সিনকিউ, ইথিওপিয়ান নারীদের রক্ষাকবজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:২৫ পিএম, ১৩ জুন ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০২:৫৮ পিএম, ১৮ জুন ২০১৮ সোমবার
ইথিওপিয়ার অনুন্নত এক জাতি ওরোমো। এ জাতির নারীরা নিজেদের ও তার পরিবারকে রক্ষা করেন সিনকিউ দিয়ে। এই সিনকিউ তারা রক্ষার প্রতীক হিসেবে বাবা-মার কাছ থেকেই পেয়ে থাকেন।
প্রশ্ন চলে আসে সিনকিউ আসলে কি? এর বর্ণনা করতে গেলে একটু পিছন দিকে ফিরে যেতে হয়। ওরোমো নারীদের সব নিয়ম মেনেইে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তাদের বাবা মা একটা কাঠের লাঠি মেয়েকে উপহার দেন। এ লাঠির নামই সিনকিউ। শুধু একটা লাঠি হলে কি হবে, এই লাঠিই মহাতাৎপর্য বহন করে। ইথিওপিয়ার ওরোমো নারীদের জন্য প্রাচীন যে গাডা ব্যবস্থা রয়েছে তার একটি অংশ এই সিনকিউ।
ওরোমোর সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ সারা ডুবের মতে, যখন এই গাডা সিস্টেম চালু করা হয় তখন পুরুষদেরকে বিভিন্ন অস্ত্র দেওয়া হতো যাতে তারা পশু শিকার করতে পারে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এছাড়াও মেয়েদের হাতে দেওয়া হত সিনকিউ, যাতে তারা তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য দমে না গিয়ে সমান তালে লড়াই করতে পারে। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা এই সিনকিউ তৈরি করেন। আর মেয়ের মা সেটা মেয়ের হাতে তুলে দেন।
গারবি তাফিসি নামের এক নারী বলেন, `এটা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি এবং আমি নিশ্চিত করবো যাতে এটা আমি আমার মেয়ের কাছে আমি পৌঁছে দিতে পারি।
যদি কোন পুরুষ নারীর উপর যে কোন নির্যাতন করতে উদ্যত হন, তখন ঐ নারী সিনকিউ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে বিচিত্র শব্দ করতে থাকেন। আর তার এই শব্দ শুনে ঐ গ্রামের সব নারীরা এক সাথে জড় হন। ঐ প্রত্যেক নারীর সাথে একটি করে সিনকিউ থাকে। সেই নারীটি মাঝখানে বসে পড়েন। আর তাকে ঘিরে এই নারীরা ঘুরতে থাকে। বিষয়টা এমন যেন ঐ নারীরা তাকে রক্ষা করা হচ্ছে সব বিপদ থেকে। নারীরা ঐ পুরুষের বিচার চান। শুনানির পর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা তাদের রায় শোনান। রায় অনুযায়ী নারীর স্বামী সবার সামনে ওই নারীর কাছে মাফ চান। একই সঙ্গে সবার সামনেই প্রতিজ্ঞা করেন আর কখনো তাকে মারবেন না। যদি সে এর ব্যতিক্রম করে তার জন্য ভবিষ্যতে তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হয়।
ওরোমো সংস্কৃতির বিশেষজ্ঞ সারা ডুবে বলেন, এখানকার ঐতিহ্যবাহী যে আইন রয়েছে তাতে বলা হয়েছে, একজন বিবাহিত নারীকে অপমান বা কোনো ধরনের নির্যাতন করা যাবে না। এটা একটা অপরাধ।
ওরোমো সম্প্রদায়টি এই ঐতিহ্যকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিয়ে যেতে চান।