ঢাকা, শনিবার ০৬, ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:২৩:০১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বগুড়ায় কোটি টাকার সবজি বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১৫ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বগুড়ায় এখন বেশ গরম। মাঠে রোদের ঝলকানি। তারপরও ভালো দাম পাওয়ার আশায় আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। আগাম সবজির চাষ হচ্ছে ২ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে ফলন পাওয়া যাবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। ভালো চাষের সঙ্গে ভালো ফলন পাওয়ায় জেলায় কোটি কোটি টাকার সবজির বাজার গড়ে উঠেছে এক রকম নীরবেই।
প্রতিদিন কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে যাচ্ছে সবজি উৎপাদনের মধ্য দিয়ে। গ্রীষ্ম ও শীতের মাঝামাঝি সময়ে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারের চাহিদাও ঠিক রাখতে অবদান রাখছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন। 

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় শীতকালে ২৮ প্রকার সবজির চাষ হয়ে থাকে। আর গ্রীষ্মকালে প্রায় ২০ প্রকার সবজির চাষ হয়। আগাম জাতের সবজিতে বেশি লাভবান হওয়া যায় বলে চাষিরা এই আগাম জাতের সবজি চাষ করে থাকেন। জেলার উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে। 

শীতের শুরুতে বগুড়ার শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, কাহালু, গাবতলীসহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি বিভিন্ন জাতের সবজির গাছ। এসবের মধ্যে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপির চারা, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লালশাকসহ হরেক রকমের আগাম শীতকালীন সবজির চারা। সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। শিম, বেগুন, লালশাক, মুলাশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচের চারা রোপণ চলছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ।

এদিকে, চাষিদের মাঝে উন্নত চারা সরবরাহের জন্য বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় গড়ে উঠেছে ২৫০টি নার্সারি। এসব নার্সারিতে প্রতিনিয়ত তৈরি হয় বিভিন্ন সবজির চারা। এই চারা বগুড়াসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়ে থাকে। শাজাহানপুর উপজেলার চেয়ে বগুড়া সদরের মহাস্থানগড়ে সবচেয়ে বড় সবজির হাট গড়ে উঠেছে। বগুড়ার মহাস্থানহাট থেকে প্রতিদিন গড়ে অর্ধশত ট্রাকে করে সবজি বগুড়া থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। 

বগুড়ার মহাস্থান হাটের ইজারাদার রাগেবুল আহসান রিপু জানান, হাটে প্রতিদিন সবজি কেনাবেচা হয়ে থাকে। প্রতিদিন ট্রাকে লোড দিয়ে ঢাকায় সবজি যাচ্ছে। বগুড়ার কৃষকরা যেন লাভবান হয় সেদিকে খেয়াল রেখে সবজি বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন গড়ে অর্ধশত ট্রাকে করে সবজি ঢাকায় যাচ্ছে। এই সবজি চাষ হয়ে থাকে সদর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুরসহ কয়েকটি উপজেলায়।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, এ বছর বগুড়ায় আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ২ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে। যা থেকে আগাম শীতকালীন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যাবে। আগাম শীতকালীন সবজির চাষ আরও বাড়বে। গত বছর ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করেছিলেন চাষিরা। তা থেকে গত বছর প্রায় ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যায়।

বগুড়ায় চাষকৃত সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে থাকে। শীত এবং গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে সবজির চাহিদা পূরণে এই আগাম সবজি চাষ ভূমিকা রাখছে। এতে করে বাজারে সবজির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে ঠিকঠাক। আর জেলায় শীতকালীন সবজির চাষ হয়ে থাকে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এ থেকে প্রতিবছর চার লাখ মেট্রিক টনের মতো সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। আবহাওয়াগত কারণে বগুড়ায় সবজির ভালো উৎপাদন হয়ে থাকে।