অবৈতনিক শিক্ষার আওতায় মেয়েরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১২:৫৫ পিএম, ২০ জুন ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১০:২৩ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮ সোমবার
দেশের প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে অনেক আগে থেকেই। সেই হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে সবারই বিনা বেতনে পড়ার কথা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটি ৩৯ লাখ শিক্ষার্থী এ সুবিধা পেলেও বেসরকারি পড়ুয়া অন্তত ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে মাস শেষে টিউশন ফি গুণতে হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকই মেয়ে।
ঢাকার রাজধানীর খিলগাঁওয়ের শহীদ বাবুল একাডেমীর দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক হেনা রহমান বলেন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সন্তানের শিক্ষার জন্য স্কুলের বেতন, কোচিং ফিসহ মাসে গুণতে হচ্ছে ৬-৭ হাজার টাকা। বছরে খরচ ৮০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে আমারা তো প্রাথমিক শিক্ষার অবৈতনিক কি সুবিধা পাচ্ছি তা আমার মত অনেক অভিভাবকেরই বোধগম্য নয়।
মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায়, মাধ্যমিক স্তরে পড়ছে ১ কোটি শিক্ষার্থী। এই স্তরে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ মেয়ে ও ২০ শতাংশ ছেলে উপবৃত্তির আওতায় শিক্ষা সুবিধা পাচ্ছে। সব মিলিয়ে ৪৫ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পায়, যার মধ্যে ২৭ লাখ মেয়ে।
উপবৃত্তি পায় না ৫৫ লাখ শিক্ষার্থী। এদর মধ্যে অর্ধেকেই মেয়ে। অর্থাৎ মাধ্যমিক স্তরে আরো প্রায় সাড়ে ২৭ লাখ মেয়ে রয়ে যাচ্ছে যারা বৃত্তি পাচ্ছে না।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ২৫ লাখ ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করলেও মাত্র ৬ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে। যাদের বিনা টিউশন ফিতে পড়ার সুযোগ রয়েছে। উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ মেয়ে, অর্থাৎ ৪ লাখ ৮০ হাজার মেয়ে।
ডিগ্রি (পাস) ও সমমানের পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থী ১৩ লাখ। এর মধ্যে মোট ২ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৭০ হাজার ছাত্রী। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে এ অর্থের যোগান দেয়া হচ্ছে।
নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করার উপায় হিসেবে ১৯৮২ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ছাত্রী উপবৃত্তি প্রকল্প চালু হয়। বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক (পাস) পর্যায়ে ৫টি প্রকল্প চালু রয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এসব সুযোগসুবিধা চালু থাকলেও অভিভাবকরা বলছেন, তাদের সন্তানরা অনেকেই এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু স্কুলে বেতন নয়, এর সাথে সাথে কোচিং ফি, যাতায়াত, টিফিনসহ যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তাতে মধ্যবিত্তদের নাভি:শ্বাস উঠে যাচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রী উপবৃত্তি নিশ্চিত প্রদানসহ বিদ্যালয়ে যথাযথ পাঠদান, কোচিং ব্যবসা বন্ধের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবিদরা।
