ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ৫:১২:০০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বাড়ছে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:০৯ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২৩ বুধবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা। দীর্ঘ সময় ফলন এবং বাজারে সারাবছর চাহিদা থাকায় মালচিং পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে জেলায়। এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করে জেলার চাহিদা মিটিয়ে কয়েক বছর ধরে অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, মালচিং পদ্ধতিতে শুরুতে একসঙ্গে কিছুটা খরচ বেশি হলেও পরে খরচ অনেক কমে যায়। এছাড়া এ পদ্ধতিতে আগাছা হয় না বলে তা পরিষ্কারের কোনো ঝামেলা নেই। দফায় দফায় সার দেওয়ারও ঝামেলা নেই। আর গাছ দীর্ঘজীবী হওয়ায় উৎপাদন হয় দীর্ঘসময় ধরে। ফলে অতিরিক্ত উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করে আশানুরূপ লাভবান হন কৃষক। 

এ পদ্ধতিতে জমি তৈরির জন্য মাঝখানে দুই পাশ থেকে কেটে দেড় ফুট চওড়া করে ও ৮-১২ ইঞ্চি পরিমাণ উঁচু করে মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে বেড তৈরি করা হয়। তৈরি বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। প্লাস্টিকের মালচিং পেপারের কালো রঙের দিকটা থাকে নিচের দিকে আর রুপালি রঙের দিকটা থাকে ওপরের দিকে অর্থাৎ সূর্যের দিকে। এ পদ্ধতিতে সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে মাটিকে রাখে ফসলের উপযোগী। পরে মালচিং পেপারের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোল গোল করে কেটে নেওয়া হয়। এরপর কেটে নেওয়া জায়গায় রোপণ করা হয় বীজ বা চারা। এরপর তিন ফুট উঁচুতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় মাচা।

নীলগঞ্জ গ্রামের কৃষক রমজান শেখ বলেন, আমি মালচিং পদ্ধতিতে এক একর জমিতে কাঁচা মরিচ চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখতে অনেকেই আমার জমিতে আসেন। এ পদ্ধতিতে প্রথম দিকে একটু বেশি খরচ হলেও, পরে আর তেমন খরচ নেই। লাভও বেশি হয়।

কুমিরামাড়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ২০০১ সালে প্রথম এ গ্রামে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কাঁচা মরিচের চারা রোপণ করলেও কাঙ্ক্ষিত ফসল পাওয়া যায়নি। তবে হাল না ছেড়ে ২০১৩ সালে প্রথম সফলতা পাওয়ার পর থেকে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে মালচিং পদ্ধতি। এক শতক জমিতে যে পরিমাণ কাঁচা মরিচ হয়েছে, তা থেকে অনায়াসে ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাচ্ছে। এবার আমি মোট ২০ শতাংশ জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছি। এখন প্রতি কেজি মরিচ ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। কাঁচা মরিচ হলো এখন কৃষকের মানিব্যাগ। কাঁচা মরিচ নয় এটা বলতে পারেন কাঁচা টাকা।

কুমিরমাড়া গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করে আমাদের এই এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হয়েছে। এটা আসলে একটা বৈজ্ঞানিক আধুনিক পদ্ধতি। একবার কষ্ট করে চাষ করলেই হয়ে যায়, এতে করে দুই থেকে তিন বছর জমিতে আর ফসলের জন্য কাজ করতে হয় না। ফলে উৎপাদন যেমন বাড়ছে; তেমনই ফলনও অনেক বেশি হচ্ছে। এ বছর ভালো দাম পাওয়ায় সব কৃষক লাভবান হয়েছেন। দিন দিন এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।