নিউমার্কেট ঠিক যেন এক উৎসব কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৭:৪৯ পিএম, ১০ জুন ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৭:৫০ পিএম, ১১ জুন ২০১৮ সোমবার
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী বেচাকেনার স্থান নিউমার্কেট। শুধু কি ঈদ, ঈদ ছাড়াও সারা বছরই জমজমাট থাকে এ মার্কেট। এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে সব জিনিসই পাওয়া যায়। রোজার প্রথম থেকেই এখানে ভিড় লেগেই আছে। আজও সে ধারার ব্যত্যয় ঘটেনি, তাইতো আজও নিউমার্কেট কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
গৃহিণী ও তরুণ-তরুণী ঈদের কেনাকাটায় পছন্দের জায়গাটি বরাবরই বিশেষ অবস্থান ধরে রেখেছে এ মার্কেট। প্রচুর দোকান থাকায় এখানে যাচাই-বাছাইয়ের রয়েছে বড় সুযোগ। এখানে ১০ টাকায় গহনা, দেড়শ টাকায় জুতা, আড়াই শ টাকায় সালোয়ার-কামিজ, তিন শ টাকায় শাড়ি পাওয়া যায়। আবার ব্র্যান্ডের প্রসাধনী, দামি গহনা, হাজার টাকায় সালোয়ার-কামিজ, লাখ টাকার লেহেঙ্গা, শাড়িও বিক্রি হয়। একই সঙ্গে ঘর-গৃহস্থালির সব পণ্যও বিক্রি হচ্ছে।
আজ রোববার মার্কেটে দুপুরের দিকে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর মানুষ। তবে বরাবরের মত দেখা গেল,পুরুষের তুলনায় এখানে নারী ক্রেতার আধিক্য । আগতদের মধ্যে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের সংখ্যাটা বেশি। নিম্নবিত্তও কম নয়। নিউমার্কেটের ভিতর রাস্তার উপর যেসব দোকান বসেছে সেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। অনেকেই এসেছেন পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে। অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা সারছেন।
সেলাই ছাড়া সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, গজ কাপড়ের যেন মেলা বসেছে এখানে। এসব দোকানে পাকিস্তানি সুতির থ্রিপিস ও ভারতীয় জর্জেট ও সুতির থ্রিপিস বেশি। এসবে রয়েছে সুতা, জরি, প্রিন্টের কাজ করা। দাম এক হাজার ২০০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ক্ষেত্রবিশেষে তারও বেশি। হাজার টাকার মধ্যে গজ কাপড়ের সুন্দর থ্রি-পিস মিলছে। পোশাকের অধিকাংশ আমদানি করা। দাম এক হাজার ২০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ছোট মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে আটশ থেকে ২০০০ টাকায়। নিউ মার্কেটে জুতা ও স্যান্ডেলের দোকানগুলো পর পর রয়েছে। এসব দোকানে আমদানি করা জুতা-স্যান্ডেল বেশি। মেয়েদের স্যান্ডেল তিনশ থেকে ১৬০০ টাকা। তবে মেয়েদের দোকানের বাইরের জুতা - স্যান্ডেলের দিকেই আকর্ষণ বেশি। শাড়ির বড় বাজার রয়েছে নিউ মার্কেট মার্কেটে সুতি থেকে হাল ফ্যাশনের জর্জেট, জমকালো কাতান, জামদানি সবই পাওয়া যাচ্ছে এখানে।
ঈদ উপলক্ষে নতুন ডিজাইন ও নামের শাড়ি এনেছেন বিক্রেতারা। ঈদ সামনে রেখে গহনার দোকানগুলো সেজেছে নতুন করে। বাহারি ডিজাইনের গহনায় রয়েছে পাথরের কাজ। এসবের চাহিদাও বেশ। এ ঈদেও ঘর-গৃহস্থালির বিভিন্ন জিনিস থালা-বাটি, গ্লাস, চামচ, হাঁড়ি, কড়াই, দরজা-জানালার পর্দা, কাপড়ের ফুল, বিছানার চাদর, সোফার কুশন, কুশন কভার ইত্যাদি ভালই বিক্রি হচ্ছে।
বনশ্রীর বাসিন্দা শিরিন স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ঈদের কেনাকাটা সারছেন। তিনি বললেন, সন্তানদের জন্য কেনা শেষ, এবার আমার জন্য একটা থ্রিপিস কিনব। পছন্দ হচ্ছে, জানতে চাইলে বললেন, পছন্দ হচ্ছে না। হলে তো কেনা হয়ে যেত। অনেক পরিবার দল বেঁধে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন।
কথা হলো রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা লাইলি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। লাইলি জানালেন, প্রথমেই ছোটদের জন্য ঈদের বাজার করছেন, এরপর বড়দের জন্য করা শুরু করব। তবে সবচেয়ে ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেল খাবারের দোকানে। অনেক নারীরা পরিবার নিয়ে আসলেও খাবারের দোকানে সহজে বসছেন না। এরকমই একজন খিলগাঁওয়ের বিলকিস বেগম। বলেন, কিছুদিন আগে ভেজালবিরোধী অভিযান দেখে আর এখানে খাইনা। বাসা থেকে বাচ্চাদের জন্য ফল, রুটি, জেলি নিয়ে এসেছি। সেগুলোই খাওয়াবো।
সব মিলিয়ে ঈদ যতই এগিয়ে আসছে , নিউমার্কেটের বিকিকিনি চলছে পুরোদমে। একদিকে ক্রেতাও খুশি এখানে সাশ্রয়ী দামে কিনতে পেরে ,বিক্রেতারাও খুশি তাদের কাঙ্খিত ব্যবসা করতে পেরে।
