসল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি।


সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর সিংহভাগ জায়গায় পানি নেই। নদী পাড়ের মানুষের দৈনন্দিন কাজের জন্য পানিতো দূরের কথা পশুপাখির গোসলের পানিও নেই। এ দুটি নদীর উৎসমূখে দেড়দশক বালুর পাহাড় জমেছিল, খননের পরে বিপুল বালুমাটি বিক্রি করে প্রভাবশালীরা মোটা অংক হাতিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দীন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে এমন নদীতেগুলোতে পানি প্রবাহ ধরে রাখার জন্য প্রতি বছরই কিছু কাজ করা দরকার, কিন্তু সেই রকম মেইন্টেইন্যান্স বাজেট তো নেই। আর খনন প্রক্রিয়া ছিল প্রকল্পের আওতায়, পুন: খননের জন্য বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ পাওয়া গেলে ধলেশ্বরী, গাজীখালি এবং ইছামতী নদীতে কাজ শুরু করবো।