ক্লাসরুম নেই, খোলা আকাশের নিচে পড়াশুনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১২:০৭ পিএম, ৫ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার
শিক্ষা উপকরণ ও ক্লাসরুমের অভাবে ঈশ্বরদীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা খোলা অাকাশের নিচে পড়াশুনা করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের ১৭ নং এমএস কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, এই বিদ্যালয়ে নেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ এবং বেঞ্চ। ফলে শিক্ষার্থীদের চট বিছিয়ে স্কুলের বারান্দা আবার কোনো কোনো সময় খোলা আকাশের নিচে বসে পাঠদান গ্রহণ করতে হচ্ছে। অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তির জন্য উপজেলা প্রকৌশল বিভাগকে দায়ী করছেন। প্রায় একমাস আগে বিদ্যালয়ের সেমি পাকা ভবন নিলামে বিক্রি হওয়ার সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে অতিদ্রুততম সময়ের মধ্যে টিনসেডের কক্ষ নির্মাণ করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এখন পর্যন্ত অস্থায়ী টিনসেড কক্ষ না করে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকারে পরিণত হয়েছে।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা সালমা রশিদ জানান, এই বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণিতে ৭০ জন শিক্ষার্থী। বারান্দায় বসে ক্লাস নেওয়ার জন্য অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের পাশের নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। শিশুরা অনেকেই স্কুলে আসতে অনিহা প্রকাশ করে । শিশুদের জন্য পৃথক একটি শ্রেণিকক্ষের বিধান থাকলেও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশুরা আগ্রহ হারাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সারোয়ার বলেন, এবারে এই প্রতিষ্ঠান হতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী পিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। বিদ্যালয়ে দুটি শিফটে ক্লাস চলছে। প্রথম শিফটে সকাল ৯টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিশু শ্রেণি, ১ম, ২য় ও ৫ম শ্রেণির ক্লাস। দ্বিতীয় শিফটে দুপুর ১২.১৫ মিনিট হতে বিকেল ৪.১৫ মিনিট পর্যন্ত ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে শিশু শ্রেণির ক্লাস বিরতি রেখে ওই চট আবার খোলা আকাশের নিচে বিছিয়ে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলাম হব্বুল জানান, গত ৩ মে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাতদিনের মধ্যে অস্থায়ী চার/পাঁচটি টিনসেড কক্ষ তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো তা তৈরি হয়নি।
তিনি আরো জানান, এসএম কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সেমিপাকা ভবন প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা ভবন ভেঙে নিয়ে চলে গেছেন। কবে কাজ শুরু হবে তা জানি না। এখন শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কানিজ ফাতেমা জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে। অস্থায়ী টিনসেড কক্ষ করে দেওয়ার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগকে বলা হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, জুন ক্লোজিংয়ে বেশ ব্যস্ততা ছিল। ওই বিদ্যালয়ের কাজের টেন্ডার হয়েছে, ধ্রুব কনস্ট্রাকশন কাজ পেয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, খবর নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
