ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৬, মে ২০২৪ ৩:৪৭:৪৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

গ্রামীণ নারী কৃষকের ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:১৮ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

রাজধানীতে ‘ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে গ্রামীণ নারী কৃষকের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য’’ শীর্ষক তৃণমূলের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার ২১ অক্টোবর বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশে, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট
 ( এএলআরডি )'আয়োজিত রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ মিলনায়তনে উক্ত তৃণমূলের এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

 সংলাপে দেশের ২০ টি জেলা থেকে নারী কৃষক, জেলেসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।

সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক  শামসুল হুদা বলেন, খাদ্য উৎপাদনে পুরুষের থেকে নারীর অংশগ্রহণ এখন অনেক অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, নারীরা সরকারি সেবা সেভাবে পাচ্ছে না। তারা শ্রম দেয় বেশি কিন্তু মজুরী পান অনেক কম। 
তিনি বলেন, নারীরা সব থেকে বেশি অবহেলিত। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত নারী সদস্যদেরকে সহায়তা বরাদ্দ ও ক্ষমতা প্রদানের ক্ষেত্রে পুরুষের সমান অধিকার দিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী জনগণকে সর্বাধিক ক্ষমতা দিতে হবে।

সংলাপে রাঙ্গামাটির নারী কৃষক নিহারিকা চাকমা বলেন, “মেয়ে বলে আমাদের দাম দেয় না মানুষ। আমরা তো অনেক বেশি কাজ করি। ভোর বেলায় পাহাড়ে চলে যাই, পুরুষদের
আগেই যাই। কিন্তু মজুরি একরকম পাই না। দূর্গম পাহাড়ে ফসল উৎপাদন করে আবার তা বয়ে আনি আমরা বাজারে। আমাদের সরকারি কোন সাহায্য দেয়া হয় না।”

মধুপুর থেকে আগত নারী কৃষক ত্রিফলা চিরান বলেন, “আমরা সারাদিন ঘরে এবং মাঠে দুই জায়গাতেই কাজ করি। কিন্তু, আমরা গারো নারীরা কৃষি কার্ড এবং প্রশিক্ষণ খুবই কম পেয়েছি।”

মুক্তাগাছা ময়মনসিংহ থেকে নারী কৃষক মমতাজ বেগম বলেন, “আমরা বিভিন্ন সবজি চাষ করি। আমার স্বামী নাই। তাই আমিই আমার সবজি বাজারে নিয়ে যাই বিক্রিকরতে। বাজারে দেখি পুরুষরা বেশি দামে বিক্রি করে। আমাকে দাম দিতে চায় না। কম টাকা দেয়।”

উক্ত সংলাপে মূল উপস্থাপনায় এএলআরডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার সানজিদা খান রিপা জানান,  ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে নারী কৃষকদের কৃষি বিষয়ক সরকারি পৃষ্ঠপোষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাসজমি বিতরণ করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, পারিবারিক কৃষক, মৎস্যচাষী সকলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিসহ অন্যান্য উৎপাদনশীল সম্পদ ও উপকরণ, বিপণন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। 

তিনি আরো জানান, কৃষিতে নারীদের অবদান ৭২.৬% কিন্তু তারা কৃষক হিসেবে স্বীকৃত নয়, কৃষিতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য সমান মজুরি নেই
FAO-এর মতে, ২০০৫ সালে বাংলাদেশে কৃষিতে নারীর ভূমিকা ছিল ৩৬.২ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা ৯.১ % বেড়ে ৪৫..৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির হারের দিক থেকে এটি বিশ্বে সর্বোচ্চ।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে গ্রামীন নারীদের ১৩ ভাগের কমের নিজের নামে বৈধ ভূমি আছে এবং মাত্র ৪-৫ শতাংশ নারীর সেই ভূমির উপর নিয়ন্ত্রণ আছে। 
ভূমির অধিকারে নারীদের এই দুর্বল পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে পিতৃতান্ত্রিকতা, ভূমি স্বাক্ষরতার অভাব, ভূমি দস্যুদের নিয়ন্ত্রন ও প্রভাব, দূর্নীতি ইত্যাদি। সর্বপরি প্রচলিত আইন ও নীতিমালার অপ্রতুল বাস্তবায়ন।