ঢাকা, সোমবার ২২, ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:৪০:৪৫ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

দাম বেড়েছে আদার, মুরগি-ডিমসহ দাম কমেছে সবজির

সালেহীন বাবু

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ১২:৩৫ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৮:২৮ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রবিবার

ঈদুল আজহার ছুটির আমেজ কেটে আজ রোববার থেকে বাজার জমে উঠতে শুরু করেছে। ছুটির দিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতার সমাগম দেখা গেল। বাজারে আদার দাম বাড়লেও কমেছে মুরগি-ডিমসহ সবজির দাম।

 

 

আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

 


রাজধানীর বাজারে আদার দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি আদা কিনতে এখন ২০ টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। মানুষের ঘরে ঘরে এখনো কোরবানির পশুর মাংস। এ মাংস রান্নার অন্যতম উপকরণ আদা। ফলে বাজারে পণ্যটির চাহিদা বেশি। বড় বাজারে এখন চার ধরনের আদা পাওয়া যাচ্ছে। কারওয়ান বাজারের মসলার দোকানগুলোতে প্রতি কেজি চীনা আদা ১২০ টাকা, ভারতীয় আদা ১১০ টাকা, দেশি অপরিপক্ব নতুন আদা ১০০ টাকা ও দেশি পুরোনো আদা ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে চীনা ও ভারতীয় আদার দাম ২০ টাকা বেড়েছে। 

 


খুচরা দোকানে মূলত চীনা ও ভারতীয় আদা বিক্রি হয়। রোববার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, চীনা আদা ১২০-১৩০ ও ভারতীয় আদা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 


পাইকাররা বলছেন, বাজারে দেশীয় আদার সরবরাহ কম। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত নয় আমদানি করা আদার যোগানও। এরই প্রভাব পড়েছে দামে।

 


উর্ধ্বমুখী সব ধরনের ডালের দাম। কেজিতে বেড়েছে ২-৪ টাকা পর্যন্ত। মানভেদে প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে, ৮০-৯০ টাকায়,দেশি মসুর ডাল ১১০ -১২০ টাকা, মুগডাল ৬৫-৯৫ আর বুটের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭৫ টাকা দরে। বেড়েছে এলাচের দাম। তবে বাড়াকমা নেই লবঙ্গ, জিরা, দারুচিনি সহ অন্যান্য মসলার দরে।

 


অনেকটাই ক্রেতাশূন্য চালের বাজার। বিক্রি না থাকায় উঠানামা নেই মিনিকেট, নাজিরশাইল, আটাশ সহ সবধরনের চালের দরদামে। এ সপ্তাহের মধ্যেই ক্রেতাদের আনাগোনায় বেচাবিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন চালের আড়তদাররা।

 


রাজধানীর বাজারগুলোতে কমেছে মুরগি ও ডিমের দাম। একই সঙ্গে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে অধিকাংশ সবজি। 



বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, সাদা বয়লার মুরগি ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে ১৫০-১৬০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে ২৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজিতে। আর ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা ডজন, যা ঈদের আগে ১০০ টাকার বেশি ছিল।



মুরগির দাম কমার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী সোহাগ বলেন, ঈদের আগে সাদা বয়লার মুরগি বিক্রি করেছি ১৫০ টাকা কেজিতে। এখন সেই মুরগি ১২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। অধিকাংশ মানুষের বাসায় ফ্রিজে কোরবানির মাংস মজুদ রয়েছে। ফলে মুরগির চাহিদা অনেক কম। 

 


ডিমের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. তৌফিক বলেন, ঈদের আগে ডিমের ডজন ছিল ১১০ টাকায়। এখন ৯০ টাকা। ঈদের পর ডিমের চাহিদা কিছুটা কমেছে। ফলে দামও কিছুটা কম।



ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের পর গত কয়েকদিন রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম কম ছিল। আজ রোববার ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় বেড়েছে। ফলে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে অধিকাংশ কাঁচাবাজার। তবে ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি সবজির সরবরাহ বাড়লেও বিক্রি খুব একটা বাড়েনি। ফলে ঈদের আগের তুলনায় সব সবজিই কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।



বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ সবজি ৩০-৪০ টাকা কেজির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের আগের মতো এখনো শিম, টমেটো, গাজর, ফুলকপি ও পাতাকপি চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে শীতের আগাম সবজি শিম। বাজার ও মানভেদে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।



বাজারে ১০০ টাকা বা তার থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া আর একটি সবজি পাকা টমেটো। বাজার ও মানভেদে এ সবজিটি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি। ঈদের আগেও একই দাম ছিল। চড়া দামে বিক্রি হওয়া আর এক সবজি গাজর, যা ৮০-১০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে।



বাজারে ছোট আকারের প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। আর পাতাকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা পিস। ঈদের আগে চড়া দামে বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম সব থেকে বেশি কমেছে। মান ও বাজারভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ৬০-৮০ টাকা।



এছাড়া দাম কমার তালিকায় রয়েছে- উস্তা, বরবটি, কাকরল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, লাউ। বাজার ভেদে উস্তার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি। ঈদের আগে ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি।



ঈদের আগে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিংগা, পটল, ঝিঙা, ধুনদল, কাকরল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। পেপে আগের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে নেমেছে ২৫-৩৫ টাকায়। ঢেড়স বাজর ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজি। ঈদের আগে এ সবজিটির দাম ছিল ৪০ টাকার ওপরে। আর ঈদের আগে ৫০-৬০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম কমে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



কাঁচামরিচের দামও কিছুটা কমেছে। ঈদের আগে ৩০-৩৫ টাকা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম কমে ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেছে পেঁয়াজেরও। ৫৫-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি, যা ঈদের আগে ছিল ৩৫-৪০ টাকা।




শান্তিনগরের ব্যবসায়ী মোখলেসুর বলেন, মাংসের স্বাদ বাড়াতে টমেটোর ব্যবহার করেন অনেকে। ফলে চাহিদা বেশি থাকার কারণে টমেটো ও গাজরের দাম কমেনি। বাজারগুলোতে মাছের সরবরাহ কম। ফলে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশসহ ছোট-বড় অন্যান্য মাছ।