ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:২৬:০৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নজরদারি নেই, বাজার লাগামহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ০১:৩৬ পিএম, ২০ মে ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ১২:৫৬ পিএম, ২২ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখা নিয়ে সরকারের আশ্বাসের পরও রাজধানীর কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। অন্যান্য সময় সব্জি হোক, মাছ হোক, মাংস হোক দামের একটা মিল থাকে। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে একই বাজারে একই জিনিসের বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। 

 

সরকারের এত তোড়জোড়, হুমকি কোনটাকেই যেন পাত্তা দিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্বল বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার সুযোগে ব্যবসায়ীরা ছক কষে রমজান নির্ভর পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। সরকারের উচিত এখন থেকেই পুরো বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনা।

 

কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বাইরের খুচরা বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সব্জির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. হাপিজ বলেন, বাজারে প্রত্যেকটি পণ্যের দাম দু’দিনের ব্যবধানে বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম দ্বিগুণ। যার কারণে আমাদের বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। 

 

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকেও বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজার, শেওড়াপাড়া বাজার, মালিবাগ বাজার, কলাবাগান বাজার সহ বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায় তাজা ও কচি দেশি শসা ১২০ টাকা, সাধারণ দেশি শসা ৭০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০-৯০ টাকা ,মাঝারি আকারের এক হালি লেবু ৪০ টাকা ,প্রতিকেজি ধুন্দল ৫০ থেকে ৫৫ , বেগুন ১০০ থেকে ১২০, আলু ২৫, টমেটো ৮০, পটল ৫০ থেকে ৫৫, কাঁচাকলা হালি ৪৫, কচুর লতি ৪০, পেঁপে ৫৫ থেকে ৬০, ঢেঁড়স ৫৫ থেকে ৫৮, বরবটি ৫৫, চিচিঙ্গা ৫২ থেকে ৫৫, করল্লা ৫০ থেকে ৫৫ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক ৩ আঁটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাচা কলা ৫০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসবের মধ্যে ভোক্তার জন্য সুখবর চালের দামে।

 

নতুন চাল উঠতে শুরু করায় সরু মিনিকেট ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে তিন-চার টাকা কমেছে। অবশ্য নতুন চালের ভাত নরম হয়ে যায় বলে ক্রেতাদের কাছে তা বিশেষ পছন্দ নয়। ফলে তাদের পুরোনো চাল বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল ৬৫থেকে ৬৮, মিনিকেট (মানভেদে) ৫৮ থেকে ৬২, পাইজাম ৫০, বিআর-২৮ ৫০ থেকে ৫২, স্বর্ণা ও পারিজ ৪৪, দেশি মশুর ডাল ১১০ থেকে ১২০, দেশি পিঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫, আমদানি পেঁয়াজ ৪৫, রসুনের দাম বেড়ে ১০০ থেকে ১২০, চীনা আদার দাম ১২০ টাকা,দেশি আদার দাম ১৫০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোলার কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, খেজুর কেজি প্রতি ২২০ থেকে ৫০০ টাকা।

 

অন্যদিকে রমজানে চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে সব ধরনের মুড়ির দাম। বড় আকারের মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। স্বর্ণা ছোট মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। বরিশালের হাতে ভাজা মোটা মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা। এদিকে চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। বাজারে আজ প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। ফার্মের কক মুরগি ও মাছের দর আগে থেকেই চড়া। নতুন করে বেড়েছে গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগির দর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রোজা উপলক্ষে গরুর মাংসের দর প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও খুচরা বিক্রেতারা মাংস বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৫১০ টাকা দরে । ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা টাকা বেড়ে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় উঠেছে।

 

সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, ওই দামে সিটি করপোরেশন মাংস কেনে।

 

মাছের লেগেছে রোযার আমেজ। মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায় মাছ প্রতিকেজি কালিবাউস ২৫০, কাতল ৩২০, পাঙ্গাশ ১১০, রুই ৩২০, সিলভারকার্প ১৫০, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০, শিং ৫০০ থেকে ৭০০ ও চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৭০০, ইলিশ (আকারভেদে) ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ,বোয়াল ৮০০ টাকা,পাবদা ১১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আজ যে দামে পাচ্ছেন কাল দাম আরও বেড়ে যাবে, এভাবে বাড়তেই থাকবে।’