গুলশান-বনানীর ঈদের বাজারে ক্রেতার খরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৩:১৭ পিএম, ২৬ মে ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৯:৪০ পিএম, ২৭ মে ২০১৮ রবিবার
দেখতে দেখতে নয়টি রোজা শেষ হয়ে গেল। আজ শনিবার দশম রোজা। তবে রাজধানীর অভিজাত পাড়া নামে খ্যাত গুলশান ও বনানীর শপিং মলগুলো অনেকটাই ফাঁকা।
সরেজমিনে গুলশান-বনানী ঘুরে দেখা গেল বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। গুলশান ১ নম্বর মার্কেটে ক্রেতার হালকা ভীড় চোখে পড়ল। তবে তারা ঈদের কেনাকাটার চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন বেশি।
গুলশান গুদারাঘাট থেকে এসেছেন মাহবুবা আক্তারী। সকাল থেকে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছেন। সাথে তার ছোট্র মেয়ে আরশী। মেয়ের বায়না মিটাতেই মার্কেটে এসেছেন বললেন মাহবুবা। তিনি বলেন, এখনই ঠিক করিনি কোনটা কিনবো। যা ভাল লাগে তাই কিনবো। তবে অন্যান্য মার্কেটগুলোও ঘুড়ে দেখব।
গুলশান অ্যাভিনিউর পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্স। বরাবরই এ মার্কেটটি অভিজাতপাড়ার আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। অথচ অল্প কয়েকজন লোক ছাড়া পুরো মার্কেট যেন অনেকটাই ফাঁকা, ফাঁকা। বেশির ভাগ দোকানে এক-দুজন ক্রেতা। কোনটি অাবার একদম খালি।
শাড়ির পাড় সেলাই করছিলেন তাঁতীঘর এর বিক্রেতা শামসুন্নাহার হক। ঈদের বিক্রি নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, দেখতেই পাচ্ছেন, কাস্টমার নাই। আজকে দশম রোজা, কিন্তু কোনো বেচাকেনা করতে পারছি না।
এই কমপ্লেক্সের স্টাইল ওয়ার্ল্ড এর ম্যানেজার মানিক বলেন, গুলশানের বাসিন্দাদের অনেকে ভারত থেকেই কেনাকাটা করছেন। গত বছর থেকেই ঈদের বাজারের ভিড় কমতে শুরু করেছে। কিন্তু এবার অবস্থা বেশি খারাপ।
মি নামের একটি দোকানের মালিক সুলাইমান হোসেন বলেন, শবে বরাতের পর থেকেই আমাদের ঈদ বাজার শুরু হয়। কিন্তু এবার কিছুই বিক্রি হয় নাই। আজকে সকাল থেকে একটা ড্রেসও বিক্রি করতে পারলাম না।
কিছু দোকানে ক্রেতাদের কিছুটা আনাগোনা ছিল। কেউ কেউ আবার যানজটকেও দায়ী করছেন। কষ্ট করে মানুষ এখন না এসে ঘরে বসেই কেনাকাটা করছে। পিংক সিটির পাশেই শেহজাদ প্যালেসের বিক্রেতারাও একই কথা বললেন, ক্রেতা নেই।
এদিকে পুলিশ প্লাজা কনকর্ড শপিং মলে ক্রেতাদের আনাগোনা কিছুটা আছে। নিকেতন থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছেন ছুরাইয়া খানম। তিনি বলেন, বাসার কাছে বলে এখানে চলে এলাম। জ্যাম ঠেলে দূরে যাওয়া অনেক কষ্টের। কিছুটা নিরিবিলি বলেও ভালো লাগছে।
তানজী খান একটু ঘুরে দেখতে এসেছেন। অনলাইন থেকে কিছু পোশাক কিনেছেন। দেখতে এসেছেন মার্কেটে কী কী পোশাক উঠেছে। তবে আড়ংয়ের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গুলশান ও বনানীর দুটি আউটলেটেই ক্রেতা সমাগম দেখা গেল।
গুলশান আউটলেটের বিক্রয়কর্মী তামিম বলেন, রোজার শুরু থেকেই তাঁদের ভিড় লেগে আছে। বনানীতেও ক্রেতা সমাগম কম। বনানীতে অঞ্জনস এর দেখা যায় দুজন ক্রেতা ঘুরে বের হয়ে গেলেন। বিক্রেতা মাহফুজা আক্তার বলেন, এ অবস্থাই চলছে। নয় দিন হয়ে গেলেও এখনো ঈদ বাজার জমেনি।
তবে প্রাইড এ গিয়ে ঈদের কিছুটা রেশ পাওয়া গেল। প্রাইডের একজন বিক্রেতা বলেন, এ এলাকায় এবার কেনাকাটা কম। ছুটির দিনে একটু ভিড় বাড়ে। তবে আবহাওয়ার কারণেও মানুষ কম আসছে বলে জানালেন। আজ সন্ধ্যার পর থেকে এসব মার্কেটে লোক সমাগম হবে বলে আশায় রয়েছেন বিক্রেতারা।
